v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-10-25 17:10:39    
নামুছুও হ্রদ (১)

cri

    আমাদের গাড়ি চলছে লাসা থেকে নামুছুও হ্রদের যাওয়ার জন্য । আর আকাশ ভেঙে বৃষ্টি পড়ছে । গাড়ির বাইরে অন্ধকারাচ্ছন্ন আকাশ এবং তিব্বত মালভূমির বাতাসে অনেক ঠাণ্ডা । সবাই নিজের প্রয়োজনীয় কাপড় পড়ে নেই । লাসায় কয়েক দিন থাকার কারণে আমাদের শরীরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৮০০ মিটার উচুঁ মালভুমিতে থাকার সময় কোনো অসুস্থ্য লাগছে না । কিন্তু আমাদের গাড়িটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫২০০ মিটার উচুঁ নালিকেন পাহাড়ের সড়কে ওঠে গেলে কান ও মাথা ব্যথা পুনরায় শুরু হয় । তখন আমাদের ড্রাইভার বলেন, নেমে আসুন একসাথে নামুছুও'র ছবি তুলি ! সবাই তাঁর কথা শুনে বাইরের দৃশ্য দেখি, অনেক আশ্চর্য্য লাগে । বহু দুরের পাহাড়ের নিচে নীল হ্রদের বিশ্ব । হ্রদের পাশে একটার পর একটা তুষারের পাহাড় দাঁড়িয়ে আছে । হ্রদে পাহাড়গুলোর ছায়া পড়েছে । দেখতে দেবতার বাসার মতো ।

     তিব্বতীদের কাছে নামুছুও হ্রদ হল দেবতার বাসা । নামুছুও হ্রদে একজন সুন্দরী দেবতা রয়েছে, হ্রদের ছায়া --তুষারআবৃত পাহাড়ী হ্রদের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত । তা হল তাঁর স্বামী নিয়ানছিং থাংকুলা পাহাড়, তিব্বতীদের কাছে সবচেয়ে মহান পাহাড় দেবতা । রূপকথায় সে একজন সুন্দর পুরুষ , অনেক মেয়েই তাঁকে পছন্দ করে । সুন্দরী নামুছুও'র অনেক দুঃখ হয় । প্রতিদিন তার কাল্লার অনেক অশ্রুবিন্দু ঝরে পড়তো। দীর্ঘকাল ধরে হ্রদের পানিও অশ্রু বিন্দুতে ভরে গেছে । ফলে নামুছুও হ্রদ বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ও বৃহত্তম অশ্রুর হ্রদে পরিণত হয়েছে ।

     তিব্বতীদের কাছে নামুছুও হ্রদের জীবন আছে । এ হ্রদ ছাগল বর্ষে জন্মগ্রহণ করে । প্রতি ছাগল বর্ষেই হাজার হাজার তিব্বতী ধর্মাবলম্বী সুখী ও নিরাপদ জীবন কামনার জন্য নামুছুও হ্রদের এসে উপাসনা করেন । এর পদ্ধতি হল হ্রদের উপাসনা করার পাশাপাশি হ্রদের তীর ঘেসে একবার হ্রদকে প্রদক্ষিণ করা । নামুছুও'র তীরে আমরা স্থানীয় পশুপালক কংচুয়ে সিথা'র সাক্ষাত্কার নেই ,তিনি বলেন,  প্রতিটি ছাগল বর্ষে তিব্বতী ইস্ত্রিখানার ১৫ এপ্রিল আমরা নামুছুও হ্রদে এসে উপাসনা করার পাশাপাশি একবার করে প্রদক্ষিণ করি । এর জন্র কমপক্ষে ১০দিনেরও বেশি সময় লেগে থাকে । তখন আকাশের বৌদ্ধ ধর্মীয় দেবতা আমাদের উপাসনা দেখতে পারেন, মৃত্যুবরণের পর আমরা স্বর্গে প্রবেশ করতে পারি । নামুছুও'র কাছে বসবাস করি, আমার খুব সুখী । কারণ আমরা প্রতিদিন এ সুন্দর হ্রদ দেখতে পাই ।

    নামুছুও হ্রদের কাছে জাশি নামক একটি উপদ্বীপ রয়েছে । উপদ্বীপে অনেক মন্দির রয়েছে । মন্দিরে তিব্বতের বৌদ্ধ ধর্মের নামুছুও এবং নিয়ানছিং থাংকুলার মূর্তি রাখা হয়েছে । পশুপালক কংচুয়ে সিথা আমাদেরকে বলেছেন, নামুছুও হ্রদের পাশাপাশি প্রাকৃতিক পরিবেশ খুব জটিল হওয়ার কারণে অনেক ধর্মাবলম্বী ৭ বার জাশি উপদ্বীপ প্রদক্ষিণ করার মাধ্যমে তাঁদের শুভকামনা সম্পন্ন করেন । কারণ উপদ্বীপকে ৭বার প্রদক্ষিণ করার দূরত্ব হ্রদকে একবার প্রদক্ষিণ করার দূরত্বের প্রায় সমান । যাতে দেবতা ধর্মাবলম্বীদের আন্তরিকতা উপলব্ধি করতে পারেন ।