v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-10-10 16:03:05    
মার্কিন নাগরিক পার্সনসের মিষ্টি প্রেমের গল্প

cri

    চীনের প্রতি দারুন ভক্তি নিয়ে ১৯৯৪ সালে মার্কিন নাগরিক পার্সনস পেইচিংয়ে এলেন । তিনি ইংরেজী ভাষার শিক্ষক , অনুবাদক এমনকি টি ভি উপস্থাপকের কাজ করলেন । দেখতে দেখতে ১৩ বছর পার হয়ে গেলো । চীনা সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা ছাড়াও পার্সনসের চীনে থাকার আরেকটি বড় কারণ হল একটি মেয়ে ।

    চীনে এসে প্রথম প্রথম পার্সনস ভালোভাবে চীনা ভাষা বলতে পারতেন না । এর কারণে অনেক ভুল-বোঝাবুঝিও হতো । তেমনি একটি ভুল-বোঝাবুঝি থেকেই জন্ম নিয়েছে পার্সনস ও একজন চীনা মেয়ের গল্প । চীনে পার্সনসের প্রথম চাকরি হলো পেইচিংয়ে পিপলস বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী ভাষার শিক্ষক হিসেবে । তিনি প্রাপ্তবয়স্ক ছাত্রদের ক্লাস নিতেন । পার্সনস খুব রসিক মানুষ , তাই তার ক্লাসে একটি মজার নিয়ম আছে । যে ছাত্র ক্লাসে কথা বলবে সবাইকে তার খাওয়াতে হবে । ক্লাস নেয়ার সময় পার্সনস লক্ষ্য করেন তিন জন ছাত্রী সবসময় কথা বলে , এ প্রসঙ্গে পার্সনস বলেন :

    আমার ক্লাসে তিনটি মেয়ে সবসময় কথা বলতো , আমি সবাইকে বলতাম , কে ক্লাস না শুনে কথা বলে , সে আমাকে আইস ক্রিম খাওয়াবে । পার্সনসের কথা শেষ হওয়া মাত্রই চৌ হুই নামে একটি মেয়ে আবার কথা বলতে শুরু করলো । চৌ হুইয়ের এখনও সে কথা মনে আছে , চৌ হুই বলেন :

    আসলে আমার দু'জন বন্ধ তখন কথা বলছিল , আমি বরং তাদেরকে বলছিলাম , ক্লাসে কথা বলো না , ঠিক এ মুহূর্তে পার্সনস আমাকে দেখেন । আসলে এটা ছিল একটি ভুল-বোঝাবুঝি ।

    ফলে চৌ হুই সহ ঐ তিনটি মেয়ে পার্সনসকে আইসক্রিম খাওয়ায় । এরপর থেকে তারা পার্সনসের বন্ধু হয়ে গেলো । তারা পার্সনসকে চীনের ঐতিহ্যবাহী খাবার রান্নার পদ্ধতি শেখায় এবং একসঙ্গে অনেক গল্প গুজব করে । একসঙ্গে বেশি বেশি সময় কাটানোর কারণে চৌ হুই-এর প্রতি পার্সনসের বেশ আকর্ষণ জন্ম নিলো । পার্সনস বলেন :

    তার কথা শুনলে আমার শান্তি লাগতো। যখন আমার খুব মন খারাপ বা রাগ হতো , তার কন্ঠস্বর শুনলেই মন ভালো হয়ে যেতো। এভাবেই পরস্পরের প্রতি বোঝাপড়া বাড়তে থাকলো এবং চৌ হুইয়েরও পার্সনসের প্রতি ভালো লাগা শুরু হলো , চৌ হুই বলেন:

    তিনি খুব উষ্ণহৃদয়ের মানুষ । তাঁর মন শিশুদের মত সরল । যেমন , যদি কেউ শিশুদের সামনে সিগারেট খায় , আমরা হয়তো তাকে কোনো কিছু বলবো না । পার্সনস কিন্তু ঠিকই মানা করবেন । সোজাবলবেন , শিশুদের সামনে ধূমপান করো না ।

    ধীরে ধীরে পার্সনস ও চৌ হুই'র সম্পর্ক প্রেমে রূপ নিলো। একাকী চীনে পার্সনসের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল চীনা জীবনযাত্রার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো । পার্সনস ক্যারিয়ারের উন্নতির জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকেন । মন খারাপ হলেই সহমর্মী চৌ হুইর কথা মনে পড়ে তার । পরে পার্সনস পিপলস বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ছেড়ে দিয়ে শিশুদেরকে ইংরেজী ভাষা শেখানোর কাজ শুরু করেন । চৌ হুইর সহযোগিতায় পার্সনস অল্প সময়ের মধ্যে চীনের জীবন ও চাকরির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিলেন। পার্সনস চৌ হুইকে গান গেয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছেন :

    গানের কথা হল : তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করো কতটুকু আমি তোমাকে ভালোবাসি , ঘরের বাইরে গিয়ে আকাশের দিকে তাকাও , চাঁদ তোমাকে আমার মনের কথা বলবে ।

    পাঁচ বছরের প্রেমের পর পার্সনস টকটকে লাল গোলাপ একদিন চৌ হুইয়ের অফিসে হাজির হলেন । পার্সনস এরপর কি করলেন ?উত্তর জানতে আমরা তাদের কাছ থেকেই শুনি । পার্সনস বলেন

    সেদিন আমি চুল ছাটলাম , গোফ ফেলে দিয়ে ক্লিন শেভ করলাম এবং আনকোরা নতুন কাপড় পরলাম ।

    সে যেন এক নাটকের কাহিনী , পার্সনস আমার সামনে নতজানু হয়ে দাঁড়িয়ে এক হাতে ফুল , অন্য হাতে বিয়ের আংটি । একেবারে তরতাজা বিয়ের প্রস্তাব । পার্সনস আমাকে জিজ্ঞেস করলো , তুমি আমাকে বিয়ে করতে চাও ? আমি তখন বিশ্বাস করতে পারি না যে সে আমাকে বিয়ের কথা বলছে । তাই সে অনেক ক্ষণ ধরে নতজানু হয়ে থেকে আমাকে জিজ্ঞেস করতেই থাকলো । বললো অন্তত একথা বলো , আমাকে বিয়ে করতে চাও কি না ? আমি যখন দীর্ঘক্ষণ পর বললাম , হ্যাঁ চাই । তখন পার্সনস কেঁদে ফেলে । সেটা ছিল আনন্দের আবেগে বাঁধ ভাঙা কান্না ।

    পার্সনস মনে করেন , বিয়ে হল সারা জীবনের ব্যাপার । তাই বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলে তা মেনে চলতে হবে । তিনি বলেন , আমি সব সময় এ প্রতিশ্রুতি মেনে চলবো , আমি এক শো ভাগ তা পূরণ করবো ।