v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-09-24 21:11:07    
প্রাচ্যের ক্যামব্রিজ---যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়

cri
     ১৮৯৭ সালে যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এ বছর এই বিশ্ববিদ্যালয়েরশততম বাষির্কী। যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় চীনের সুদীর্ঘ ইতিহাসসম্পন্ন শহর , বিশ্ববিখ্যাত পযর্টন শহর হাংযৌতে অবস্থিত। শতবর্ষের উন্নয়নের পর যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় এখন চীনের একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবং বিশ্বের একটি অপেক্ষাকৃত প্রভাবশালী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। ব্রিটেনের রাজকীয় সমিতির সদস্য , বিখ্যাত জীববিজ্ঞানী লি ইয়া সে (Dr.Joseph. Needham) এক সময়ে যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়কে " প্রাচ্যের ক্যামব্রিজ " বলে আখ্যায়িত করতেন।

    সাম্প্রতিকবছরগুলোতে চীনের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ও বৈদেশিক বিনিময় ও সহযোগিতার উপর গুরুত্ব আরোপ করে এসেছে এবং বিদেশী শিক্ষাথীর্দের আকষর্ণের জন্য যথাসাধ্য প্রচেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে। এ সব ক্ষেত্রে লক্ষণীয় সাফল্যও অজির্ত হয়েছে। যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে বিদেশী শিক্ষাথীর্দের আকষর্ণ করেছে এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন কেমন চলছে? সে সব প্রশ্ন নিয়ে আমরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক দিয়েন জিয়েন মিনের সাক্ষাতকার নিয়েছি। তিনি প্রথমে যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে কিছু বণর্না দিয়েছেন। তিনি বললেন---

    যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় একটি বহুমুখী বিশ্ববিদ্যালয়। এটা তার বৈশিষ্ট্য। ১৯৯৮ সালে পুরাতন যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়, হাংযৌ বিশ্ববিদ্যালয়, যেজিয়াং কৃষি ইনস্টিটিউট এবং যেজিয়াং মেডিক্যাল কলেজ সংযুক্ত হয়ে বতর্মান যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। আকারের দিক থেকে এবং বিষয়ের দিক থেকে সারা চীনের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান এখন প্রথম সারিতে রয়েছে। উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর চীনের যাচাই-এর মানদন্ড অনুযায়ী, একটি যোগ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত ১২টি বড় বিভাগ থাকতে হয়। বতর্মানে যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ে সামরিক বিষয় ছাড়া আরো ১১টি বিষয় আছে। সুতরাং এ কথা বলা যায় যে, যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় পুরোপুরি একটি বহুমুখী বিষয়সম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। সারা চীনে যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেশী নেই।

    তিনি আরও ব্যাখ্যা করে বলেছেন, একটি বিশ্ব মানসম্পন্ন এবং আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় সক্রিয়ভাবে বিশ্বের বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে চলেছে। সম্প্রতি যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যাল বিশ্বের ২৬টি দেশ ও অঞ্চলের একশোরও বেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। সাম্প্রতিক বছর গুলোতে এ বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভর্তির উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অধিক থেকে অধিকতর সংখ্যক বিদেশী শিক্ষার্থীরা যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে এসেছেন। যারা চীনে পড়াশুনা করতে আসে তাদের মধ্যে এখন প্রথমে যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়কে বাছাই করার সংখ্যা কম নয়। তিনি বললেন,

    গত কয়েক বছর ধরে , বিদেশী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে যিজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য সাফল্য অজর্ন করেছে। ১৯৯৮ সালে যখন চারটি বিশ্ববিদ্যালয় সংযুক্ত হয় তখন মাত্র ৫০০জন বিদেশী ছাত্র-ছাত্রী ছিলেন। তারা ৩০টিরও বেশী দেশ থেকে এসেছিলেন। গত বছর অথার্ত ২০০৬ সালে বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা দু' হাজার সাত শোরও বেশী। তারা ১২০টিরও বেশী দেশ ও অঞ্চল থেকে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই এশীয় দেশগুলোর ছাত্র-ছাত্রী।

     সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরও বেশী বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের আকষর্ণের জন্য যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকটি নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং নতুন লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারন করেছে। এ প্রসঙ্গে পরিচালক ----ব্যাখ্যা করে বলেছেন,

     আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য হল: বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মানসম্পন্ন একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ো তোলা। তা ছাড়া , নিয়মিত বিদেশের নাম-করা বিশ্ববিদ্যালয়সমুহের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ বজায় রাখাও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগ। এই লক্ষ্য বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরানো কাঠামো পুনরুদ্ধার হবে। যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় যাতে বিশ্বের একটি প্রভাবশালী বিশ্ববিদ্যালয়হিসেবে গড়ে ওঠে সেই জন্য এ শতাব্দীর শুরুতেই ধারাবাহিক নতুন নতুন পদক্ষেপগুলো নিধারির্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়গুলোকে বিশ্ব মানে উন্নীত করার জন্য , শিক্ষকদের যোগ্যতা বিশ্ব মানে উন্নীত করার জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবভাবে সংস্কার চালিয়ে এসেছে। সুতারাং আন্তজার্তিক শিক্ষাথীর্দের শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে।

     পরিচালক--- বলেছেন, যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার বিষয় সর্ম্পূএবং শ্রেষ্ঠ পরিবেশ ছাড়াও এর সুব্যবস্থাপনাও বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের আকষর্ণের আরেকটি কারণ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন,

      বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আমরা যথাযথ সুব্যবস্থাপনা চালু করেছি। আমরা তাদের জন্য চীনা ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার ব্যবস্থা নিয়েছি। তা ছাড়া, ছাত্রাবাসে আমরা তাদের জন্য আরামদপ্রিয় পরিবেশের ব্যবস্থা করেছি। চীনের সমাজ ও সংস্কৃতির ওপর খবরাখবর জানাতে আমরা মাঝে মাঝে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে পরিদশর্নের ব্যবস্থা নিয়েছি। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয় যে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা খুব দায়িত্বশীল ও কমর্ঠ । তাঁরা খুব মন দিয়ে শিক্ষাদান করেন। যদি কোন বিদেশী ছাত্র বা ছাত্রী পড়াশুনায় পিছিয়ে পড়ে, তাহলে শিক্ষকরা এককভাবে তাকে শিক্ষাদানও করেন। এ জন্য বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীরা খুব কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

     লামেন একজন কেনিয়ার ছাত্র। ২০০৪ সালে তার এম এ কোর্স শেষ করে স্বদেশে ফিরে যান। পি এইচ ডি করার জন্য তিনি ২০০৫ সালে আবার যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পরিবেশ সংরক্ষণ তাঁর পি এজ ডির কোর্স। এই আফ্রিকান যুবক যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়কে খুব পছন্দ করেন। তার বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বললেন,

      সাম্প্রতিক বছরগুলোতেহাংযৌ শহরে বিরাট পরিবর্তন ঘটেছে। এ শহর আরও সুন্দর হয়ে উঠেছে। যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় একটি চমত্কার বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে শিক্ষার সব বিষয় আছে এবং যোগ্যশিক্ষকদের সংখ্যাও কম নয়। বিদেশী শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ব্যবহার খুবই ভাল। তাঁরা মন দিয়ে শিক্ষাদান করেন। তা ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশের পরিবেশও সুন্দর। এ সুন্দর পরিবেশে পড়াশুনা করলে মানুষের মন সতেজ হয়ে যায়। চীনের অন্যান্য জায়গার মতো এ স্থান অত্যন্ত নিরাপদ। এক কথায় আমি হাংযৌ ও যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়কে ভালবাসি।

     শ্রোতা বন্ধুরা, যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের ঠিকানা হলো www.zju.edu.cn আপনারা তাদের ওয়েবসাইট থেকে আরও বেশি তথ্য পাবেন। আচ্ছা, আজকের " আমার স্বপ্ন আমার শিক্ষা" অনুষ্ঠান এখানেই শেষ হল। আজকের প্রশ্ন হচ্ছে, যেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় কোন সালে প্রতিষ্ঠিত হয়? আমাদের ওয়েবসাইটেও এই প্রশ্ন পাবেন। আগামী সপ্তাহের অনুষ্ঠানে আপনারা পেয়ে যাবেন সাংহাই-এর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু তথ্য।