১ অক্টোবর থেকে ৭ অক্টোবর হল চীনের জাতীয় দিবসের সোনালী সপ্তাহ। অধিকাংশ চীনা এ সময় ছুটি কাটায় । ছুটির সময় অনেক মানুষ বেড়াতে বাইরে চলে যায় । আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে তিব্বতে ভ্রমণের সময় স্বাস্থ্য ঠিক রাখার কয়েকটি কৌশলের কথা বলবো । চলুন তাহলে শুরু করা যাক আজকের অনুষ্ঠান।
সোনালী সপ্তাহে ভ্রমণ হচ্ছে বর্তমানে চীনা অধিবাসীদের প্রধান ও সবচেয়ে বড় বিনোদন । ভ্রমণে আনন্দ পেতে হলে স্বাস্থ্য ঠিক থাকা চাই । তিব্বত চীনের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত । এটি বিশ্বের বিখ্যাত মালভূমিগুলোর অন্যতম । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ও বিদেশী পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে এই তিব্বত । কিন্তু তিব্বতের বিশেষ প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে অনেকে সেখানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন । আর অসুস্থ হলেতো বেড়ানোর আনন্দই মাটি । অসুস্থতা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কি ? শুনুন তাহলে--
১. ভ্রমণের প্রথম তিন দিন মদ পান থেকে বিরত থাকা এবং ও ধূমপান না করা এবং স্বাভাবিকের তুলনায় একটু কম খাওয়া । তিব্বতে প্রথম গেলে সাধারণত প্রতিকূল পরিবেশে শরীরের খাপ খাইয়ে নেওয়ার সামর্থ্যের ওপর বড় ধরনের চাপ পড়ে । পাকস্থলীর পরিপাক ক্ষমতাও কিছুটা ধাক্কা খায় । মালভূমির অক্সিজেন স্বল্পতায় শরীরে হজমের উপাদানের পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে । এতে শরীরে ভিটামিনের চাহিদা বেড়ে যায় । তখন নরম ও সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়া নিরাপদ । যেমন নুডল ও সিদ্ধ ভাত এবং কম তেল ও বেশি আঁশযুক্ত সবজি ও ফল খাওয়া ভালো । তাছাড়া একবারে বেশি খাবার খাওয়া উচিত নয় । স্বাভাবিক মাত্রার ৭০ শতাংশ ভাত খাওয়া এ সময় ভালো। বিশেষ করে রাতের কম খাবার খাওয়া বাধ্যতামূলক । যাতে পাকস্থলী ও হৃতপিন্ডের ওপর কম চাপ পড়ে ।
মালভূমির আবহাওয়া অন্য জায়গার চেয়ে একটু শুষ্ক হওয়ায় ঘন ঘন তৃষ্ণার কারণে পানি বেশি পান করা ক্ষতির কারণ হতে পারে । অনেক পর্যটক অল্প সময়ের ভেতরে অনেক বেশি পানি খেয়ে ফেলেন । মালভূমির আবহাওয়ায় শরীর অভ্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত বেশি পানি খেলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে ।লবন ও পানি কম খাওয়া এবং মদ ও ধূমপান না করা মালভূমিতে আপনাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে ।
২.টম্যাটো ও বীনকার্ড মালভূমিতে অসুস্থতা ঠেকাতে বেশ কার্যকর ।
যেসব খাবার শরীরের জারণ প্রক্রিয়ার ওপর বাড়তি চাপ ফেলে না সুগুলো মালভূমিতে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে । টম্যাটো, কমলা, বীনকার্ড এবং ভিটামিন ই ও সিযুক্ত খাবার খাওয়া শরীরকে অক্সিজেন স্বল্পতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে । তিব্বত যাওয়ার ১০ দিন আগে থেকে প্রতিদিন তিব্বতের বিশেষ ওষুধ--গাডল খান, তা শরীরের কম অক্সিজেন ও ক্লান্তি প্রতিরোধে ইতিবাচক ভুমিকা পালন করবে ।
৩. শরীরের শক্তি বজায় রাখার জন্য মিষ্টি পাউরুটি ও মিষ্টি আলু খাওয়া ভালো ।
মালভূমিতে কম অক্সিজেন এবং শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে শরীরের শক্তির খরচ সমতলভূমির চেয়ে বেশি এবং ভিটামিন খরচের পরিমাণ ২ থেকে ৫ গুণেরও বেশি । এ কারণে মালভূমিতে যাওয়ার ২ বা ৩ দিন পর শরীর একটু খাপ খাইয়ে নিলেও বেশি খাবার খাওয়া উচিত নয় । জৈব খাবারই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য যা শরীরের শক্তি ক্ষয় ঠেকিয়ে রাখে ।
সুতরাং প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণে প্রোটিন , ফল ও সবজি খাওয়া উচিত । আর মনে রাখবেন মালভূমির আবহাওয়ার সঙ্গে শরীর খাপ খেয়ে গেলে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লিটার পানি খাবেন ।
|