এ সুন্দর ও চমত্কার জায়গা ২০০১ সালের আগে তেমন একটা জনপ্রিয় হয় নি । ২০০১ সালে চাঁদ হ্রদকে মরুভুমির পর্যটন স্থান হিসেবে উন্নত করা হয়েছে । এখানকার উন্নয়ন সবই প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণের ওপর নির্ভর করে । পর্যটন এলাকার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত, আমরা স্থানটিকে সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে অনেক গাছ লাগাই । হ্রদের পাশে প্রায় ৫০০ মিটার দীর্ঘ সবুজ গাছের লাইন সৃষ্টি করি এবং কাছাকাছি পুরানো গাছগুলোর যত্ন করি ।
গাছ লাগানোর পাশাপাশি জ্বালানী সম্পদের সাশ্রয় ও পরিবেশ সংরক্ষণ ক্ষেত্রে চাঁদ হ্রদের কর্মীরা অনেক কাজ করেছে । দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আরো বলেছেন, মানুষের সৃষ্টি করা আবর্জনাগুলো আমরা ধারণা অনুযায়ী হ্যানডেল করি । এর পাশাপাশি পেশাগত দুষণ রোধ পানি শোধনের ব্যবস্থা ও করেছি । দুষিত পানি তিন পর্যায়ের পরিচালনার মাধ্যমে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে । তা প্রধানত গাছগুলোর পানিতে পরিণত হয় । আমাদের হোটেলে কোনো প্রকার শ্যাম্পু, গোসলের লিকুইডসারুন নেই এবং প্রতিদিন পর্যটকের সংখ্যা ৩০০জনের মত হবে । এ পদ্ধতিতেও পরিবেশের ক্ষতিকর দিকটি কমানো যায় ।
চাঁদ হ্রদের সহা ব্যবস্থাপক সোং জুন আনহুই প্রদেশের অধিবাসী । ২০০১ সালে তিনি প্রাকৃতিক পর্যটন উন্নত করার ধারণায় চাঁদ হ্রদ খুঁজে বের করেছেন । তখন থেকেই চাঁদ হ্রদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে । তিনি বলেছেন, এ মরুভূমি তাঁকে অনেক জিনিস দেয় । তার ভেতর মানুষ ও প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সুষম থাকার চিন্তাভাবনার সৃষ্টি করে । তিনি আশা করেন, তার এ প্রচেষ্টার মাধ্যমে আরো বেশি লোকজন পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্বের কথা অনুধাবন করতে পারবে । তিনি বলেছেন, আসলে প্রথমেই আমি চাঁদ হ্রদকে একটি প্রাকৃতিক পর্যটনের উপমা হিসেবে সৃষ্টি করতে চাই । পর্যটকরা ভ্রমণ করার পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণের জ্ঞান অর্জনের পর, একজন পর্যটক থেকে একজন পরিবেশ সংরক্ষককে পরিণত হবে । রোডম্যাপ অনুযায়ী ভ্রমণের প্রক্রিয়ায় আমরা পরিবেশ সংরক্ষণের ধারণা নিয়ে আসবো ।
চাঁদ হ্রদের বিশেষ মনোহীরূপ বৃটেন, যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের দারুনভাবে আকৃষ্ট করে । জানা গেছে, চীনে দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা চাঁদ হ্রদ পরিদর্শন করেছেন । তারা মরুভুমি কিভাবে তৃণভুমিতে পরিণত হয় সে দৃশ্য দেখতে চায় । চাঁদ হ্রদের পর্যটন ভালভাবেই তাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে ।
রাতে স্থানীয় যুবকদের গিটারের সঙ্গে ' চাঁদের রাত' গানটি শুনে চাঁদ হ্রদের পর্যটনের কথা স্মরণ করে মনের ভেতর আনন্দের বন্যা বয়ে যায় । চীনের মরুভুমির বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন চাঁদ হ্রদ এলাকা পরিবেশ সংরক্ষণের মাইল ফলক হিসেবে আরো বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে । তা শুধু মরুভুমির একটি পর্যটন স্থানই নয়, তা পরিবেশ সংরক্ষণের দৃষ্টিকেও শানিত করবে ।
|