v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-10-22 19:31:49    
তুর্কী গণ ভোটদানে সংবিধানের সংশোধিত প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে

cri

    ২১ অক্টোবর তুরস্কে অনুষ্ঠিত গণ ভোটে প্রায়৭০ শতাংশ মানুষ জনগণের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিধান সংবলিত সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে । এদিন রাতে তুরস্কের নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত গণ ভোটের ফলাফল থেকে এ খবর জানা গেছে । বিশ্লেষকরা মনে করেন, এতে চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে বিবাদ চলছিল আর অবসান হবে । তুরস্কের সংবিধান অনুযায়ী চলতি বছরের ১৬ মের আগেই তুরস্কের পার্লামেন্টে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আহমেদ নেকদেত সিজারের উত্তরাধিকার ঠিক করার কথা ছিল । কিন্তু ২৭ এপ্রিল এবং ৬ মে অনুষ্ঠিত দুই দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিবাপ্লিকান পিপলস পার্টিসহ প্রধান বিরোধী পার্টিগুলোর বিরোধীতার মুখে জাস্টিস এ্যান্ড ডেভেলেপমেন্ট পার্টির প্রার্থী, তত্কালীন উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ্ গুল একাধিকবার নির্বাচিত হতে ব্যর্থ হন । এ পেক্ষাপটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সংক্রান্ত সংকট উত্তরণের লক্ষ্যে তুরস্কের ক্ষমতাসীন পার্টি সংবিধান সংশোধনের বিল পার্লামেন্টে দাখিল করে ।

    এ বিল অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পদ্ধতি পার্লামেন্টের নির্বাচন থেকে জনগণের ভোটে পরিবর্তন করা হয় । একই সঙ্গে বিলে প্রেসিডেন্টের কার্যমেয়াদ ৭ বছর থেকে ৫ বছরে কমিয়ে আনা এবং দুই কার্যমেয়াদ পর্যন্ত নির্বাচনে গ্রহণের সুপারিশ করা হয় । এ ছাড়া পার্লামেন্টের কার্যমেয়াদ ৫ বছর থেকে ৪ বছরে কমানো । পার্লামেন্টের অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী সদস্যদের সংখ্যা ৩ ভাগের ২ ভাগ থেকে ৩ ভাগের ১ ভাগে কমানোর কথা বলা হয় । কিন্তু ১৫ই জুন প্রেসিডেন্ট সিজার এ বিলের বিরোধীতা করেন । ফলে জাস্টিস এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি পুনরায় পার্লামেন্টে সংশোধনী প্রস্তাব আনে । সংবিধান অনুযায়ী তখন আর প্রেসিডেন্টের নাকচ করার ক্ষমতা নেই । এ কারণে ১২০ দিনের মধ্যে এ প্রস্তাব সম্পর্কে গণ ভোট আয়োজনের বিধি অনুযায়ী গণ ভোট অনুষ্ঠিত হয় ।

    ১৯২৩ সালে তুরস্ক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই ধর্মনিরপেক্ষতা এবং ধর্মীয় রাজনীতির মধ্যে বিরোধ সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে । ইসলামিক ভাবধারার জাস্টিস এ্যান্ড ডেভেলেপমেন্ট পার্টি ২০০৩ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ইসলামী নীতি ও ইউরোপ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের কূটনৈতিক নীতি চালু করে । সরকার ও পার্লামেন্টের ক্ষমতাসীন এ পার্টি যদি প্রেসিডেন্টের পদ লাভ করে, তাহলে তুরস্কে বিরোধী দলগুলোর ওপর চাপ বেড়ে যাবে । এ কারণে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট সিজার এবং তুর্কি সেনাবাহিনী পৃথক পৃথকভাবে বিবৃতি দিয়ে জাস্টিস এ্যান্ড ডেভেলেপমেন্ট পার্টিকে সতর্ক করে দেয় । এর পাশাপাশি তুরস্কের কয়েকটি বড় শহরেও এ পার্টির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

    সংকট অবসানের লক্ষ্যে মে মাসে এ পার্টি দু'টি সমঝোতার ব্যবস্থা গ্রহণ করে । এক. পরিকল্পিত সময়ের আগেই নির্বাচন করা । দুই. সংবিধান সংশোধন করা । ২২ জুলাই অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচনে জনগণের ব্যাপক সমর্থনের মাধ্যমে এ পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়ে একাই সরকার গঠনের যোগ্যতা অর্জন করেছে । প্রেসিডেন্ট প্রার্থী আব্দুল্লাহ্ গুল পরের বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় লাভ করেন । বিশ্লেষকরা মনে করেন, জাস্টিস এ্যান্ড ডেভেলেপমেন্ট পার্টির সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব এবং গণ ভোটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনা তার অনুকুলে আসায় এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে ।

    রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এ পার্টি নমনীয়তার পাশাপাশি বাস্তব নীতি অনুসরণ করে । ইসলামিক মূল্যবোধ পোষণ করার পাশাপাশি পার্টির ধর্মীয় প্রভাবও কমিয়ে দিয়েছে ।

    অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন এ পার্টি সামষ্টিক নিয়ন্ত্রণ জোরদার করে আর্থিক সংস্থার সংস্কার ত্বরান্বিত করেছে ,পুঁজি বিনিয়োগ পরিবেশের পরিবর্তন করেছে , অবকাঠামো নির্মাণে পুঁজি বিনিয়োগ সম্প্রসারণ করেছে এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগকে সহায়তা করেছে । গত ৫ বছরের মধ্যে তুরস্কের অর্থনীতির গড়পড়তা বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ ,যা দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ।

    কূটনৈতিক ক্ষেত্রে তারা ই.ইউ.তে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার ব্যাপারে জোরালো উদ্যোগ নেয় এবং ২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে ই.ইউ'র সঙ্গে আলোচনা শুরু করে । এটা তুরস্কের ই.ইউ.তে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রেএকটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি ।

    (ছাও ইয়ান হুয়া)