v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-08-22 21:27:17    
বিদেশীদের চোখে চীনের বিরাট পরিবর্তন

cri
    ১৯৪৯ সালে চীন গণ-প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর ৫০ বছর পার হয়ে গেছে। এই ৫০ বছরে চীনের নানান ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে, চীনারা স্পষ্টভাবে এই সব পরিবর্তন দেখেছেন। অনেক বিদেশী চীনে সফর অথবা ভ্রমনের মাধ্যমে চীনের সমাজের দ্রুত উন্নয়ন ও অগ্রগতি লক্ষ্য করেছেন। আমাদের সংবাদদাতা চীনে অবস্থান ও কর্মরত কয়েকজন বিদেশীবন্ধুর সাক্ষাত্কার নিয়েছেন, তাঁদের চীন-সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা থেকে চীনা সমাজের বিরাট পরিবর্তন প্রতিফলিত হয়েছে।

    বিশ-ত্রিশ বছর আগে চীন ছিল এক রুদ্ধদ্বার দেশ। বার্ন্ড রেডেস নামক একজন জার্মান নাগরিক যিনি সেই আমলে পেইচিংয়ে কাজ করেছিলেন, তিনি আমাদের বলেছেন, তখন তাঁর পক্ষে সবচেয়ে অসন্তোজনক ব্যাপার ছিলো এই যে, তিনি যেখানেই যান না কেন, বিদেশী দেখার জন্য অনেক চীনা নাগরিক প্রায়ই তাঁর পিছনে লাগে। তিনি বলেন, সেই সময় আমি যেন চিড়িয়াখানার বানরের মতো, স্বাধীনভাবে চলাফেলার অধিকার ছিল না। তিনি এখন চীনে ফ্রিড্রিখ এবাট তহবিল সংস্থার প্রতিনিধি। বিশ-ত্রিশ বছর আগে চীনে অবস্থানের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে তিনি বলেছেন, "এখন আমি চিন্তাও করতে পারি না যে চীনে আমি এতো স্বাধীনভাবে চলাফেলা করতে পারি। তিনি বলেছেন, আমি যখন প্রথম চীনে আসি, তখন আমি এখানে চলাফেরা অত্যন্ত বিপদজনক মনে করতাম। কিন্তু এখন চীনে সত্যিই নাটকীয় পরিবর্তন ঘটেছে। চীনের শহরাঞ্চলের সর্বত্রই বড় বড় দালান, আধুনিক বিভাগীয় বিপনী ও নতুন আবাসিক এলাকা গড়ে ওঠেছে। চীনে সংস্কার ও মুক্তদ্বারনীতি কার্যকরী করার পর যে পরিবর্তন ঘটেছে, তা আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে।

    চীনে দ্রুত ও আমুল পরিবর্তন ঘটেছে, এটা হলো চীনে বসবাসকারী ও সফরকারী বিদেশীদের নিজের অভিজ্ঞতা বর্ননার সময়ের প্রথম কথা। চীনের শহরাঞ্চলের গঠনকাজের দ্রুতগতি আর নাগরিকদের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। সুইজারল্যান্ডের ব্যবসায়ী ব্রায়ান পোর্টার দশ বছর আগে চীনে তার প্রথম সফরের অভিজ্ঞতা সম্বন্ধে বলেছেন, দশবছর আগে আমি যখন প্রথম চীনে আসি, তখন বিমানবন্দর থেকে টেকসি করে নতুন চালু হওয়া চায়না হোটেলে গিয়েছি। তখন বিমানবন্দরমুখী রাস্তাটি প্রশস্ত নয়, মোটরগাড়ির পাশাপাশি ঘোড়ার গাড়িও চলত। টু-ওয়ে সড়ক বলে পথে যানজট প্রায়ই ঘটে, বিমানবন্দর থেকে চায়না হোটেল পৌঁছতে দু ঘন্টারও বেশী সময় লেগেছিল।

    সুইজ্যারল্যন্ডের বন্ধু পোর্টার যে চায়না হোটেলের কথা বলেছেন, তা অখনকার পেইচিংয়ের একটি পাঁচতারা হোটেল, এই ধরনের হোটেল সেই আমলে বেশী ছিল না। এই হোটেল রাজধানী বিমানবন্দর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পোর্টার বলেছেন, দশ বছর আগে চীনা নাগরিকদের মধ্যে খুব কম লোকের বড় হোটেলে থাকার সামর্থ্য ছিলো। কাজেই চায়না হোটেলে থাকা অতিথিদের প্রায় সবাই বিদেশী। কিন্তু এখন চীনের বড় বড় হোটেলে থাকা অতিথিদের মধ্যে বেশীর ভাগই চীনা।

    বোয়িং বিমান কম্পানির গন-সংযোগ বিভাগের প্রধান টোমাস মেকলিন চীনের রেঁস্তোরার সংখ্যা বৃদ্ধি আর রেঁস্তোরার আকারের সম্প্রসারন প্রসদ্দে বলেছেন, বর্তমানে চীনের বড় বড় রেঁস্তোরা ছাড়া পেইচিংয়ের সাধারন রেঁস্তোরায়ও নিজের পছন্দমতো খাবার পাওয়া যায়। এগুলোতে শুধু চীনের বিভিন্ন অঞ্চলের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ খাবার পাওয়া যায়, তাই নয়, ফ্রান্স, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি আর ব্রাজিল প্রভৃতি দেশের খাবারও পাওয়া যায়। টোমাস আরও লক্ষ্য করেছেন চীনের নাগরিকদের বস্তুগত জীবনের মানোন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকদের সাংস্কৃতিক মান উন্নত হয়েছে, তাঁদের ধ্যান-ধারনার পরিবর্তন হয়েছে। তিনি বলেছেন, পেইচিংয়ে বিশেষ করে সাংহাইয়ে, অনেক চীনা কর্মী পাশ্চাত্য জগতের বাণিজ্য প্রণালী আর পরিচালনা পদ্ধতি শিখেছেন, ১৯৯৩ সালে আমি চীনে কাজ করতে শুরু করেছি, এই ক্ষেত্রে চীনা কর্মীদের অগ্রগতি আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার প্রক্রিয়ায় বিদেশী শিল্পপতিরা অনুভব করতে পেরেছেন, ধ্যান-ধারনা ও শিষ্টাচাবের ক্ষেত্রে চীনের শিল্পপতিদের পরিবর্তন বিরাট। ঠিক যেমন টোমাস বলেছেন, চীনের শিল্পপতিরা বাজার ও মুনাফার প্রতি ক্রমেই আরো বেশী গুরুত্ব দিচ্ছেন, তাঁরা আগের চেয়ে আরো বেশী সহযোগিতাপরায়ন হচ্ছেন।

    অনেক বিদেশীর চোখে চীনের আমূল পরিবর্তন ঘটেছে, এই বিরাট পরিবর্তনের কারনও তাঁরা চীনের বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে বিশ্লেষন করেছেন। তাঁরা বলেছেন, নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর চীনা জাতি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অধিকতর স্বাধীনতা পেয়েছে।