v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-09-21 21:04:07    
রাইসের ফিলিস্তিন ও ইসরাইল সফর নিষ্ফল

cri

    মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কনডোলিত্সা রাইস ২০ সেপ্টেম্বর ইসরাইল ও ফিলিস্তিন তাঁর সংক্ষিপত সফর শেষ করেছেন। এ বছরে তিনি ষষ্ঠবারের মতো এই দেশ দুটি সফর করলেন।

    ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে পৌঁছে পর দিন বিকালে রাইস জেরুজালেম ত্যাগ করেন। তিনি ধারাবাহিকভাবে ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিপি লিভনি, উপ-প্রধানমন্ত্রী হায়েম রামোন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইহুদ বারাক, প্রধানমন্ত্রী ইহুদ ওলমার্ট, ফিলিস্তিনের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী সালাম ফায়াদ, প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস প্রমুখ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বেশ কয়েক বার প্রেস ব্রিফিংয়ে কথা বলেন। তবে তাঁর এই সফরের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, প্রেস ব্রিফিংয়ে তাঁর কিছু ইতিবাচক কথা ছাড়া রাইসের এবারের সফরে কোনো লক্ষণীয় সালফ্য নেই।

    প্রথমেই , তিনি ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে শান্তি আলোচনার মৌলিক মতভেদের দিকগুলো এড়িয়ে গেছেন।

    সবাই জানেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাবলিউ বুশ এ বছরের নভেম্বর মাসে মধ্য প্রাচ্য সমস্যা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব করেছেন। এ বিষয়ে ফিলিস্তিন ও ইসরাইল উভয়েই সাড়া দিয়েছে। দু'পক্ষের নেতারা ইতোমধ্যে এ নিয়ে বেশ কয়েক দফা আলোচনা করেছেন।

    কিন্তু সম্মেলনে কাঙ্ক্ষিত চুক্তির ব্যাপারে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে বিরাট মতভেদ রয়ে গেছে। ওলমার্ট মনে করেন, দু'পক্ষের মধ্যে মৌলিক নীতি সংক্রান্ত একটি বিবৃতি প্রকাশকে লক্ষ্য হিসেবে নেয়া যায়। কিন্তু আব্বাস আরও ফলপ্রসূ লক্ষ্য ঠিক করতে চান। তিনি একটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ চুক্তির কাঠামো তৈরির অনুরোধ জানিয়েছেন। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে ফিলিস্তিনের চূড়ান্ত সীমারেখা, জেরুজালেমের মর্যাদা নির্ধারণ ও ফিলিস্তিনের শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তন অধিকারসহ কেন্দ্রীয় সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সময়সূচী ঠিক করা।

    রাইস এবারের সফরে এই মূল মতভেদটিকেই এড়িয়ে গেছেন। তিনি বলেন, চুক্তিটি সুনির্দিষ্ট বা ব্যাপক যাই হোক, এর ওপর বেশি গুরুত্ব দিলে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ মনোযোগ দিয়ে কাজটা চালাতে পারবে না। বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো মধ্য প্রাচ্য সমস্যা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আগে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের পক্ষ থেকে চুক্তির একটি খসড়া দলিল তৈরি করার জন্য চেষ্টা চালানো। এই খসড়ার বৈশিষ্ট্য যাই হোক না কেন, ভবিষ্যতে দু'পক্ষের মধ্যে যত শিগগির সম্ভব ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার ভিত্তি হিসেবে তা কাজে লাগবে। রাইসের এমন অস্পষ্ট কথা ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মতভেদ কমানোর ক্ষেত্রে আদৌ সহায়ক হবে না।

    দ্বিতীয়তঃ রাইস মধ্য প্রাচ্যের আরব দেশগুলোর দৃষ্টি-আকর্ষণ করার মতো সমস্যার কোনো জবাব দেন নি।

    এখন মধ্য প্রাচ্য সমস্যা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের আর মাত্র দু'মাস বাকি আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সম্মেলনের কর্মসূচী, কে কে উপস্থিত থাকবেন, এমনকি সম্মেলনের সুনির্দিষ্ট তারিখও ঠিক হয় নি। ফলে এই সম্মেলন ফিলিস্তিন ও ইসরাইল তথা মধ্য প্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য সহায়ক হবে কিনা, তা নিয়ে বড় সংশয় রয়েছে। মিশর, সৌদি আরবসহ অন্যান্য আরব দেশগুলো এ নিয়ে উদ্বিগ্ন । এর আগে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স সৌদ আল-ফয়সাল সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যদি সম্মেলনে কোন বাস্তব সমস্যা নিয়ে আলোচনা না হয়, তাহলে সৌদি আরব এতে অংশ নেবে না। মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারক উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ঠিক মত প্রস্তুতিমূলক কাজ না করলে সম্মেলনটি কোন ফলাফল বয়ে আনবে না। আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকের পর রাইস বলেছেন, মধ্য প্রাচ্য সমস্যা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে মারগর্ভ বিষয়বস্তু অন্তর্ভূক্ত হতে হবে। তিনি বলেছেন, সম্মেলনটির ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ত্বরান্বিত করার জন্য ভূমিকা পালন করা উচিত।

    আসলে রাইসের কথা থেকে বোঝা যায়, তিনি নিজেই ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে শান্তি আলোচনার মাধ্যমে পরস্পরের মৌলিক মতভেদ দূর করার বিষয়ে আগ্রহী নন। যে কারণে তিনি কেবল এটুকুই বলেছেন যে, "মধ্য প্রাচ্য সমস্যা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক কাজে অনেক বাধাবিধ্নের মুখে পড়ছে। কিন্তু ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যকার আলোচনার পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ও আন্তরিক। এটা দু'পক্ষের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য সহায়ক হবে।" এ থেকে বোঝা যায়, তাঁর এই ফিলিস্তিন ও ইসরাইল সফরের অভিষ্ট লক্ষ্য পূরণ হয় নি। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)