v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-10-02 19:43:53    
ইন ছিং ও তাঁর গানগুলো

cri

    ইন ছিং চীনের একজন বিখ্যাত সুরকার। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি অনেক সেরা গানে সুর করেছেন, যেগুলোতে নতুন চীনের আধুনিক রুপের প্রতিফলন ঘটেছে। তাঁর গানগুলো ব্যাপক সমাদর পেয়েছে। এখন আপনারা শুনছেন শিল্পী চাং ইয়ের গাওয়া "নতুন যুগে প্রবেশ করা" নামে একটি গান। গানটির কথা লিখেছেন চিয়াং কাই রুন। সুর করেছেন ইন ছিং। এই গানটি ১৯৯০'এর দশকের। এটা হচ্ছে ইন ছিংয়ের সুরের বৈশিষ্ট্য প্রতিনিধিত্ব করে এমন একটি গান। গানে দেশকে সমৃদ্ধ করার জন্য চীনা জনগণের সাহস ও সদিচ্ছার প্রকাশ ঘটেছে। এই গানে বহু চীনা শ্রোতার মনে স্থায়ীভাবে ঠাই করে নিয়েছেন সুরকার ইন ছিং।

    ইন ছিং চীনের সেনাবাহিনীর একজন সুরকার। গত শতাব্দীর ৮০'র দশক থেকে সেনা বাহিনীর ওপর লেখা বহু গানে সুর করেছেন। তাঁর গানগুলোতে সৈনিকদের জীবনযাত্রা ও অনুভূতির অভিব্যক্তি আছে বলে অফিসার ও সৈনিকদের দারুণ পছন্দ। ১৯৯০'র দশক থেকে ইন ছিং এর রচিত গানগুলোর বিষয়বস্তু আরো ব্যাপক হয়েছে। তিনি গান ছাড়া, অপেরা ও সঙ্গীত-নৃত্য নাটক, সংগীত নাটক সব কিছুতেই সুরারোপ করেন এবং একাধিক বার জাতীয় পর্যায়ের পুরস্কারও পেয়েছেন। যুগোপযোগী আধুনিক চীনের চিত্র বর্ণিত হয়েছে এবং জাতীয় মর্ম ও মহা স্বদেশ বন্দনামূলক অনেক গানে তিনি সুর দিয়েছেন । তাঁর এসব গান চীনে ব্যাপক জনপ্রিয়।

    "উজ্জ্বল আলোয়" নামক গানটি হচ্ছে একটি জনপ্রিয় কোরাস। এ গানে ১৯৪৯ সালে গণ প্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে হেঁটে হেঁটে চীনা জনগণের সমৃদ্ধ ও উজ্জ্বল চীন নির্মাণের প্রক্রিয়া বর্ণনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও স্বদেশের প্রতি জনগণের ভালোবাসা প্রকাশিত হয়েছে। ইন ছিং বলেছেন, এই গানের সুর রচনার জন্য দীর্ঘ সময় লেগেছে। ২০০১ সালে তিনি গানের কথা পান। গানের কথাগুলো তাঁর মনের কথার সঙ্গে মিলে যায়। তিনি ভাবেন, গানটিকে কোরাসের আঙ্গিকে সুর করা উচিত। যাতে আরো বেশি লোক একসঙ্গে তা গাইতে পারেন। ইন ছিং বলেছেন, "আমি ভাবছিলাম, আমাদের দেশে কোরাস গান কম। আমি একটি জনপ্রিয় ও উঁচু মানের কোরাস গান করতে চাই। আমি এই গানটি পাওয়ার পর দেখলাম কথাগুলো তরতাজা ও সরল। তাই আমি এটিকে একটি কোরাস গান হিসেবে দাঁড় করিয়েছি।"

    এখন আপনারা কোরাস গান "উজ্জ্বল আলোয়" শুনছেন। গানের কথা এমন, "ছোট বেলায় দাদা আমাকে বলেন, পানি খাওয়ার সময় কুয়ার নির্মাতাকে ভুলবে না। কষ্টকর জীবন পার হওয়ার পর বুঝতে পেরেছি, কমিউনিস্ট পার্টি ছাড়া নতুন চীন হতো না। ছোট বেলায় শিক্ষক আমাকে 'একটি পাহাড়ী গান গেয়ে পার্টিকে শুনায়' গানটি শিখিয়েছেন। ঝড়ঝাপটা অতিক্রমের পর বুঝতে পেরেছি, কেবল কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে থাকলে নতুন চীন প্রতিষ্ঠা করা যায়। আমরা আধুনিক যুগের বসন্তকালের বাতাসে বিজয়ের গান গাই। আমরা উজ্জ্বল আলোয় কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে মহা চীন নির্মাণ করি।"

    গত শতাব্দীর ৮০'র দশক থেকে চীনা জনগণ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে সক্রিয়ভাবে অর্থনৈতিক নির্মাণকাজ শুরু করে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা সাফল্য অর্জন করে। এটা হচ্ছে সুরকারের সুরের সমৃদ্ধ উত্স। ২০০১ সালে ছিংহাই-তিব্বত রেলপথের ছিংহাইয়ের গেরমু থেকে তিব্বতের লাসাগামী অংশের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এই রেলপথের দৈর্ঘ্য ১১৪২ কিলোমিটার। ছিংহাই-তিব্বত রেলপথের নির্মাণ দেখে ইন ছিং এর সংগীত সৃষ্টি করার আগ্রহ জেগে ওঠে। তিনি বলেন, সেরা গান তৈরি করা হচ্ছে শিল্পীদের দায়িত্ব। তিনি লেখক ছুন ইউয়ানের সহযোগিতায় তিব্বতী জাতির বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে একটি সংগীত সৃষ্টি করেন। নাম "আকাশ পথ"।

    ২০০৬ সালের ১ জুলাই ছিংহাই-তিব্বত রেলপথ সুষ্ঠুভাবে চালু হয়। "আকাশ পথ" নামের এই গানটি সে সময় সবচেয়ে জনপ্রিয় গানে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় তিব্বতী জনগণ ছিংহাই-তিব্বত রেলপথকে অদ্ভুত আকাশ পথ বলেন। এই রেলপথ স্থানীয় জনগণের জীবনযাপনের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলেছে। গানের কথা এমন, "ভোরের বেলায় আমি সবুজ তৃণভূমিতে দাঁড়িয়ে বাজপাখিকে দেখি। বাজপাখি শান্তির মেঘের মতো নীল আকাশে ওড়ে। তারা তিব্বতীদের ছেলেমেয়ের জন্য সুখ বয়ে আনে। সন্ধ্যা বেলায় আমি উঁচু পাহাড়ে দাঁড়াই। আশা করি, রেলপথ আমার বাসায় পৌঁছবে। বিশাল ড্রাগণের মতো পাহাড় পেরিয়ে তুষার মালভূমির জন্য সুখ শান্তি বয়ে আনবে। সেটা একটি অদ্ভুত আকাশ পথ। মানবজাতির উষ্ণতা সীমান্ত এলাকায় পৌঁছে দেবে। এখন থেকে পাহাড় আর উঁচু হবে না। পথ আর দীর্ঘ নয়। বিভিন্ন জাতির ছেলেমেয়েরা একসঙ্গে মিলিত হবেন।"

    নতুন শতাব্দীতে প্রবেশের পর চীনা জনগণের জীবনযাপনের মান ধাপে ধাপে উঁচুতে উঠেছে। জনগণের রাজনীতি সচেতনতা দিন দিন বাড়ছে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও জনসাধারণের সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হয়েছে। ইন ছিং তা দেখে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও জনগণের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে প্রশংসা করা হয়েছে এমন একটি গান করতে চেয়েছেন। এই গানের নাম "দেশ"। সিয়াও কুয়াং এই গানের কথা লিখেছেন। ইন ছিং বলেছেন, "সিয়াং কুয়াং আমাদের পার্টি ও জনগণের সম্পর্ক নিয়ে 'দেশ' নামে একটি গান লিখেছেন। জনসাধারণের সুখী জীবনের জন্য দেশকে গড়ে তোলা। গানের কথা সাদামাটা ও আন্তরিক। কথা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে গানটি আমার মন জয় করে নেয়।"

    এখন আপনারা চীনের বিখ্যাত গায়িকা ফাং লি ইউয়ানের গাওয়া "দেশ" গানটি শুনছেন। এটা হচ্ছে একই নামের একটি নাটকের ও প্রধান গান। নাটকটিতে জনগণকে নিয়ে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নয়া চীন প্রতিষ্ঠার কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। গানের কথা এমন, "মানুষ হচ্ছে মাটি। মানুষ হচ্ছে আকাশ। মানুষ হচ্ছে কমিউনিস্ট পার্টির চিরকারের চিন্তাভাবনা। মানুষ হচ্ছে পাহাড়। মানুষ হচ্ছে সাগর। মানুষ হচ্ছে কমিউনিস্ট পার্টির প্রাণের উত্স।" (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)