বন্ধুরা, চীনের বৈদেশিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ক্রমাম্বয়ে গভীর হওয়া ও বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ খোঁজার কৌশল বাস্তবায়ন দ্রুততর করার পাশাপাশি অধিক থেকে অধিকতর চীনা নাগরিকগণ বিদেশে কাজ করছে। তাঁদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য চীন সরকার ইতিবাচকভাবে বৈদেশিক শ্রম শক্তি সহযোগিতা সেবা পুর্ণাংগ করার কাজ চালিয়ে গেচ্ছে। এবারের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে এ সম্পর্কে কিছু বলবো।
(রে ১)
'আপনি এখন চীনের বৈদেশিক শ্রম শক্তি বিষয়ক সহযোগিতার উপদেশ ব্যবস্থায় ফোন করছেন। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আপনাকে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাওয়া বিষয়ক তথ্য উপদেশ গ্রহণ স্বাগত জানায়। আপনি প্রথমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ তথ্যগুলো জানবেন।'
সম্প্রতি চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক শ্রম বিষয়ক সহযোগিতা সংক্রান্ত উপদেশ টেলি কোনে প্রদান ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
এ ফোন বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেতে চাওয়া চীনা নাগরিকদেরকে তথ্য সেবা দেবে। এর মাধ্যমে বিদেশে কর্মসংস্থানের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যাবে। এরমধ্যে বিদেশে শ্রমিক পাঠানো কোম্পানি, ব্যবস্থা, শর্ত ও চুক্তি বিষয়ক তথ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা বিভাগের পরিচালক উ সিলিন বলেছেন, চীনের নাগরিকরা বৈধ পদ্ধতির মাধ্যমে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এ ফোন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। যাতে তাঁদের বৈধ স্বার্থ সুরক্ষা করা যায়। তিনি আরো বলেছেন,
(রে ২)
'লোকেরা এ ফোনের মাধ্যমে যথাশীঘ্র সরকারের নীতি জানাতে ও সবচেয়ে কার্যকর তথ্য জানতে পারবে। ফলে তাদের নিজেরদের স্বার্থ সুরক্ষা করা সম্ভব হবে।'
চীনের শ্রম শক্তি সমৃদ্ধ ও দাম মজুরী। গত কয়েক বছরে অধিক থেকে অধিকতর চীনা নাগরিক বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ খোঁজছে। পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত চীন ১৬০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে মোট ৪০ লাখেরও বেশি শ্রমিক পাঠিয়েছে।
চীনের বৈদেশিক শ্রম শক্তি পাঠানোর আকার দিনে দিনে বাড়ার পাশাপাশি, বেশ কিছু সমস্যাও সৃষ্টি হয়েছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা বিভাগের পরিচালক উ সিলিন বলেছেন,
(রে ৩)
'কিছু কিছু অবৈধ কোম্পানি ও ব্যক্তি শ্রম শক্তির সহযোগিতার অজুহাতে আমাদের শ্রমিকদের ঠকায়। আসলে এসব কোম্পানির কোনো শ্রমিকে বিদেশে পাঠানোর অধিকার নেই।'
এসব সমস্যা সম্পর্কে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শিল্প-প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার যোগ্যতা পর্যবেক্ষণের মানদন্ড, চুক্তির ধারা, পরিকল্পনা, তদন্ত ও ব্যয় মানদন্ড অনুযায়ী যাচাই'র ব্যবস্থা নিয়েছে। আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষা করা হয়। পাশাপাশি, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কঠোরভাবে বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর আগে প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষার ব্যবস্থা করে। যাতে বিদেশে পাঠানো শ্রমিকদের মান উন্নয়ন করা যায়।
খবরে প্রকাশ, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিশেষ করে ৫ লাখ বিদেশে কর্মসংস্থানের তথ্য সম্বলিত সংশ্লিষ্ট পুস্তক প্রকাশ করে বাধ্যতামূলকভাবে জনসাধারণকে দেয়। পাশাপাশি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সরকারী ওয়েবসাইটে এ সম্পর্কে বিশেষ ওয়েবপেজ চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে বিদেশে কর্মসংস্থানের নিবাপদ সুযোগ লাভের নির্ভরাযোগ্য তথ্য প্রকাশ করা হয়।
আগে অনেক শিল্প-প্রতিষ্ঠান উদ্বিগ্ন থাকতো। কারণ, বিদেশে পাঠানো শ্রমিকরা বিভিন্ন কারণে চুক্তি অনুযায়ী চাডা না পেলে শিল্প-প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হবে। সেজন্য শ্রমিকদের উচিত বিদেশে যাওয়ার আগেই শিল্প-প্রতিষ্ঠানকে তার প্রাপ্য অর্থ দেয়া। এখন এ ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়ন বীমায় পরিণত হয়েছে। এরফলে শ্রমিকদের আর্থিক বোঝা কমেছে। উ সিলিন বলেছেন,
(রে ৪)
'বিদেশে পাঠানো শ্রমিকরা সাধানত দরিদ্র। যদি বিদেশে যাওয়ার আগে কোনো আয় না থাকে তাহলে তারা চূড় পত্রের অর্থ দেবে কীভাবে তবে তো তাঁদের পরিবারকে অনেক বোঝা বহন করতে হবে। আমাদের চুক্তি বাস্তবায়নে বীমা ব্যবস্থায় তাঁরা এখন কম খরচ দেয়। এ বীমা শুধু কয়েক শো ইউয়ান রেনমিনপি।'
চীনের আন্তর্জাতিক কর্মক্ষম জনশক্তি কেন্দ্র একটি শ্রম শক্তি পরিসেবামূলক সংস্থা। এ সংস্থার প্রধান দায়িত্ব হল আন্তর্জাতিক ও দেশের কর্মক্ষম জনশক্তির মাধ্যম, নীতিও উপদেশ, কর্মক্ষম জনশক্তির মূল্যায়ন ও প্রশিক্ষণ দেয়া। এ সংস্থার সারা বিশ্বে বহু কার্যকর শাখা রয়েছে। সংস্থাটি স্থায়ীভাবে অংশীদারি বিদেশী কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ এবং স্থানীয় পর্যবেক্ষণ করে থাকে। বৈদেশিক শ্রম শক্তি সহযোগিতার পরিসেবামূলক সংস্থা হিসেবে চীনের আন্তর্জাতিক কর্মক্ষম জনশক্তি কেন্দ্র চীনের বিদেশে পাঠানো শ্রমিকদের বিভিন্ন সুরক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছে এবং নিজের সেবার মানদন্ডের উন্নয়ন করেছে।
চীনের আন্তর্জাতিক কর্মক্ষম জনশক্তি কেন্দ্রের ম্যানেজার ফিয়াও সিয়াংইউ'র মতে চীনের বৈদেশিক শ্রমিক সহযোগিতা ভবিষ্যতের প্রতীক্ষায় রয়েছে। তিনি বলেছেন,
(রে ৫)
'চীনের বৈদেশিক শ্রম শক্তি সহযোগিতার ভবিষ্যত্ সুষ্ঠু এখন বলতে গেলে নিশ্চিত। চীনের শ্রমিকদের মানদন্ড অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে। বেশির ভাগ শ্রমিক ইংরেজি ভাষা পাড়তে পারে ও বিশেষ প্রযুক্তি শিখেছে। এছাড়া, বিদেশে এ সম্পর্কিত চাহিদা অনেক বেড়েছে। সেজন্য আমি মনে করি সহযোগিতার অবকাশ ব্যাপক।'
চীনের বাণিজ্য সহকারী মন্ত্রী ছেন চিয়ান বলেছেন, বর্তমানে বৈদেশিক শ্রম শক্তি সহযোগিতা চীনের বৈদেশিক আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিনত হয়েছে। চীন বৈদেশিক শ্রম শক্তি সহযোগিতার উন্নয়ন বিদেশী মুদ্রা বাড়ানো, বিদেশে পাঠানো শ্রমিকদের পরিবারের আয় বাড়ানো, চীনের কর্মসংস্থানের চাপ প্রশমিত করা ও অর্থনীতির উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা ব্যবস্থা নিচ্ছে।
ছেন চিয়ান বলেছেন, চীনের বিদেশে পাঠানো শ্রমিক চুক্তি অনুযায়ী সময়সীমার পর স্বদেশে ফিরে আসে। সেজন্য অন্যান্য দেশগুলোর মত কর্মসংস্থানের সুযোগ ও অভিবাসী সম্পর্কিত সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি হবে না। তিনি আরো বলেছেন,
(রে ৬)
'বিদেশে শ্রম শক্তি পাঠানো ও এর মাধ্যমে আমাদের কর্মসংস্থান সমস্যার সমাধান চীনের বৈদেশিক শ্রম শক্তি সহযোগিতার লক্ষ্য নয়। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য হল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সেবার নিয়ম অনুযায়ী শ্রম শক্তির অভাব দেশগুলোর কঠোরভাবে প্রশমিত করা। প্রতিদ্বন্দ্বিতা উন্নয়নের লক্ষে চীন এসব দেশের সঙ্গে পারস্পরিক সুবিধা ও স্বার্থের কথা বিবেচনা করে অভিন্ন সমৃদ্ধি বাস্তবায়ন করা যায়।'
|