v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-10-30 19:00:42    
উত্তর কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ভিয়েতনাম সফর

cri
    উত্তর কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী কিম ইয়ংইল ২৭ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ভিয়েতনাম সফর করছেন। এ মাসের মাঝামাঝি সময় ভিয়েতনাম কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিশনের সাধারণ সম্পাদক নোং দুক মানের উত্তর কোরিয়া সফরের পর এটি হচ্ছে উত্তর কোরিয়া এবং ভিয়েতনামের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের আরেকটি সফর। বন্ধুত্বপূর্ণ এ সফরের মধ্য দিয়ে দু'দেশের সম্পর্কের ক্রমাগত উন্নতির প্রবণতা প্রতিফলিত হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় যে, দু'দেশের সম্পর্কের দীর্ঘকালীন অচলাবস্থার নিরসন হয়েছে এবং দু'দেশের সম্পর্কের উন্নতির লক্ষ্যে এখন সহযোগিতার নতুন যুগে প্রবেশ করছে।

    ভিয়েতনামের নেতৃবৃন্দ আন্তরিকভাবে কিম ইয়ং ইলকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। ভিয়েতনামের কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিশনের সাধারণ সম্পাদক নোং দুক মান এবং দেশের প্রেসিডেন্ট নুয়েন মিন ট্রিয়েট আলাদা আলাদাভাবে কিম ইয়ং ইলের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছেন। ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী নুয়েন চ্রান দুং তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সাক্ষাত্কালে তাঁরা স্ব স্ব দেশের উন্নয়ন সম্পর্কিত অবস্থা অবহিত করেছেন, দু'দেশের ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়টি পর্যালোচনা করেছেন এবং দু'দেশের সম্পর্কের সর্বশেষ অগ্রগতির উচ্চ প্রশংসা করেছেন। দু'দেশের নেতৃবৃন্দ দু'দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতামূলক সম্পর্কের উন্নয়ন এবং সুসংবদ্ধ করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, নোং দুক মানের পিয়ং ইয়ং সফরের পর কিম ইয়ং ইলের এবারের ভিয়েতনাম সফর হচ্ছে দু'দেশের সম্পর্কে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এটি অবশ্যই দু'দেশের সুষ্ঠু উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক হবে।

    বৈঠকে উত্তর কোরিয়া এবং ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রীদ্বয় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং সহযোগিতা জোরদারের প্রবল ইচ্ছা ব্যাক্ত করেছেন। বৈঠকে কিম ইয়ং ইল বলেন, উত্তর কোরিয়া ভিয়েতনামের সঙ্গে বন্ধুত্বপূণ সম্পর্কের উন্নয়নের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়। তাই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভের পর পরই তিনি প্রথম বিদেশ সফর করা দেশ হিসেবে ভিয়েতনামের কথা ভেবে রেখেছেন। উত্তর কোরিয়া ভিয়েতনামের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বিনিময় ত্বরান্বিত করার আশা প্রকাশ করেছে। উত্তর কোরিয়া ভিয়েতনামের সংস্কার ও মুক্তদ্বার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা জানতে এবং শিখতে চায়। বৈঠকে নুয়েন চ্রান দুং জোর দিয়ে বলেন, ভিয়েতনাম বরাবরই উত্তর কোরীয় জনগণের শান্তি, একীকরণ ও উন্মুক্ত পররাষ্ট্র নীতিকে সমর্থন করে আসছে। তিনি কিছু দিন আগে পিয়ং ইয়ংয়ে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ ও উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ বৈঠকের সাফল্য, কোরীয় উপদ্বীপের সর্বেশেষ ইতিবাচাক অগ্রগতি এবং ছ'পক্ষীয় বৈঠকের সাফল্যের গভীর প্রশংসা করেছেন। তিনি আরো বলেন, আঞ্চলিক তথা বিশ্বের শান্তি, স্থিতিশীলতা, সহযোগিতা এবং উন্নয়ন সুরক্ষার জন্য ভিয়েতনাম উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সার্বিক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক উন্নয়নসহ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে। যা দু'দেশের জনগণের জন্য কল্যাণ করা হবে।

    ১৯৫০ সালে ভিয়েতনাম এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ১৯৭৯ সালে ভিয়েতনাম কম্পুচিয়ায় অনুপ্রবেশ করে। উত্তর কোরিয়া খেমাররূজকে সমর্থন করে এবং ভিয়েতনামের সমর্থনকারী নমপেনের ক্ষমতাশীন দলের বিরোধিতা করেছিল। ১৯৯২ সালে ভিয়েতনাম এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার দু'দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বলতে গেলে বন্ধ হয়ে যায়। ২১ শতাব্দীর শুরু থেকেই ভিয়েতনাম এবং উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক পুনরায় ধাপে ধাপে জোরদার হতে থাকে। ভিয়েতনাম বহুবার উত্তর কোরিয়াকে খাদ্য সাহায্য দিয়েছে। দু'দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিনিময় আগের চেয়ে জোরদার করা হয়েছে।

    দু'দেশের সম্পর্ক আরো ত্বরান্বিত করার জন্য চলতি বছর ভিয়েতনামের প্রয়াত নেতা হো চি মিনের উত্তর কোরিয়া সফরের ৫০ তম বার্ষিকী উপলক্ষে উত্তর কোরিয়া নানা ধরণের কর্মসূচীর আয়োজন করে। উল্লেখ্য যে, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং ইলের আমন্ত্রণে ভিয়েতনামের কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিশনের সাধারণ সম্পাদক নোং দুক মান ২০০৬ বছরের ১৬ থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী উত্তর কোরিয়া সফর করেছিলেন। ৫০ বছরের মধ্যে এটি হচ্ছে ভিয়েতনামের কমিউনিষ্ট পার্টির প্রথম উত্তর কোরিয়া সফর। কিম জং ইল নোং দুকমানের সম্মানে জাঁকজমকপূর্ণ অভ্যর্থনার আয়োজন করেন। উত্তর কোরিয়ার তথ্য মাধ্যম নোং দুক মানের এবারের সফরকে দু'দেশের জন্য ইতিবাচক দিক হিসেবে মনে করছে।

    বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভিয়েতনামের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়ার গুরুত্ব দেয়ার মধ্য দিয়ে তারা ভিয়েতনামের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের অভিজ্ঞতা গ্রহণ করতে চায়। এ ছাড়াও, উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভিয়েতনাম কী ভাবে তার সম্পর্ক বজায় রাখছে সে ব্যাপারেও অভিজ্ঞতা নিতে চায়। কারণ, দু'দেশই একসময় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল। বর্তমানে ভিয়েতনাম এবং যুক্তরাষ্ট্র বন্ধু হয়েছে। পক্ষান্তরে উত্তর কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা বজায় রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে "ভিয়েতনামের অভিজ্ঞতা" উত্তর কোরিয়ার জন্য কল্যাণকর হবে। (লিলি)