v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-08-28 19:06:09    
পোতালা ভবনের সুরক্ষাকারী জামপা কেলসাং

cri

    ৬৫ বছর বয়স্ক জামপা কেলসাং হলেন চীনের বিখ্যাত সংস্কৃতি সুরক্ষা ক্ষেত্রের একজন বিশেষজ্ঞ। তিনি তিব্বতের পোতালা ভবনের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধানের পদে ১৯ বছর ধরে কাজ করেছেন। পোতালার সুরক্ষায় তিনি যথেষ্ট অবদান রেখেছেন।

    জামপা কেলসাংয়ের জন্মের সময় তাঁর মা মারা গেছেন। কয়েক বছর পর তার বাবাও চিরকালের মতো তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। জামপা কেলসাং তাঁর মামা'র বাড়িতে বড় হয়েছেন। বিভিন্ন কারণে জামপা কেলসাং পুরোপুরি স্কুলের শিক্ষা পাননি। এ তার জন্য একটি দুঃখ রয়েছে। ১৬ বছর বয়সে জামপা কেলসাং তিব্বতের পশু পালকদের জন্য ছবি দেখানোর কাজ নিয়েছেন। এতে তিব্বতের পশু পালকরা অনেক নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছে এবং জাম্পা কেলসাংও সুদ্ধ চীনা ভাষা শিখেছেন।

    ১৯৮৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ৫৫ মিলিয়ন ইউয়ান বরাদ্দ করে পোতালা ভবন মেরামতের কাজ শুরু করেছে। জামপা কেলসাং এই কাজে অংশ নিয়েছেন। তিনি খুব চমত্কারভাবে কাজ করেছেন বলে দায়িত্বশীল কর্মকর্তা তাকে পোতালা ভবনের ব্যবস্থাপনার প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করতে চান। কিন্তু তিনি প্রথমে এই প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেন। তার ভাষায়:

     "প্রথমে আমি এই কাজ করতে চাইনি। কেন? কারণ পোতালা ভবনের পুরাকির্তীগুলো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আমার বাচ্চাও বলেছে, বাবা যেও না। আমরা যদি ধনী হই তাহলে তারা বলবে যে আমরা পোতালা ভবন থেকে জিনিক চুরি করে ধনী হয়েছি।"

    কিন্তু অনেক বার কথা বলার পর তিনি রাজি হয়েছেন। তারপর জামপা কেলসাংয়ের ১৯ বছরের গৌরব ও উদ্বিগ্ন জীবন কেঁটেছে। কেন? কারণ পোতালা ভবন হলো তিব্বতী জনগণের মনের গৌরব, এখানে প্রতিটি পুরাকির্তীর মূল্য হিসেব করা যায় না। তার ভূমিকা এতো গুরুত্বপূর্ণ তাই সবসময় উদ্বিগ্ন থাকতে হয়। যদি কোনো ভুল হয়ে যায়? কিন্তু তার ১৯ বছরের কাজ প্রমাণ করেছে যে, জামপা কেলসাং খুব ভাল কাজ করছেন। তিনি প্রতিটি পুরাকির্তী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন এবং এই ভবনের ছবি ও বই সুরক্ষার চেষ্টা করেছেন।

    থাংকা ও সুত্রার সুরক্ষায় পোতালা ভবনের কর্মকর্তারাও ভাল কাজ করছেন। মূল্যবান পত্র সুত্রের সুরক্ষা কাজ দেখলেই বোঝা যায়। এমন পাতার উপরে সুত্র লেখার পুরোনো পুরাকির্তী ৭ ও ১৩ শতাব্দীতে ভারত ও নেপাল থেকে তিব্বতে এসেছে। তার সুরক্ষা করা খুব কঠিন। এখন ভারতে তাও খুব কম দেখা যায়। পোতালা ভবনের এই কাজ পৃথিবীতে প্রথম। এখন জাপান ও ভারতের সংশ্লিষ্ট বিভাগ পোতালার সঙ্গে সহযোগিতা করতে চায়। জামপা কেলসাং বলেছেন:

    "আমরা পত্র সুত্রের কাজে অনেক গুরুত্ব দেই। বিশেষ কার্যালয় গঠন করেছি। পত্র সুত্র ভারত থেকে এসেছে, কিন্তু আমরা রক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি। এই জন্য এখন জাপান ও ভারত সব আমাদের সহযোগিতা চায়।"

    তিব্বতের অবকাঠামো গঠন সম্পূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি দেশে ও বিদেশের পর্যটকদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। কিন্তু এমন হলে পোতালা ভবনের ক্ষতি হবে। জামপা কেলসাং প্রস্তাব দিয়েছেন যে প্রতি দিন এখানে আসা পর্যটকদের সংখ্যা সিমিত করা উচিত।

    জামপা কেলসাং বলেছেন, তাঁর জ্ঞান বেশি নয়, শুধু মাত্র দায়িত্ববোধ বেশি। যে কোনো কাজ করলে আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালাতে হবে। তিনি বরেছেন:

    "পোতালা ভবনের কাজ ভাল করলে আমার মৃত্যুর পর সবাই আমার সন্তানকে বলবে যে তোমার বাবা পোতালা ভবনের জন্য ভাল কাজ করেছেন।"

    জামপা কেলসাং আশা করেন নিজের অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে যদি পোতালা ভবনের জন্য কিছু অবদান রাখতে পারেন তাহলে তা হবে তার জন্য একটি আনন্দের ব্যাপার।(ইয়াং ওয়েই মিং)