আজকের ভিন দেশির চোখে অনুষ্ঠানে প্রথমে আপনাদের একজন বাণিজ্য বিষয়ক প্রশিক্ষকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবো । তিনি হলেন কানাডিয়ান ,নাম লোব্রাঙ্কো । চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও চীনাদের বিদেশি যোগাযোগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোব্রাঙ্কো ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিদেশী কেতা বা আদবকায়দা বিষয়ে প্রশিক্ষণের চগরুত্ব উপলব্ধি করে পেইচিংয়ে বিশেষ করে বিদেশী আদবকায়দা প্রশিক্ষণের একটি কোম্পানী খুলে বসলেন ।
আপনারা যে কথা শুনছেন , তাতে লোব্রাঙ্কো সবাইকে রেড ওয়াইন খাওয়ার আদবকায়দা শেখাচ্ছেন । তার এই প্রশিক্ষণ কোম্পানীতে বিশেষ করে চীনাদেরকে পশ্চিমা দেশগুলোর কেতা ও আদবকায়দা শেখানোর কোর্স রয়েছে ।
বিদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে এমন চীনা কোম্পানী ছাড়া চীনের অনেক সাধারণ লোক আমাদের প্রশিক্ষণ ক্লাসে আছেন । তাদের কেউ কেউ এ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী । কেউ কেউ বন্ধু , সহকারী বা অংশীদারদের সঙ্গে এমন অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে চায় । শুরুতেই লোব্রাঙ্কোর কোম্পানী প্রধানত বাণিজ্যের পরিচালনা কোর্স খোলে , পরে আস্তে আস্তে লোব্রাঙ্কো অনুভব করেন যে আরো বেশি চীনা বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগ আগ্রহী । তাদের পশ্চিমা দেশগুলোর রীতিনীতিও আদবকায়দা শেখা দরকার । এ জন্য লোব্রাঙ্কো আদবকায়দার কোর্সও খোলেন । বিভিন্ন দেশের লোকজনের বিনিময় গভীর করা, পাশা পাশি চীনাদের অন্য দেশের সংস্কৃতি ও ইতিহাস সম্পর্কে উপলব্ধি বাড়ানো হচ্ছে এর লক্ষ্য । লোব্রান্কো বলেন
আমার মনে হয় , আমাদের ছাত্রছাত্রীরা শুধু পশ্চিমা খাবার রান্নার পদ্ধতি শিখতে চায় তা নয় , তারা বিভিন্ন বিষয় শিখতে চান । তারা রান্নার সংস্কৃতি সম্পর্কেও জানতে খুবই আগ্রহী ।
লোব্রাঙ্কো বলেন , এসব শেখার উপলব্ধি বাড়ানোর মধ্য দিয়েই তার কোম্পানী সফল হয়েছে । ভবিষ্যতে আরো বেশি কোর্স খোলার পরিকল্পনা আছে তার । যাতে ব্যাপকভাবে পশ্চিমা দেশগুলোর সংস্কৃতি ও আদনকায়দা চীনাদের শিখতে পারেন এবং চীন ও পশ্চিমা দেশগুলোর বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য একটি সেঁতু তৈরি হয় ।
চীনে থাকা অনেক বিদেশি শুধু চীন ও বহির্বিশ্বের বিনিময় ত্বরান্বিত করেছে তাই নই , অনেকে চীনের শিশু কল্যান ক্ষেত্রে অনেক অবদান রেখেছেন । মার্কিন নাগরিক বার্ট ড্যানিয়েল ও তার স্ত্রী ডেইরড্রি ড্যানিয়েল অনেক বছর ধরে চীনের কল্যান কাজে অবদান রাখছেন । ডেইরড্রি ড্যানিয়েল সংবাদদাতাকে জানিয়েছেন , তাঁর একটি মেয়ে ছিল । ১২ বছর আগে সে মারা গেছে । চীনে আসার পর তিনি উপলব্ধি করেছেন এতিম শিশুর জন্য একটি পরিবার কত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় । তিনি মন থেকেই এসব শিশুকে সাহায্য করতে চান , তাদেরকে পরিবারের মত উষ্ণ ভালোবাসা দিতে চান । মার্কিন নাগরিক হোক , চীনা হোক , পরিবারের যত্ন দরকার ।
২০০৪ সাল থেকে বার্ট ড্যানিয়েল পেইচিংয়ের একটি হাসপাতালে উচ্চ পর্যায়ের পরিচালক হিসেবে কাজ করেন , তাঁর স্ত্রী স্বেচ্ছাসেবীহিসেবে এ হাসাপাতালে আছেন । নিজের কাজ ছাড়া তাঁরা মধ্য চীনের হোনান প্রদেশের শিশু কল্যান ইন্সটিটিউটের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্কও বজায় রেখেছেন । এ পর্যন্ত তাঁরা হোনান প্রদেশের শিশু কল্যান ইন্সটিটিউটকে মোট ৬ লক্ষাধিক ইউয়ানের সাহায্য দিয়েছেন । বার্ট ড্যানিয়েল বলেন , তিনি ও তাঁর স্ত্রী প্রতি তিন মাসে হোনান প্রদেশের শিশু কল্যান ইন্সটিটিউটকে একবার মিল্ক পাউডার দান করেন । তা ছাড়া , তাঁর স্ত্রী ডেইরড্রি সবসময় হোনান প্রদেশের শিশু কল্যান ইন্সটিটিউটে এতিম শিশুদেরকে দেখতে যান । তিনি আবার দু'টি প্রতিবন্ধী শিশুকে তত্তক নিয়েছেন এবং তাদের ইংরেজী নাম রেখেছেন । পরে চীন ও মার্কিন সরকারের সাহায্যে মেয়ে দু'টি মার্কিন নাগরিকত্ব পেয়েছে । এখন এ দু'টি মেয়ে চীনের একটি আন্তর্জাতিক স্কুলে লেখাপড়া করছে । ডেইরড্রি ড্যানিয়েল বলেন , এখন তিনি প্রায় ভুলে গেছেন যে মেয়ে দু'টি তাঁর পালককল্যান , তিনি তাদেরকে নিজের জন্ম দেওয়া মেয়ে হিসেবে যত্ন নিচ্ছেন ।
এখন বার্ট ড্যানিয়েল ও তাঁর স্ত্রী সুযোগ পেলে তাদের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে লেখাপড়া এবং ভ্রমণ করেন । তাঁদের আশা হচ্ছে , চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের দু'দেশেরই সংস্কৃতি তাদের মেয়েদেরকে শেখাবেন ।
|