v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-09-11 16:01:45    
তিব্বতের ভ্রমণ ২--লাসার লুওবুলিনকা পার্ক ও চেবাং মন্দির

cri

    ১৪ আগস্ট সারা রাত নিঃশ্বাস সমস্যার কারণে ঘুম ঠিক মত হয় নি । সকাল ৮টায় আমি বিছানা ছেড়ে দেই । ভোরবেলা থেকে বাইরে বৃষ্টি শুরু হয় । বৃষ্টির শব্দের সঙ্গে জেগে উঠার আগে কয়েক ঘন্টা মিষ্টি ঘুম হয়েছে । নাস্তা খাওয়ার পর আমরা সবাই একসাথে আলোচনা করে আগামী কয়েক দিনের সময়সূচী নির্ধারণ করি ।আলোচনা শেষে হোটেলের কাছাকাছি একটি সিছুয়ান বিশিষ্ট্যসম্পন্ন রেস্টুরেন্ট গিয়ে দুপুরের খাবার খাই । তারপর আমরা হেঁটে হেঁটে দালাইলামার গ্রীষ্মকালীণ প্রাসাদ--লুওবুলিনখা পার্কে যাই । লিনখা তিব্বতীয় ভাষার অর্থ হচ্ছে প্রাসাদ। লুওবুলিখা পার্কের বিশেষ তিব্বতীয় বৌদ্ধ ধর্মীয় বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে আমাদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে । স্থানীয় তিব্বতী লোকজন ছোট ছোট গালিচা নিয়ে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে প্রাসাদের তৃণভূমিতে বসে তাস খেলেন । তা তাদের জন্য অনেক আরামদায়ক ।

     লাসার সুয়েতুন উত্সব উদযাপন করার জন্য অনেক লোকজন ছুটি কাটান এবং লাসার উপকন্ঠ এলাকা থেকে আসা তিব্বতীয় নাটকের অভিনেত্রীরা লুওবুলিনখায় গিয়ে তিব্বতী দর্শকদের জন্য ঐতিহ্যিক তিব্বতী নাটক প্রদর্শন করেন । জানা গেছে, তিব্বতী নাটকের পরিবেশনা প্রতি বছর প্রায় একই ধরনের থাকে এবং অভিনেতা ও অভিনেত্রীরাও থাকে একই দলের । তাঁরা তিব্বতীয় নাটক পছন্দ করেন এবং নিজেদের প্রয়োজনীয় পোশাক -পরিচ্ছদ প্রস্তুতি নেন । বৃদ্ধ লোকজন তিব্বতীয় নাটক দেখতে খুবই পছন্দ করেন । অধিকাংশ তিব্বতীয় যুবক তিব্বতীয় নাটকের অর্থ সঠিকভাবে বুঝতে পারে না । তাঁরা আনন্দিত পরিবেশে অংশ নেয়া এবং পরিবারের বয়সী লোকদের সঙ্গে আসার কারণে তিব্বতীয় নাটক দেখেন । আমাদের সাক্ষাত্কার এখান থেকেই শুরু । কিন্তু অনেক তিব্বতী লোকজন শুধু তিব্বতী ভাষা বলতে পারেন । এ কারণে আমাদেরকে যোগাযোগ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় ।

    আমরা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে চার পাশে চীনা ভাষা বলতে পারা তিব্বতী লোকজন খুঁজে বের করতে চেষ্টা করি । পরে আমরা তিন জন লুওবুলিনখা পার্কে প্রবেশ করি, টিকিট দাম ৮০ ইউয়ান । প্রাসাদের ভিতরে অনেক বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা আন্তরিকভাবে পুজা করেন । সেখানে টুপি পরে পুজা করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ । লুওবুলিখা প্রাসাদ প্রদর্শন করার পর আমরা লাসার বৃহত্তম মন্দির --চেবাং মন্দিরে যাই । এ মন্দির পাহাড়ের কাছে নির্মিত হওয়ায় এবং মন্দিরের আকার দেখতে খোলসের মতো হওয়ার কারণে মন্দিরটিকে চেবাং মন্দির বলে ডাকা হয় । চেবাং চীনা ভাষার অর্থ খোলস । মন্দিরে পাহাড়ের সুয়েতুন উত্সবের প্রথম দিন বৌদ্ধ ধর্মীয় ছবি --তাংকার প্রদর্শনের যন্ত্রপাতি রেখেছে । আসলে সুয়েতুন উত্সব হচ্ছে তিব্বতীয় বৌদ্ধ ধর্মের একটি দিবস । এ উত্সব এক সপ্তাহ ধরে চলে । প্রথম দিন সকালে প্রথম সুর্যালোক উঠার সময় চেবাং মন্দিরের বৃহত্তম তাংকার ছবি পাহাড়ে প্রদর্শন করা হয়, অনেক বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পাহাড়ের নিচে মা হতে থাকে এবং তাংকার ছবির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য পুজা করে । উত্সবের অন্যান্য দিন লুওবুলিনখাসহ লাসার বিভিন্ন অঞ্চলে তিব্বতীয় নাটক পরিবেশন করে উত্সব উদযাপন করা হয় ।

    বিকেলে চেবাং মন্দিরের পর্যটক সংখ্যা বেশি থাকে না । আমরা আন্তরিকভাবে মন্দিরের বিভিন্ন ঘর ও ধর্মীয় মূর্তি পরিদর্শনকরি । সিঁড়ি আরোহণের সময় অনেকে ক্লান্ত হয়ে পড়েন এবং পুনরায় শ্বাসকষ্ট ও মাথা ব্যথা শুরু হয় । মন্দির পরিদর্শন করার সময় আমরা অনেক সন্ন্যাসীদের আলোচনার শব্দ শুনি । আমাদের গাইড লুওসোং পরিচয় করিয়ে বলেন যে, বৌদ্ধ ধর্মের সত্যতা গবেষণা করার জন্য সন্ন্যাসীরা নিয়মিতভাবে পরস্পর আলোচনা করেন । মাঝে মাঝে কয়েক জন সন্ন্যাসী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আলোচিত বিষয় নিয়ে অন্য সন্ন্যাসীদের সঙ্গে আলোচনা করেন । বিকেল ৪টায় চেবাং মন্দির বন্ধ হয়ে যায় । পরিদর্শন শেষে আমরা মন্দিরের বাইরে ছবি তুলি এবং তিব্বতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে তিব্বতের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ছোট মেলা ও চুড়ি কিনেছি । দাম বেশি না, পেইচিংয়ের চেয়ে তা অনেক সস্তা । আমরা মনে করি, তিব্বতের মেলা খুবই সুন্দর এবং তার ধর্মীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে । আজকের ভ্রমণ এখানে শেষ হলো ।