১ অক্টোবর পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে পরর্বতী মেয়াদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে। বতর্মান প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশারফ সহ পাঁচ জন প্রার্থী মনোনায়ন গৃহীত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, পারভেজ মোশারফের পুনরায় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টহিসেবে নির্বাচিত হওয়ার সম্ভবনা বেশী।
নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত এ তালিকায় অন্তর্ভূক্ত পাকিস্তানের সাবেক সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি ওয়াজিহুদ্দিন সুজাত হোসাইন, জনতা পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান আমিন ফাহিম, সিনেটের চেয়ারম্যান মোহম্মদ মিয়া সুমরু এবং সিন্দু প্রদেশের নাওয়াব সাহ অঞ্চলের প্রশাসক ফরিয়াল তালপুর ।
পারভেজ মোশারফ স্থল বাহিনীর স্টাফ প্রধানের পদে বহাল থেকে নতুন মেয়াদের প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন কী না , তা সাধারণ নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় একটি নিয়মিত আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। " প্রেসিডেন্ট সামরিক পদে বহাল থেকে আইন লঙ্ঘণ করছে " এ অভিযোগেকিছু দিন আগে বিরোধি দলের কয়েক জন নেতা পারভেজ মোশারফের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। এর পাশাপাশি তাঁরা সর্বোচ্চ আদালতকে পারভেজ মোশারফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের যোগ্যতা সম্পর্কে রায় দেয়ার দাবি জানান। ২৮ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে পারভেজ মোশারফের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ নাকচ করে দেয়া হয়েছে। এই রায়ে তাকে সামরিক পদে বহাল থেকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।
২৯ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন পারভেজ মোশারফ সহ ছ'জন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মনোয়নপত্র পরীক্ষা করে। তারা সবই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সবার মনোনয়নপত্রই গ্রহণ করা হয়েছে। এক খবরে প্রকাশ, পারভেজ মোশারফকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে সহায়তা করা ১৭টি মনোয়নপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। জাতীয় সংসদের স্পীকার চৌধুরি আমির হুসেইন ১ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে তার নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
আগামী ৬ অক্টোবর বতর্মান উচ্চ পরিষদ ও নিম্ন পরিষদ এবং চারটি প্রাদেশিক পর্যায়ের সংসদের ১১৭০জন সদস্য পাকিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করবেন। ক্ষমতাসীন পাটি মুসলিম লীগ এবং তার মিত্র দলের আসন ৫৫ শতাংশ। তারা সর্বসম্মতভাবেপারভেজ মোশারফকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে যে, পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নাকচ করার পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পারভেজ মোশারফের জয়লাভের সম্ভবনা বেশী। পারভেজ মোশারফ ছাড়া, প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর তালিকায় আরেকজন ক্ষমতাবান ব্যক্তিহলেন সর্বোচ্চ আদালতের সাবেক প্রধান বিচারপতি ওয়াজিহুদ্দিন আহমাদ এবং পাকিস্তানের জনতা পাটির ভাইস চেয়ারম্যান আমিন ফাহিম। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলেছেন, ওয়াজিহুদ্দিন আহমাদের রাজনৈতিক দলের ভিত্তি নেই। সুতরাং সংসদে তিনি সহজেই সংখ্যাগলিষ্ঠ সমর্থন পারবেন না। জনতা পাটির প্রার্থী সংসদের সকল বিরোধী পাটির সদস্যের সমর্থন পেলেও বতর্মানের শক্তি অনুযায়ী, পারভেজ মোশারফের জন্যে তা কোন প্রকারহুমকির সৃষ্টি করবে না।
তা সত্ত্বেও পাকিস্তানের বিরোধী পন্থীরা পারভেজ মোশারফকে স্থল বাহিনীর স্টাফপ্রধানের পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিরোধীতা করছে। পরভেজ মোশারফের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ নাকচ করার পর রাজধানী ইসলামাবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে।
বিরোধী দলগুলোর " বিভিন্ন পাটির গণতান্ত্রিক আন্দোলনহিসেবে " ২ অক্টোবর দলগত পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ৬ অক্টোবর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল কী রকম হবে তা জনসাধারণের প্রত্যাশার সারিতে রয়েছে।
|