v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-08-31 17:31:53    
দক্ষিণ কোরিয়ার জিম্মী সংকট কী কারণে সমাধান হয়ে গেছে

cri
    আফগানিস্তানের তালিবান জংগী সংস্থা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কোরিয়ার সর্বশেষ ৭জন জিম্মীকে মুক্তি দিয়েছে । এ পর্যন্ত তালিবানের হাতে আটক থাকা ২১জন জিম্মীর সবাই মুক্তি পেয়েছেন । এতে প্রতীয়মাণ হয় যে , এক মাসেরও বেশি সময় ধরে স্থায়ী দক্ষিণ কোরিয়ার জিম্মী সংকটের চূড়ান্ত সমাধান হয়ে গেছে ।

    এবারের জিম্মী সংকট ৪২ দিন স্থায়ী ছিল । ২৩জন লোক জিম্মী হয়েছিলেন । এ সময়ের মধ্যে দুজন পুরুষকে শোচনীয়ভাবে হত্যা করা হয় । পরবর্তীকালে সংকট নিরসনের প্রক্রিয়া বারবার বাধাগ্রস্ত হয় । বিশ্লেষকরা মনে করেন যে , প্রধানত সংশ্লিষ্ট মহলের নিরলস প্রচেষ্টার ফলেই শেষ পর্যন্ত এবারের জিম্মী সংকটের সুরাহা হয়ে গেছে ।

    দক্ষিণ কোরীয় সরকারই এবারের সংকট নিরসনের ব্যাপারে সবচেয়ে বিরাট ভূমিকা পালন করেছে । দক্ষিণ কোরিয়ার গণ মাধ্যমগুলো বলেছে , তালিবানের সংগে চুক্তি স্বাক্ষর করে সাফল্যের সংগে জিম্মীদের উদ্ধার করা দক্ষিণ কোরীয় সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সাফল্য । জিম্মী সংকট ঘটার গোড়ার দিক থেকে এর চূড়ান্ত সমাধান পর্যন্ত দক্ষিণ কোরীয় সরকার সবসময় ইতিবাচক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে এবং তালিবান , যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তানের সংগে এবং আফগানিস্তানে প্রভাবশালী মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের সংগে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নিয়েছে । দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট রোহ মু হিয়ুন সরকারের প্রতি জিম্মীদের উদ্ধারের জন্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালেনোর অনুরোধ জানিয়েছেন এবং মধ্যস্থাতা ও আফগান পক্ষের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার জন্যে নিজের বিশেষদূত আফগানিস্তানে পাঠিয়েছেন । জনমত লক্ষ্য করেছে যে , তালিবানের প্রতিনিধিদের সংগে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারী প্রতিনিধিদলের মুখোমুখি আলোচনার পরই কেবল তালিবান দুবার জিম্মীদের মুক্তি দেয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে । এতে প্রমাণিত হয়েছে যে , উভয় পক্ষের কয়েকটি মুখোমুখি আলোচনা চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর এবং জিম্মী সংকট নিরসনের ক্ষেত্রে নিয়ামক ভূমিকা পালন করেছে ।

    বিশ্লেষকরা মনে করেন , বহুলাংশে দেশের জনসাধারণের বিরাট চাপে পড়ে দক্ষিণ কোরীয় সরকার জিম্মীদের উদ্ধারের জন্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছে ।

বস্তুত এক সময় দক্ষিণ কোরিয়ার জিম্মীদের ভাগ্য যেমন তাদের আপনজনদের মন উদ্বেলিত করে তুলেছে , তেমনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিবিড় দৃষ্টিও আকৃষ্ট করেছে । ২৮ আগস্ট তালিবান ১৯জন জিম্মীকে মুক্তি দেয়ার ব্যাপারে রাজী হওয়ার সংবাদ পাওয়ার পর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ভবনের মুখপাত্র এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন , জিম্মীদের উদ্ধারের কাজে সাহায্য দেয়ার জন্যে দক্ষিণ কোরীয় সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছে ।

    বিশ্লেষকরা মনে করেন , তালিবানের দক্ষিণ কোরিয়ার জিম্মীদের অপহরণের লক্ষ্য ছিল নিজেদের প্রভাব বিস্তার করা এবং আটক তালিবানদের মুক্তি দেয়ার ব্যাপারে আফগান সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা । তবে আফগান সরকার এ সমস্যায় সবসময় অনমনীয় মনোভাবে পোষণ করে আসছে এবং তালিবানের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে নি ।

    বিশ্লেষকরা আরো মনে করেন যে , এবারের জিম্মী সংকটে তালিবান যদিও আটক তালিবানদের মুক্তি দেয়ার ব্যাপারে আফগান সরকারকে বাধ্য করতে পারে নি , তবুও রাজসৈতিক ক্ষেত্রে সে কিছুটা লাভবান হয়েছে । এবারের সংকটে প্রমাণিত হয়েছে যে ,সে বিদেশী সরকারের সংগে সংলাপ চালাতে সক্ষম । এতে যুক্তরাষ্ট্র অসন্তোস প্রকাশ করেছে । অথচ আফগান কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে একটু চিন্তিত যে , ভবিষ্যতে তালিবান খুব সম্ভবত আরো বেশি জিম্মীকে অপহরণ করে তাদের রাজনৈতিক প্রভাব জোরদার করবে । এটি আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির স্থিতিশীলতার পক্ষেও হিতকর হবে না ।