v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-10-18 20:13:37    
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক পরমাণু সহযোগিতা চুক্তির ভবিষ্যত সম্ভাবনা

cri
    ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ১৫ অক্টোবর টেলিফোনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাবলিউ বুশকে জানিয়েছেন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু শক্তি সংক্রান্ত সহযোগিতা চুক্তি কার্যকর করার ক্ষেত্রে ভারতের কিছু সমস্যা রয়েছে। ভারত ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার মধ্যে নিশ্চয়তামূলক চুক্তি নিয়ে আলোচনা অস্থায়ীভাবে বন্ধ রয়েছে। তবে ভারত সরকার তার দু'বছরের চেষ্টার পর ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক পরমাণু শক্তির সহযোগিতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। সম্প্রতি এ চুক্তির নিয়তি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও ভারতের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এবং বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে তর্ক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

    যুক্তরাষ্ট্রের "ওয়াশিংটন পোষ্ট" পত্রিকা ১৬ অক্টোবর নাম-প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞের কথার উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক পরমাণু শক্তি সংক্রান্ত সহযোগিতা চুক্তি কার্যকরের গুরুত্বপূর্ণ বাধা চুক্তির সুনির্দিষ্ট ধারা নয়। ভারতের অভ্যন্তরীণ সমালোচনা ও চাপ দিন দিন বাড়ছে। এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় বাধা।

    ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পরমানু শক্তি সহযোগিতা চুক্তি এ বছরের আগস্ট মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পাদনের পর ভারতের বিরোধী দল ও দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দল এই চুক্তির ফলে ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বিক্রি হয়েছে, তা ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়নের পরিকল্পনাকে ব্যহত করেছে এবং ভারতের স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতির ওপর হস্তক্ষেপ হয়েছে বলে এই চুক্তি স্বাক্ষরের বিরোধিতা করেছে। ক্ষমতাসীন দলের কিছু সমর্থক বামপন্থী পার্টি সরকারকে দেয়া তার সমর্থন প্রত্যাহার এবং পূর্ব নির্ধারিত সময়ের আগেই সাধারণ নির্বাচনের কথা বলে এই চুক্তির বিরোধিতা করেছে।

    এ পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও ভারতের কংগ্রেসের চেয়ারম্যান সোনিয়া গান্ধি বিভিন্ন স্থানে জোর দিয়ে বলেছেন, তাঁদের লক্ষ হচ্ছে বর্তমান সরকার তার কার্যমেয়াদ পর্যন্ত থাকুক। তাঁরা জোর করে এ পারমাণবিক চুক্তি অনুমোদন করবেন না। সিং আরো বলেন, ভারতীয় সরকারের কেবল এটিই একমাত্র সমস্যা তা নয়। যদি এই চুক্তি অনুমোদিত না হয় হতাশ হওয়ার তেমন কিছু নেই।"

    বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভারত এই বছরের নভেম্বর মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সঙ্গে তত্ত্বাবধান সংক্রান্ত আলোচনা সম্পন্ন করবে। আগামী বছরের মার্চ ও এপ্রিল মাসের আগেই পরমাণু জ্বালানি সরবরাহকারী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে নিশ্চয়তার ধারা নিয়ে আলোচনা করবে। আগামী বছর জুন মাসের আগেই এই চুক্তি মার্কিন কংগ্রেসকে দাখিল করা হবে। যাতে ২০০৯ সালের জানুয়ারী মাসে বুশ সরকারের কার্য মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সকল প্রকার আলোচনা শেষ করা যায়। যদি ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তি পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুসারে অর্থাত্ বুশ সরকারের কার্য মেয়াদকালে সম্পন্ন না হয়, তাহলে নতুন মার্কিন সরকারের মনোভাব খুব সম্ভবতঃ এই চুক্তির প্রতিকুলে চলে যাবে। ভারতের কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন দলগুলো "ক্ষমতা চায়, না পরমাণু চুক্তি চায়" এই সমস্যার ক্ষেত্রে ক্ষমতাকেই বেছে নিয়েছে। এর ফলে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু চুক্তির ভবিষ্যত বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

    কিন্তু অন্যান্য বিশ্লেষকরা বলেন, এখন পরমাণু চুক্তির "অপমৃত্যুর" কথা বলা ঠিক না। কারণ এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট পক্ষ পুরোপুরিভাবে এই পরমাণু চুক্তিকে অস্বীকার করে নি। কেবল অস্থায়ীভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। সংশ্লিস্ট পক্ষের প্রচেষ্টায় তাকে আবার কার্যকর করার সম্ভাবনাও রয়েছে।

    প্রথমতঃ মার্কিন পক্ষ এখনো এই চুক্তি বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভারত সরকারের অবস্থান পরিবর্তনের খবর জানার পর মার্কিন পররাষ্ট্র উপ-মন্ত্রী নিকোলাস বার্নস অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরী ভিত্তিতে আলোচনা করেছেন এবং এই চুক্তি বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের উপ-সহকারী মন্ত্রী টম ক্যাসি ১৬ অক্টোবর বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আশা করে, ভারত এই চুক্তি মেনে চলবে। যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তির সংশ্লিষ্ট সমস্যাগুলো নিয়ে ভারতের সঙ্গে অব্যাহতভাবে আলোচনা করতে চায়।

    দ্বিতীয়ত, ভারত সরকার এখনো এই ব্যাপারে কোন আনুষ্ঠানিক সরকারী ঘোষণা দেয় নি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আনন্দ শর্মা ১৬ অক্টোবর বলেছেন, যদিও এখন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার সময়সূচী নেই। তবুও ভারত সরকার বিশ্বের প্রধান পরমাণু জ্বালানি সরবরাহকারী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সহযোগিতামূলক ও আলোচনার প্রয়াস চালিয়ে যাবে। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)