টি পি ও অর্থাত্ এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের শহরগুলোর পর্যটন উন্নয়ন সংস্থার তৃতীয় পূর্ণাঙ্গসম্মেলন ৩০ আগষ্ট চীনের কুয়াংচৌ শহরে শেষ হয়েছে । এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের ৯টি দেশের ৪০টিরও বেশি শহরের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে এশিয়া ও ফ্যাসিফিক অঞ্চলের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন । প্রতিনিধিরা বলেছেন , পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন তরান্বিত করা এবং এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য টি পি ও'র সদস্যদেশগুলোকে পারস্পরিক বিনিময় ও সহযোগিতা বাড়াতে হবে ।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের পর্যটন শিল্পের দ্রুত প্রসার হয়েছে । এ অঞ্চল সারা বিশ্বের পর্যটকদের পছন্দসই স্থানে পরিণত হয়েছে । পর্যটন ক্ষেত্রেএশিয়া ও ফ্যাসিফিক অঞ্চলের শহরগুলোর বিনিময় ও সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য ২০০২ সালে টি পি ও প্রতিষ্ঠিত হয় । গত পাঁচ বছরে এ অঞ্চলের বারোটি দেশের ৫৯টি শহর এই সংস্থার সদস্য হয়েছে । টি পি ওর সার্বিক সম্মেলন প্রতি দু বছর অন্তরঅনুষ্ঠিত হয় ।
এবার চীনের কুয়াং চৌ শহরে অনুষ্ঠিত টি পি ওর তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ সম্মেলনে এ অঞ্চলের শহরগুলোর পর্যটন সংক্রান্ত ফোরাম , মেয়রদের গোল টেবিল অধিবেশন এবং পর্যটন ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে । এ সম্মেলন প্রতিনিধিদের বিনিময় ও সহযোগিতার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে তাদের নিজ নিজ শহরের সৌন্দর্য্য প্রদর্শনের জানালা খুলে দিয়েছে । কুয়াং চৌ শহরের মেয়র চান কুয়াং নিন বলেছেন , টি পি ওর তৃতীয় পূর্ণাঙ্গসম্মেলন এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের শহরগুলোর মধ্যে পর্যটন শিল্প উন্নয়ন , তথ্য বিনিময় এবং সহযোগিতা বাড়ানোর এক মহাসম্মিলন ।
চান কুয়ান নিন বলেছেন , কুয়াং চৌ শহরে অনুষ্ঠিত টি পি ওর তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ সম্মেলন কুয়াং চৌ শহরের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে নতুন সুযোগ এনে দিয়েছে । আমরা টি পি ওর সদস্য শহরগুলোর সঙ্গে বিনিময় ও সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করবো , উন্নয়নের পরিবেশ উন্নত করবো , পর্যটকদের উচ্চমানের পরিসেবা দেয়ার চেষ্টা করবো এবং পারস্পরিক কল্যাণের ভিত্তিতে অভিন্ন উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালাবো ।
চীনের শহরগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সামর্থ্যের দিক থেকে কুয়াং চৌ শহর তৃতীয় স্থানে রয়েছে । কুয়াং চৌ একটি সুন্দর পর্যটন শহরও বটে । কুয়াং চৌ শহরের ইতিহাস ২ হাজার ২ শ' বছরের পুরনো । কুয়াং চৌ শহরের সংস্কৃতি , বৈশিষ্ট্যময় রীতিনীতি , শহরের সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং চীনা ও পাশ্চাত্য সংস্কৃতির ব্যাপক বিনিময় পর্যটকদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হওয়াই স্বাভাবিক । কুয়াং চৌ শহর বিশ্বের ১৯টি শহরের সঙ্গে মৈত্রী শহরের সম্পর্ক এবং ১৫টি শহরের সঙ্গে বিনিময় এমন যেও সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপন করেছে ।
টি পি ওর পূর্ণাঙ্গ সম্মেলন হল এ সংস্থার সবচেয়ে বড় সম্মেলন বলে সদস্যদেশগুলো এ সম্মেলনকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে এবং এই সম্মেলনের সুযোগে অন্য সদস্য শহরের সঙ্গে পারস্পরিক সমঝোতা ও সহযোগিতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালিয়েছে । ১৯৭৯ সালে জাপানের ফুকুওকা শহর কুয়াং চৌ শহরের সঙ্গে মৈত্রী শহরের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে । এবার হল ফুকুওকা শহরের মেয়র হিরোশি ইয়োশিদা'র দ্বিতীয়বার কুয়াং চৌ শহর সফর । তিনি মনে করেন , এ সম্মেলন এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের শহরগুলোর পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন তরান্বিত করেছে । তিনি বলেছেন , টি পি ওর সম্মেলন এ অঞ্চলের শহরগুলোর পর্যটন শিল্পের মান উন্নত করতে সাহায্য করেছে । এ সম্মেলনের সুযোগে বিভিন্ন শহরের মেয়র পর্যটন শিল্পের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে পেরেছেন । আমি এবার বিভিন্ন দেশের মেয়রদের সঙ্গে দেখা করেছি এবং তাদের সঙ্গে পর্যটন শিল্প উন্নয়নের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি । দেশে ফিরে যাওয়ার পর আমি আমার কুয়াং চৌ সফরের অভিজ্ঞতা ফুকুওকা শহরের নাগরিক ও আমার সহকর্মীদের জানাবো । এর পাশাপাশি আমি সম্মেলন চলাকালে ফুকুওকা শহরের বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্য্যও বর্ণনা করেছি । জানা গেছে , এ সম্মেলনে সদস্য শহরের মধ্যে অনেক পর্যটন সহযোগিতা সংক্রান্তচুক্তি স্বাক্ষরিতহয়েছে। ( ফোং সিউ ছিয়েন )
|