v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-08-23 18:58:48    
সিন্জো আবের ভারত সফর কতটা সফল হয়েছে(ছবি)

cri

    ভারত সফররত জাপানের প্রধানমন্ত্রী সিন্জো আবে ২২ আগস্ট ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের পর দু'পক্ষ একটি "যৌথ বিবৃতি" প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে রাজনীতি, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দু'দেশের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করার পাশাপাশি অর্থনীতি ক্ষেত্রে দু'পক্ষের সহযোগিতার লক্ষ্যবস্তুও উত্থাপিত হয়েছে। সিন্জো আবের এবারের সফর মোটামুটি দু'দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ এবং কৌশলগত সহযোগিতা উন্নত করার লক্ষ্য বাস্তবায়িত হয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সমস্যায় দু'পক্ষ সযত্নে প্রতিপক্ষের অনুরোধের ইতিবাচক জবাব দেয় নি।

    আবের এবারের ভারত সফরের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হচ্ছে জাপান ও ভারতের অর্থনৈতিক সহযোগিতার মান উন্নত করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের অর্থনীতির দ্রুত প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি জাপান সর্বদাই ভারতে রপ্তানী ও পূঁজি বিনিয়োগ সম্প্রসারণ করতে চেয়েছে। যাতে ভারতের এই অসম্পূর্ণ উন্মুক্তকরণ বাজার দখল করা যায়। ভারতের বুনিয়াদী ব্যবস্থা অনুন্নত এবং তার জ্বালানি সম্পদের ঘাটতির সমস্যাও রয়েছে। তাই তার জরুরীভাবে বিদেশের আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সাহায্য দরকার। এটা জাপান ও ভারতের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

    ভারত ও জাপানের "যৌথ বিবৃতিতে" বলা হয়েছে, দু'পক্ষ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার মান উন্নত করবে। ২০১০ সালের আগেই বার্ষিক বাণিজ্যিক মূল্য ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছানোর লক্ষ্য বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাবে। এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব "সার্বিক অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি"-এর আলোচনা সম্পন্ন করবে। "যৌথ বিবৃতিতে" আরো বলা হয়েছে, জাপান ভারতে পুঁজি বিনিয়েগের পরিমাণ বাড়াবে, ভারতের বুনিয়াদী ব্যবস্থার নির্মাণ ও উত্পাদন শিল্প উন্নয়নে সাহায্য করবে। ২২ আগস্ট আবে জানিয়েছেন, দু'দেশ একটি পারস্পরিক সুবিধাজনক বৈদেশিক মুদ্রা ঋণদান চুক্তির মৌলিক কাঠামো নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছেছে।

     দু'দেশের সরকার অর্থনৈতিক সহযোগিতার রোড ম্যাপ প্রণয়নের পাশাপাশি দু'দেশের শিল্পপতিরাও সক্রিয়ভাবে বাণিজ্যিক সুযোগ সৃষ্টি করছেন। এবার আবের সঙ্গে ভারত সফররত ২৪৩ জন জাপানী শিল্পপতি নিয়ে গঠিত প্রতিনিধি দলটি ভারতের শিল্পপতিদের সঙ্গে শীর্ষ ফোরাম ও সেমিনারসহ নানা কার্যক্রমে অংশ নিয়ে বাণিজ্যিক সুযোগ অন্বেষণ করেছেন। জানা গেছে, জাপানের একটি প্রধান বীমা কোম্পানি ভারতের বীমা শিল্প উন্নয়নের জন্য ১০ কোটি মার্কিন ডলার পুঁজি বিনিয়োগ করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। জাপানের হিতাচি কোম্পানি ভারতের আণবিক শক্তি ক্ষেত্রে পুঁজি বিনিয়োগ করার কথা বিবেচনা করছে। জাপানের টয়োটা মোটর কোম্পানি ভারতে তার উত্পাদনের আকার সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নিয়েছে।

    আবের এবারের ভারত সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হচ্ছে দু'দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্বের সহযোগিতা সম্পর্ককে জোরদার করা। ২২ আগস্ট ভারতের কংগ্রেসের দুটি সভার যৌথ সম্মেলনে বক্তৃতা দেয়ার সময় তিনি বলেছেন, জাপান ভারতকে অভিন্ন মৌলিক মূল্যবোধ ও কৌশলগত স্বার্থের অংশীদার হিসেবে মনে করে। দু'দেশের সম্পর্ক বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্যবহ। দু'পক্ষের প্রকাশিত "যৌথ বিবৃতিতেও" বলা হয়েছে, দু'দেশ উচ্চ পর্যায়ের পারস্পরিক সফর জোরদার করবে, নিরাপত্তা ক্ষেত্রের সহযোগিতা ত্বরান্বিত করবে, বিভিন্ন পর্যায়ের কৌশলগত সংলাপ গভীর ও সম্প্রসারণ করবে এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের মত বিনিময় জোরদার করবে।

    কিন্তু কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্পর্শকাতর সমস্যায় জাপান ও ভারত উভয়েই রক্ষণশীল মনোভাব নিয়েছে।

    এর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মধ্যে চারটি রাষ্ট্রের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক মিত্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপার। জাপান সবসময় এমন একটি মিত্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং ভারতের সমর্থন চেয়ে আসছে। ভারতের কংগ্রেসের দুই সভায় বক্তৃতা দেয়ার সময় আবে পুনরায় এ মিত্র প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার কথা জোরালো ভাষায় উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ভারত এ ব্যাপারে তার কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে নি্

    ভারতের আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সরবরাহ বাজারে প্রবেশের সমস্যায় আবে স্পষ্টভাবে সমর্থনের মনোভাবও প্রকাশ করেন নি। তিনি কেবল ভারতের জ্বালানি সম্পদ ক্ষেত্রে প্রযুক্তি সাহায্য দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র সংবাদদাতাকে বলেছেন, ভারত "পারমাণবিক অস্ত্র অবিস্তার চুক্তি" স্বাক্ষর করে নি বলে জাপান এ স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে ভালোভাবে বিবেচনা করতে বাধ্য। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)