চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সুরের ভুবণ আসরটি শুনার জন্য আমি --- পেইচিং থেকে আপনাদের সকলের স্বাগত জানাচ্ছি। আশা করি, আপনারা ভালোই আছেন।
সম্প্রতি চীনের সিমফনি দল পেইচিংয়ে ওয়াং ঈ এর রচিত "চীনকে ভূয়সী প্রশংসা" নামে সিমফনি কোরাস সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এটা হচ্ছে আসন্ন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ১৭তম জাতীয় কংগ্রেসের উদযাপনী একটি সংগীতানুষ্ঠান। আজকের অনুষ্ঠানে আমি এই বিশেষ সংগীতানুষ্ঠানের রেকর্ডিং শোনাবো।
চীনা জাতির মহা পুনরুদ্ধার প্রশংসার জন্য এই সংগীতানুষ্ঠানের অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুরকার বৃহত্ ঐকতান-বাদকদল ও শিল্পীর কণ্ঠ মিল তালিয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ ব্রতে অর্জিত বিশ্বের দৃষ্টি আকৃষ্ট সফলতার প্রশংসা করার চেষ্টা করেছেন। তিনি সংগীতের মধ্য দিয়ে সমসাময়িক চীনাদের স্বপ্ন ও অন্বেষণ এবং চীনা জাতির আত্মোন্নতির জাতীয় মর্ম প্রদর্শন করেছেন।
এখন আপনারা সিমফনি কোরাসের প্রথম অংশের শুনছেন। কয়েক শত বছরের অনুন্নত, কষ্টকর ও ব্যাঘাত পার হয়ে অবশেষে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের মাধ্যমে চীনা জাতি শত শত ফুল ফুটানোর মহান পুনরুদ্ধার শুরু হয়। এই সংগীত আনন্দময় ছন্দের মধ্যে শিল্পী স্বদেশের বসতকালের প্রতি চীনা জনগণের প্রশংসার কথা গেয়েছেন। গানের নাম "বসতকাল এসেছে"। গানের কথা এমন, আরেকটি বসতকাল এসেছে। বসতকালের বাতাস মাটিকে সবুজ করে দিয়েছে। বসতকাল পৃথিবীর সবকিছু নতুন করে সাজিয়েছে। বসতকাল মনের ভিতরের স্বপ্নকে জেগে উঠেছে। মনের স্বপ্ন আমাকে অগ্রগতি ত্বরান্বিত করে। বসতকাল এসেছে। সব জায়গায় ফুল ফুটে। সব জায়গায় গান গায়। হাজার হাজার মাইল পাহাড় ও নদনদী অতি সুন্দর।"
"চীনকে ভূয়সী প্রশংসা" এর সুরকার ওয়াং ঈ পেশাগত সুরকার নয়। তিনি পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ ও দক্ষিণ-পশ্চিম অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক হয়েছেন। এখন তিনি চীনের জাতীয় উন্নয়ন ব্যাংকের ডেপুটি গভর্ণর। ২০০২ সালে ওয়াং ঈ পশ্চিম চীনের ছিংহাই তিব্বত মালভূমিতে ভ্রমণের সময় চীনের সুন্দর নদনদী ও পাহাড় দেখে স্বদেশের জন্য গান গাওয়ার উত্সাহ পান। তখন থেকে তিনি সংগীতের মৌলিক জ্ঞান শিখে দ্রুতই "দূরে যাওয়া", "স্বদেশ"সহ গানগুলো সুর করে "আকস্মিক" নামে একটি এলবাম প্রকাশ করেছেন। তারপর তিনি সিমফনি কোরাসের মাধ্যমে দেশ ও মহান যুগকে প্রশংসা করার পরিকল্পনা করেছেন।
চীনের সিমফনি দলের নেতা কুয়ান সিয়াকে ওয়াং ঈ সিমফনি কোরাস সুর করার পরিকল্পনা জানার পর দু'জনের মতৈক্যে হয়েছে। তাঁরা সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং অবশেষে এবারের সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন।
আপনারা এখন "চীনকে ভূয়সী প্রশংসা" এর দ্বিতীয় অংশ শুনছেন। সুরের তালে তালে চীনা জাতি এক মন হয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ও শক্তি তুলে ধরেছে।
"চীনকে ভূয়সী প্রশংসা" সংগীতানুষ্ঠান ২০০৬ সালের শেষ দিকে পেইচিংয়ে প্রথমে পরিবেশিত হয়। তারপর প্রায় এক বছর সময়ে কুয়াংচৌ, শাংহাই, হাংচৌ প্রভৃতি শহরে গিয়েছে। যে জায়গায় যায়, সেখানে অবশ্যই উষ্ণ সংবর্ধনা পায়। সংগীতানুষ্ঠানের শেষে সকল দর্শক ও শিল্পীদের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে গান গায়। খুব ভালো সামাজিক প্রভাব ফেলেছে।
এখন আপনারা "চীনকে ভূয়সী প্রশংসা" সংগীতানুষ্ঠানের তৃতীয় অংশ শুনছেন। এর নাম "সমৃদ্ধ দ্বীপ"। চীনের পুনরেকীকরণ হচ্ছে চীনা জাতি পুনরুদ্ধার কাজের গুরুত্বপূর্ণ অভিচ্ছেদ অংশ। সংগীতানুষ্ঠানের এই অংশ ভাইঅ্যালিনের সুর দিয়ে তাইওয়ানের দু'পারের স্বদেশবাসীদের ভালোবাসা ও চিন্তাভাবনা প্রকাশ করে। গায়ক সুন শো আবেগপ্লুতভাবে গেয়েছেন, "পূর্ব সাগরের পানি ভেসে চলছে। তাইওয়ান দ্বীপের কথা আমার মনে আছে। বিদায়ের বেদনা মনে থাকে সবসময়। তাইওয়ান স্বদেশের কোলে ফিরে আসবে। এটা চীনা ছেলেমেয়ের অভিন্ন আশা-আকাঙ্ক্ষা। বিশ্বের কাছে আমরা দৃপ্তকণ্ঠে তা ঘোষণা করি।"
সংগীতানুষ্ঠানের শেষ অংশের নাম "উড্ডয়ন চীন"। গানের কথা এমন, "শত বছরের কষ্ঠ আমাদের স্বপ্ন দেয়। শত বছরের স্বপ্ন আমাদের শক্তি দেয়। শত বছরের শক্তি আমাদের প্রেরণা দেয়। শত বছরের প্রেরণায় আমরা ওড়ে বেড়াই। ওড়ে বেড়ায় চীন।"
এতোক্ষণ আপনারা চীনের সিমফনি দলের পরিবেশিত "চীনকে ভূয়সী প্রশংসা" নামে সংগীতানুষ্ঠানের অংশ বিশেষ শুনলেন। অনুষ্ঠানটি শুনার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন সবাই। আবার কথা হবে।
|