v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-10-19 18:29:33    
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর প্রত্যাবর্তন(ছবি)

cri

    পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বেনজির ভূট্টো ৮ বছরের প্রবাস জীবন শেষ করে ১৮ অক্টোবর পাকিস্তানের বন্দর শহর করাচি ফিরে এসেছেন। তিনি করাচি পৌঁছার পর পরই তাকে লক্ষ্য করে দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১২৪ জন নিহত এবং প্রায় ৪০০ জন আহত হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

    ১৮ অক্টোবর বেনজির ভূট্টো বিমান যোগে করাচী পৌঁছেন। প্রায় পিপলস পার্টির ১০০ জনেরও বেশি কর্মকর্তা তাঁর সঙ্গে ফিরে এসেছেন।তাঁর স্বামী ও ছেলেমেয়ে তাঁর সঙ্গে ফিরে আসেন নি। করাচি বিমান বন্দরে বেনজির ভূট্টো বলেন, তিনি দরিদ্র জনগণের কল্যাণে এবং পাকিস্তানের গণতন্ত্রের জন্য ফিরে এসেছেন। বিমান বন্দরের বাইরে লাখ লাখ সমর্থক তাঁকে সংবর্ধনা জানায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, পাকিস্তান সরকার বেনজির ভুট্টোর নিরাপত্তার জন্য একটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি এবং বহু পুলিশ নিয়োগ করেছে।

    তবে পাকিস্তানের আপামর জনগণ বেনজির ভুট্টোর আগমনকে স্বাগত জানায় নি। পাকিস্তানের রেলপথ মন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ মনে করেন, বেনজির ভুট্টোর আগের মতো রাজনৈতিক প্রভাব আর নেই। তিনি বলেন, বেনজিরকে স্বাগত জানানোর জন্য রাওয়ালপিন্ডি থেকে করাচি যাওয়া লোক সংখ্যা খুব কম ছিল। বেনজিরের গাড়ির খুব কাছেই পর পর দু'বার বোমার বিস্ফোরণ ঘটে এবং বহু সংখ্যক লোক হতাহত হয়েছে। পাকিস্তানের পুলিশ জানিয়েছে, এ বিস্ফোরণ বিরোধী দল বেনজির ভুট্টোর প্রত্যাবর্তনের জন্য আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে লক্ষ্য করে ঘটানো হয়। তবে বেনজির নিরাপদে নিজের বাসস্থানে ফিরে যান। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, দুটি বিস্ফোরণের মধ্যে একটি ছিলো আত্মঘাতী এবং আরেকটি ছিলো গাড়ি বোমার বিস্ফোরণ। নিহতের মধ্যে অধিকাংশই হচ্ছে পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মী। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোন ব্যক্তি বা সংস্থা এ বিস্ফোরণের দায়িত্ব স্বীকার করে নি।

    বিস্ফোরণের পর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ ও প্রধানমন্ত্রী শওকত আজিজ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনও এক বিবৃতিতে বিস্ফোরণ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ ও তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি আশা করেন, পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দেশের সংহতি জোরদার করার জন্য মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালাবে। যুক্তরাষ্ট্রও বিস্ফোরণ ঘটনা নিন্দা করেছে এবং মনে করে, কোন ওজুহাতেই নিরীহ নাগরিকদের জীবন বিপন্ন করার কার্যকলাপকে মেনে নেয়া যায় না।

    বেনজির ভুট্টো হচ্ছেন পাকিস্তানের বৃহত্তম বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ার‌ম্যান। তিনি দু'বার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। দুর্নীতির অভিযোগে তাকে ১৯৯৯ সালে স্বেচ্ছা নির্বাসনে পাঠানো হয়। এ বছর বেনজির বলেছিলেন, পার্লামেন্ট নির্বাচন এবং পিপলস পার্টির নেতৃত্ব প্রদানের লক্ষে দেশে ফিরে আসবেন। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মুশাররফ ৫ অক্টোবর তার সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর ও জারি করেছেন। এই চুক্তি অনুযায়ী, বেনজিরের বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জনমত মনে করে, এই সমঝোতা চুক্তি বেনজিরের প্রত্যাবর্তনের পথকে সুগম করেছে। কিন্তু ১২ অক্টোবর পাকিস্তানের সুপ্রীম কোর্ট আকস্মিকভাবে এক রায়ে বলেছে যে, তারা এই সমঝোতা চুক্তির বিরুদ্ধে যে কেউ আদালতে আপীল করতে পারবে। পাকিস্তানের তথ্য ও বেতার উপ-মন্ত্রী তারিক আজি বলেন, যদি সুপ্রীম কোর্ট প্রেসিডেন্টের জারি করা সমঝোতা চুক্তি বাতিল করে, তাহলে পাকিস্তান সরকার আদালতের রায়কে সম্মান করবে। প্রেসিডেন্টের ক্ষমার আদেশ বাতিল হলে বেনজির আবার দুর্নীতি মামলার সম্মুখীন হবেন। তথ্য মাধ্যম মনে করে, যদিও সুপ্রীম কোর্ট এখনো সরাসরি মুশাররফের সমঝোতা চুক্তি বাতিল করে নি, তবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির অনিশ্চয়তা বেড়েই চলেছে।

    দ্বিতীয়তঃ পাকিস্তানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মুশাররফের সাম্প্রতিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের যোগ্যতা সংক্রান্ত মামলার বিচার ২২ অক্টোবর সেদেশের সুপ্রীম কোর্টে আবার শুরু হচ্ছে।

    তৃতীয়তঃ, পাকিস্তানের বর্তমান পার্লামেন্টের কার্যমেয়াদ হচ্ছে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত। নতুন পার্লামেন্ট নির্বাচন আগামী বছর জানুয়ারী মাসে অনুষ্ঠিত হবে। পাকিস্তানের তথ্য ও বেতার মন্ত্রী মুহাম্মদ আলি দুররানি ১৬ অক্টোবর জানিয়েছেন, ১৫ নভেম্বর পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দেয়া হবে। প্রেসিডেন্ট মুশাররফ বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনার পর একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করবেন। যাতে নতুন পার্লামেন্ট নির্বাচন করা সম্ভব হয়। পাকিস্তানে এখন রাজনৈতিক পরিস্থিতির একটি স্পর্শকাতর অবস্থা চলছে। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)