 দক্ষিণ -পশ্চিম চীনের তিব্বতে সুন্দর সুন্দর তুষার পাহাড় ও হ্রদ প্রভৃতি প্রাকৃতিক নিদর্শন ছাড়া সাংস্কৃতিক সম্পদও সমৃদ্ধ । তিব্বতের সাংস্কৃতিক সম্পদের মধ্যে মহিমাময় পোতালা প্রাসাদ ও তাচাও মন্দির বিশ্ববিখ্যাত । তিব্বতের অপেরা ও মহাকাব্যের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে । আজকের অনুষ্ঠানে আমরা তিব্বতের রাজধানী লাসার সংস্কৃতি সংরক্ষণ সম্পর্কে কিছু বলবো ।
তিব্বতীরা কাদা মাটির উপর আঘাত হানাকে আগা মারা বলেন । তিব্বতী ভাষায় আগার অর্থ হল কাদা মাটি । শ্রমিকরা কাদা মাটিকে তিব্বতী বসতবাড়ীর ছাদে বা মাটিতে রাখেন । কাঠ বা পাথরের হাতিয়ার দিয়ে জোরে আঘাত হানার পর কাদামাটি মার্বেল পাথরের মতো মসৃণ হবে । এখন পোতালা ভবনে এ ধরনের মসৃন মাটির ছাদ দেখা যায়।

খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর সময় তিব্বতী রাজা সোনচানকানপু থান রাজবংশের রাজকুমার উয়েন ছেনের সঙ্গে বিয়ে করেন । পোতালাভবন রাজকুমারী ওয়েন ছেনের জন্য তৈরী করা হয়। পরে এ ভবন দালাই লামাদের বসতবাড়ীতে পরিণত হয়। পোতালা ভবন তিব্বতী বৌদ্ধধর্মের তীর্থস্থান । এ ভবনের স্থাপত্য নৈপুন্য , ঐতিহাসিক মূল্য ও অজস্র পুরাকীর্তির জন্য পোতালা ভবন তিব্বতী সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকে পরিণত হয়েছে ।
পোতালা ভবন পরিচালনা কমিটির প্রধান ছিয়ানপা লুওসানের বয়স ৬৫ বছর। তিনি একজন পুরাকীর্তি সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ । তিনি পোতালা ভবনে বিশ বছর কাজ করেছেন । তিনি বলেছেন , এ ভবনের প্রতিটি ঘর ও দেওয়াল চিত্রের পিছনে একটি কাহিনী আছে। তাই এ সব পুরাকীর্তি সংরক্ষণ করা আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ । গত শতাব্দীর আশির দশক থেকে পোতালা ভবন পুনর্নিমানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার মোট ২০ কোটি ইউয়ান বরাদ্দ করেছে । ২০০২ সালের জুন মাসে পোতালা ভবনের দ্বিতীয় বার বড় আকারের মেরামত চালানো হয় । এবারের মেরামতের প্রধান উদ্দেশ্য হলো পোতালা ভবনের ভিত্তি ও দেওয়াল মজবুত করা । তিনি বলেছেন , ২০০২ সালের মেরামত সাধারণ মেরামত নয়। পোতালা ভবন খুব উচ্চ স্থাপত্য ,কাজেই ভবনের ভিত্তি মজবুত না হলে ভবনটি নষ্ট হবে । ঘরগুলোর দেওয়ালও আরো মজবুত করতে হবে । ঘরের দেওয়ালচিত্রের উপর বৃষ্টি পড়লে দেওয়ালচিত্র নষ্ট হবে । তাই দেওয়ালের উপর কাদামাটির আগা মাখলে দেওয়ালচিত্র সংরক্ষিত হবে ।
|