প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা ভালো আছেন! এখন আপনারা শুনছেন 'চলুন বেড়িয়ে আসি' অনুষ্ঠানটি। আমি আপনাদের বন্ধু খোং চিয়া চিয়া এবং আমার সঙ্গে রয়েছেন আমার সহকর্মী আবাম ছালাউদ্দিন।
কেমন আছেন বন্ধুরা! আমি আবাম ছালাউদ্দিন। খোং চিয়া চিয়া'র সঙ্গে আজকের 'চলুন বেড়িয়ে আসি' অনুষ্ঠানটি শুরুতেই আপনাদের জানাচ্ছি আমাদের অকৃত্তিম শুভেচ্ছা।
বন্ধুরা, আর লিয়ান হাও টে'র কথা বললে আপনারা কী চিন্তা করবেন?
আর লিয়ান হাও টে হচ্ছে চীন থেকে মঙ্গোলিয়া পর্যন্ত রেল পথের একমাত্র বন্দর। প্রথমেই সেখানকার দ্রুত পরিবর্তিত সীমান্ত বাণিজ্য এবং তার বিশেষ বুনিয়াদী গঠন আমার মনে পড়ে।
আপনি ঠিক বলেছেন। আর লিয়ান হাও টে হচ্ছে একটি বিশেষ সীমান্ত শহর। কিন্তু বর্তমানে আর লিয়ান হাও টে সমৃদ্ধ পর্যটন সম্পদের কারণে একটি নতুন ও সুন্দর শহরে পরিণত হয়েছে।
পর্যটন শহর? তার কী বৈশিষ্ট্য পর্যটন প্রকল্পে রয়েছে?
সবচেয়ে বিশেষভাবে তার 'অতিকায় সরীসৃপ' সদৃশ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পর্যটনের একমাত্র কারণ। স্থানটিকে 'অতিকায় সরীসৃপের জন্মের শহর' বলেও অভিহিত করা হয়।
অতিকায় সরীসৃপ? শুনতে খুব অদ্ভূত্, তাইনা? তাহলে আর লিয়ান হাউ টে কে কেন 'অতিকায় সরীসৃপের জন্ম শহর' বলে অভিহিত করা হয়?
আপনি জানেন, আর লিয়ান হাও টে হচ্ছে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে আগে অতিকায় সরীসৃপের জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হওয়া অঞ্চলগুলোর একটি। আর লিয়ান হাও টে'র সমৃদ্ধ অববাহিকায় অতিকায় সরীসৃপসহ বিভিন্ন ধরনের মেরুদন্ডীর জীবাশ্ম পাওয়া যায়। সুতরাং প্যালিঅনটোলাজিস্ট এস্থানকে 'অতিকায় সরীসৃপের কবর' বলে গণ্য করেছেন। অনেক দেশ চীনের সঙ্গে যৌথ গবেষণা করেছে এবং সাফল্য লাভ করেছে। এ থেকে আর লিয়ান হাও টে কে 'অতিকায় সরীসৃপের জীবাশ্ম' বলে অভিহিত করা হয়েছে।
ওহ্। খুব চিত্তাকর্ষক। আপনি আমাদের নিয়ে যাবেন কি?
আচ্ছা, তাহলে আমি আপনাদের নিয়ে আর লিয়ান হাও টে'র অতিকায় সরীসৃপ সংস্কৃতি উপভোগ করবো।
আর লিয়ান হাও টে শহরের সীমান্তে দুটো অতিকায় সরীসৃপ আকারের গেট দেখা যায়। গেট দু'টির উচ্চতা প্রায় দশ-বারো তলা ইমারতের মত। আর লিয়ান হাও টে'তে যাওয়া খুব সোজা। মহা সড়কের অনন্ত তৃণভূমিতে মাঝখান দিয়ে চলে যাওয়া যায়। জাতীয় রাজপথের দু'পাশে ৪৮টি অতিকায় সরীসৃপ খোদাই দেখে সুপ্রাচীনকালের অতিকায় সরীসৃপের বসবাসের কথা অনুভব করা যায়।
আপনার কথা শুনে আমার চোখের সামনে যেন হাজার হাজার অতিকায় সরীসৃপের বিস্তির্ন তৃণভূমিতে দৌড়ানোর প্রতিমূর্তি ফুটে উঠেছে। বাহ! খুব চমত্কারতো!
তাছাড়া, আর লিয়ান হাও টে'তে প্রবেশ করার পর আমরা অনেক 'অতিকায় সরীসৃপ'-এর স্থাপত্য দেখেছি। বিশেষ করে জেলার কেন্দ্র অবস্থিত অতিকায় সরীসৃপ মহাচত্বর ও অতিকায় সরীসৃপ পার্ক হচ্ছে মানুষের আরামদায়ক ও বিনোদনের জায়গা। যখন রাত বাড়ে, তখন এই দুটো জায়গায় কয়েকশ' অধিবাসী মিলিত হয়।
অতিকায় সরীসৃপ সত্যিকারভাবে আর লিয়ান হাও টে'র প্রতিটি স্থানেই এখন দেখা যাচ্ছে।
হ্যাঁ, অতিকায় সরীসৃপের কথা শুনলে মানুষের মনে শিহরণ লাগে। শহরবাসী মিস ওয়াং বলেছেন,
ছোটবেলায় আমি বুঝতাম না, শুধু জানতাম মানুষজন ঘর তৈরী করার প্রক্রিয়ায় ভুমি থেকে অনেক হাঁড়ের মতো জিনিস খনন করে বেড় করেছে। এখন সবাই জানে এগুলো হচ্ছে অতিকায় সরীসৃপের জীবাশ্ম এবং এ জন্য নিজেকে খুব গর্বিত লাগে। মাঝে মাঝে আমরা নিজেদের বন্ধুদের নিয়ে আমাদের আর লিয়ান হাও টে'তে বিশেষ জিনিস দেখাই।
এখানকার অতিকায় সরীসৃপ জীবাশ্ম কেন এতো সমৃদ্ধ! আপনি শ্রোতাবন্ধুদের জানাবেন কি কোথায় অতিকায় সরীসৃপের জীবাশ্ম দেখা যায়?
অবশ্যই জানাবো। গাড়ি নিয়ে আর লিয়ান হাও টে থেকে আর লিয়ান অববাহিকা পর্যন্ত যেতে প্রায় ২০ মিনিট লাগবে। অববাহিকার কাছাকাছি পাহাড়গুলোয় পাথরে রূপলাভ করা অতিকায় সরীসৃপের জীবাশ্ম রয়েছে। একটি খননকৃত কক্ষে আমরা একটি অতিকায় সরীসৃপের জীবাশ্ম দেখেছি। এর একটি হাড়ের ব্যস প্রায় ৮০ সেন্টিমিটার।
বিস্ময়কর! এতো বেশী অতিকায় সরীসৃপের জীবাশ্মের মধ্যে আবার অনেক ধরনের সরিসৃপও রয়েছে। তাই না কি!
হ্যাঁ! এখানকার অতিকায় সরীসৃপ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের অতিকায় সরিসৃপের মত নয়। চীনে এবং মধ্য-এশিয়া অতিকায় সরীসৃপ গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। চলতি বছরের ১৩ জুন চীনের বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের প্রাচীন মেরুদন্ডী প্রাণী ও প্রাচীন মানবজাতি গবেষণালয়ের বিশেষজ্ঞগণ ঘোষণা করেছেন, আর লিয়ান হাও টে'তে নতুন ধরনের জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়েছে। এটা হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম অতিকায় সরীসৃপের জীবাশ্ম এর অংশ।
|