v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-10-11 20:51:55    
সার্কোজির রাশিয়া সফর

cri
    ৯ ও ১০ অক্টোবর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সার্কোজি রাশিয়ায় দু'দিনব্যাপী রাষ্ট্রীয় সফর শেষ করেছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার পর এটাই তার প্রথম রাশিয়া সফর। সফরকালে দুই শীর্ষ নেতা ভ্লাদিমির পুতিন ও সার্কোজির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে । দু'পক্ষ অর্থনৈতিক ও পুঁজি বিনিয়োগ ক্ষেত্রে সহযোগিতার সমস্যা নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছে। একই সঙ্গে " ইউরোপীয় প্রথাগত সশস্ত্র শক্তি চুক্তি", পূর্ব ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, কসভো সমস্যা, মধ্য-প্রাচ্য ও ইরাক পরিস্থিতি, ইরানের পরমাণু পরিকল্পনা এবং এ মাসের শেষ দিকে পর্তুগালে অনুষ্ঠেয় রাশিয়া-ইউরোপীয় ইউনিয়ন র্শীষ সম্মেলনসহ অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সমস্যাগুলো নিয়ে তাদের মতো বিস্তারিত আলোচনা হয়।

   চলতি বছরের মে মাসে সার্কোজি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট পদ গ্রহণের পর, বহুবার রাশিয়ার সমালোচনা করেছেন। মে মাসে প্রকাশ্যে রাশিয়ার মানবাধিকার রেকর্ডের নিন্দাও করেছেন। সার্কোজি আরও বলেছেন, নিজের প্রচুর তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পদের ওপর নির্ভর করে রাশিয়া প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি হুমকি সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি বুলগেরিয়ায় সফরের সময় সার্কোজি বিশ্ব পরিস্থিতি জটিল আকার ধরেন করার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, একটি বৃহত্ দেশ হিসেবে রাশিয়া নিজের দায়িত্ব পালন করেনি। সার্কোজির এসব আচরণ , কসভো এবং ইরানের পরমাণু সমস্যাসহ বহু ক্ষেত্রের সমস্যায় রাশিয়া ও ফ্রান্সের মতাবিরোধ লেগে থাকায় দু'দেশের সম্পর্ক জটিল আকার নেয়। এ রকম এক প্রেক্ষাপটে সার্কোজির মস্কো সফর সবার সজাগ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কিছু কিছু সংবাদ-মাধ্যম তাদের বিশ্লেষণে বলেছে, সার্কোজির এবারের সফরের লক্ষ্য হচ্ছে রাশিয়ার সঙ্গে ফ্রান্সের সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে উন্নীত করা। অর্থাত্ ফ্রান্স ও রাশিয়ার সম্পর্ক ঝালাই করা।

    একজন বিশ্লেষক বলেন, এই সফরে রাশিয়া ও ফ্রান্সের সম্পর্কে স্বাভাবিকতা ফিরে আসেনি। তবে পুতিন ও সার্কোজি উভয়েই দু'পক্ষের উত্তেজজনাপূর্ণ সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছেন। এমন কি, দু'দেশের সম্পর্কের গুরুত্বের দিকটি তাঁরা জোর দিয়ে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন। এবারের সাক্ষাত্কালে পুতিন আশা প্রকাশ করেন , অতীত , বর্তমান এবং ভবিষ্যতে ইউরোপ এবং বিশ্বে ফ্রান্স রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হবে । তিনি বলেন, রাশিয়া ও ফ্রান্সের সম্পর্কের সুষ্ঠু উন্নয়ন হয়েছে। দু'পক্ষের নিয়মিত র্শীষ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বৈঠকের পর সার্কোজি সংবাদ-মাধ্যমকে বলেন, কিছু কিছু সমস্যায় দু'পক্ষ মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেনি। তবে দু'দেশের সম্পর্কের আরও উন্নতি এবং সহযোগিতা জোরদার করার ব্যাপারে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। রাশিয়ায় সফর শুরু করার আগে সার্কোজি " রুশ পত্রিকা" -কে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ফ্রান্স ও রাশিয়ার সহযোগিতামূলক সম্পর্কের উন্নয়ন বিশ্ব মঞ্চে রাশিয়ার পুনরায় ভূমিকা পালনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি মনে করেন, ইউরোপ ও রাশিয়ার সহযোগিতায় বিশ্ব লাভবান হবে । জানা গেছে, বৈঠককালে দু'দেশের প্রেসিডেন্ট পৃথক পৃথকভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন, অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সমস্যায় তাদের দৃষ্টিভঙ্গী ব্যাখ্যা করেন এবং মত বিনিময় করেন। দু'পক্ষই আশা প্রকাশ করে, দু'দেশের সম্পর্কের আরও সুষ্ঠু উন্নয়ন হবে। এ থেকে বোঝা যায় যে, রাশিয়ায় সার্কোজির সফরে সত্যিকার সমস্যার পুরো সমাধান না হলেও আনুষঙ্গিক কিছু সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

    উল্লেখ্য যে, এবারের সফর দু'দেশের আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়নে বেশি ভূমিকা পালন করেছে। রাশিয়া ও ফ্রান্সের বাণিজ্য সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়েছে। ফ্রান্স হচ্ছে রাশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার। বিমান এবং জ্বালানি সম্পদসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু'পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, প্রতিবছর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বাড়ছে। এ পর্যন্ত, এর মোট পরিমাণ পৌঁছেছে ১৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।এবারের সফরে আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা বিষয়টি ছিল দু'পক্ষের আলোচনার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।