খেলাধুলা হচ্ছে আমাদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপায় । সে জন্যে অনেকই খেলাধুলার অভ্যাস ধরে রাখে । খেলাধুলার সময় প্রচুর ঘাম হয়ে শরীরের পানি বের হয়ে যায় । তাই ঠিকমতো পানি পান করা উচিত । খেলাধুলার সময় কিভাবে পানি পান করা শরীরের জন্য ভালো? আজকের অনুষ্ঠানে আমি এ বিষয় সম্পর্কে আপনাদের কিছু তথ্য দেবো । চলুন তাহলে শুরু করা যাক অনুষ্ঠান ।
হাঁটা মেশিনে আধ ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা হাঁটার পর বা বাস্কেটবল খেলার পর পানি পান করা ক্লান্তি দূর করার জন্য জরুরি । নানা ধরনের পানীয়ের মধ্যে ঠাণ্ডা জুস বা কোকাকলাসহ মিষ্টি পানীয় যুবকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় । কিন্তু অনেকক্ষণ খেলাধুলার পর এ ধরনের পানীয় পান করার পর আরো তৃষ্ণার্ত লাগে ।এতে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে এবং পেশিতে টান পড়তে পারে ।
খেলাধুলার আগে এবং পরে পানি পান করা স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । প্রয়োজনীয় সময়ে পানি পানের ফলে শরীরে পানির ভারসাম্য ঠিক থাকে আর শরীরে পানির ঘাটতি হলেই তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে । এ সংক্রান্ত বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের ক্রীড়া চিকিত্সা ইনস্টিডিউট খেলাধুলার সময় পানি পান করার পদ্ধতি সম্পর্কে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, খেলাধুলার আগে প্রায় ৫০০ মিলিলিটার সিদ্ধ পানি পান করা ভালো । কারণ খেলাধুলা শুরুর আগে পানির উপাদান পূরণ করলে খেলার সময় শরীরের সমন্বয় ক্ষমতা বেশি থাকে এবং হৃদস্পন্দন মাত্রাতিরিক্ত বাড়ে না । খেলার ২ ঘন্টা আগে পানি খেলে, কিডনী হজমের জন্য যথেষ্ট সময় পায় । এতে শরীরের পানির ভারসাম্য ও সমন্বয় ঠিক থাকে এবং যথেষ্ট সময় নিয়ে শরীরের অতিরিক্ত পানির উপাদান রূপান্তরিত হয় । খেলাধুলার সময় যদি ১ ঘন্টার চেয়ে বেশি হয়, তাহলে অল্প পরিমাণ লবণযুক্ত পানি খাওয়া ভালো । প্রতি লিটার পানিতে ০.১১ থেকে ০.১৫ গ্রাম লবণ মেশাতে হবে । পানির তাপমাত্রা ১৫ থেকে ২২ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডের ভেতরে হলে ভালো । পানিতে লবণ কেন মেশাতে হবে ? কারণ খেলাধুলার সময় শরীরের ঘামের সঙ্গে অনেক সোডিয়াম আয়ন বের হয়ে যায় । এ জন্যে শুধু সিদ্ধ পানি শরীরের সোডিয়াম আয়ন পূরণ করতে পারে না । ফলে সহজেই শরীর অসুস্থ লাগে । এ কারণে খেলাধুলার সময় প্রতি ২০ মিনিট পরপর অল্প পরিমাণে লবনযুক্ত পানি খেলে শরীর সহজে অসুস্থ হয় না এবং পানি স্বল্পতায় কারণে শরীরের সম্ভাব্য ক্ষতি প্রতিরোধ করে ।
খেলাধুলার পর সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়ামসহ বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদানযুক্ত পানীয় খাওয়া ভালো । অথবা ১:১৫ অনুপাতে সিদ্ধ পানিতে চিনি গুলিয়ে খাওয়া যেতে পারে । পানিতে চিনি দেয়ার কারণ হচ্ছে মিষ্টি পানি রক্তে স্নুকোজের মাত্রা ঠিক রাখে । এতে শরীর কম ক্লান্ত হয় ।
অবশেষে খেলাধুলার সময় ও পুনরাবৃত্তি সম্পর্কে কিছু কথা বলবো । স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য প্রতি সপ্তাহে আধ ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা পর্যন্ত দুই বা তিন বার শরীর চর্চা করা ভালো । দীর্ঘকাল ধরে এ অভ্যাস বজায় রাখলে আপনাদের স্বাস্থ্য অটুট থাকবে । দীর্ঘ দিনের মধ্যে একবার শরীর চর্চা করা এবং একবার অতিরিক্ত সময় খেলাধুলা করা শরীরের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে ।
|