২৫ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর নতুন অবরোধ আরোপনের কথা ঘোষণা করেছে। বুশ সরকারের এবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সহ ইরানের ২০টিরও বেশী সরকারী সংস্থা, ব্যাংক ও ব্যক্তিদের ওপর শাস্তি দেওয়া হবে। এ সব অবরোধকে ১৯৭৯ সালে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে দখল করার পর ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে কঠোর অবরোধ বলে মনে করা হচ্ছে।
এ সব অবরোধ অনুযায়ী, বিপ্লবী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন কোম্পানি সহ ইরানের বিশটি কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং ব্যবস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বিছিন্ন হবে। ইরানের তিনটি বড় রাষ্ট্রীয় ব্যাংক---ইরানের রাষ্ট্রীয় ব্যাংক, জাতীয় ব্যাংক এবং রফতানি ব্যাংককে বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসী সংস্থাকে সমর্থন দেওয়া অভিযোগ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, ইরানের বিপ্লবী বাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিস্তারের সঙ্গে জড়িয়ে থাকার অভিযোগ করা হয়েছে। এ সব অবরোধ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ইরানের এ সব সরকারী সংস্থা, ব্যাংক ও ব্যক্তিগত অর্থ জব্দ করা হবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তিগত ব্যাংক বা ব্যবসায়ীদের ওপর উল্লেখিত সংস্থাগুলো বা ব্যক্তির সঙ্গে লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ।
একই দিন একটি প্রেস ব্রিফিংএ মার্কিন পররষ্ট্র মন্ত্রী কন্ডোলিসা রাইস ও অর্থ মন্ত্রী হেনরি পোলসন যৌথভাবে এ সব অবরোধ ঘোষণা করেছেন। তারা বলেছেন, ইরানের বিপ্লবীগার্ড বাহিনী ও ইরানের তিনটি বড় ব্যাংক অস্ত্র বিস্তার এবং সন্ত্রাসী সংস্থার তত্পরতার সঙ্গে জড়িত বলে বলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর আরোপের আরোপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কন্ডোলিসা রাইস বলেন, ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অধীনে কুদস বাহিনীও যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তির আওতায় পড়বে। কারণ কুদস বাহিনীকে সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থক বলে অভিযোগ করা হয়।
১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয়। বতর্মানে এই বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ১২ হাজার। বিপ্লবী বাহিনী ইরানের অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্র। তা ছাড়া, বিদেশে ইরানের ৫০০টিরও বেশী বাণিজ্য কোম্পানি এবং ইরানের অর্ধেক আমদানি ও ৩০ শতাংশ রফতানি ব্যবসা বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধী।
প্রেস ব্রিফিংএ মার্কিন অর্থ মন্ত্রী হেনরি পলসন জানান, সন্ত্রাসী তত্পরতায় ইরান সরকার প্রত্যেক বছর কয়েক লাখ মার্কিন ডর্লার বরাদ্দ করে। সুতরাং বিদেশের কোন কোম্পানি বা ব্যক্তিইরানের সঙ্গে ব্যবসা করলে পরোক্ষভাবেহয়তো তা ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সঙ্গে করে। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন ব্যাংককে উল্লেখিত তিনটি বড় ব্যাংক এবং বিপ্লবীবাহিনীর অধীন সংস্থাগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন। কন্ডোলিসা রাইস জানান, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের কোম্পানিগুলোর একটি বড় হুঁশিয়ারি । তাদেরকে ইরানের সঙ্গে ব্যবসাও বিনিময়ের ছিন্নকরতে বাধ্য করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন অবরোধের ঘোষনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরান। ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আহমোদ আলি হোসেইনবলেন, ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে অবরোধ আরোপন করেছে তা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। এ সব অবরোধ আগের যে কোন সময়ের মতোই ব্যর্থতায় পর্যবসিতহবে।
|