v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-08-17 20:00:14    
হুপেই প্রদেশের এনশি-তে মিথেন গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে

cri
    ২০০০ সালের পর থেকে, চীনের মধ্যাঞ্চলের হুপেই প্রদেশের এনশ থুচিয়া জাতি আর মিয়াও জাতির স্বায়ত্তশাসিত বিভাগ প্রধানত মিথেন গ্যাস ব্যবহার করে প্রাকৃতিক বাড়িঘর নির্মাণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, যাতে প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষা করা যায় এবং স্থানীয় অধিবাসীদের জীবন-যাপনের মানোন্নয়ন হয়।

    মিথেন গ্যাস হচ্ছে মানুষ ও পশ্তর মল, খড় এবং ঘাসসহ বিভিন্ন উপাদানের মাধ্যমে সৃষ্ট এক ধরণের দাহ্যযোগ্য গ্যাস।আসালে এটি হলো মিথেন গ্যাস। এনশি থুচিয়া জাতি ও মিয়াও জাতির স্বায়ত্তশাসিত বিভাগ চীনের হুপেই প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এখানে চীনের প্রাকৃতিক বন ও আবাদী জমির পরিবর্তে বন পুনরুদ্ধারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা অঞ্চল। ২০০০ সালের পর থেকে এনশি বিভাগ গ্রামাঞ্চলে সার্বিকভাবে মিথেন গ্যাসের ব্যবহারের প্রযুক্তি চালু করেছে।

    আমাদের সংবাদদাতা এনশি শহরের সিয়াবা গ্রামে দেখেছেন, সেখানে প্রত্যেকটি পরিবারের মিথেন গ্যাস সৃষ্টির ডোবা রয়েছে। এর ডোবার আকৃতি প্রধানত গোলাকার এবং গভীরতা দুই মিটারের মতো। প্রতিটি পরিবারের প্রত্যেকের জন্য এর পরিমাণ হচ্ছে দুই কিউবিকমিটার এবং এই মানদন্ড অনুসারে নির্মিত হয়। যেমন, একটি পরিবারের মোট পাঁচ জন আছে। তার জন্য ১০ কিউবিকমিটারের একটি মিথেন গ্যাসের ডোবা নির্মান করা হয়। এটি গোয়ালঘর এবং টয়লেটের সঙ্গে সম্পর্কিত। যাতে মানুষ ও গরু-মহিষের মল সহজ ও অব্যাহতভাবে মিথেন ডোবায় প্রবেশ করতে পারে। ফলে সৃষ্ট মিথেন গ্যাস একটি পরিবারের রান্না, আলোকিত ও তাপায়নের প্রয়োজন পূরণ করতে পারে। গ্রামবাসী ছেন ইয়ানছুন বলেন, এখন প্রতিদিন কৃষি কাজ শেষে বাসায় ফিরে শুধু মিথেনের সুইচ খুললেই রান্না করতে পারি। আগে রান্না করতে এক ঘন্টারও বেশী সময় লাগতো এবং ধূয়াও খুব বেশী হতো। এখন শুধুমাত্র আধ ঘন্টার মধ্যেই রান্না করতে পারি।

"আমাদের জন্যে প্রায় তিন বা চারটি গরুর মলই যথেষ্ট। আগে কাঠ দিয়ে রান্না হতো যা খুব পরিশ্রম এবং স্বাস্থ্যকর নয়। মিথেন গ্যাসের সাহায্যে গ্রামীণ নারীরা সত্যিকারভাবেই ঝামেলা থেকে মুক্তি পেয়েছেন।"

    আগে গ্রামাঞ্চলের ময়লা জীবন-যাপনের পরিবেশকে গুরুতরভাবে দূষিত করতো। বিশেষ করে কৃষকদের স্বাস্থ্যর ক্ষতি হতো। তা ছাড়া, কাঠকে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করলে প্রতি বছর কয়েক মিলিয়ন কিউবিকমিটারের বন ছাই করা যেতো।

    তাই এনশি বিভাগের সরকার ৭ লাখ মিথেন ডোবা নির্মাণের প্রকল্প প্রণয়ন করেছে এবং মিথেন ডোবা নির্মাণ করার জন্য প্রত্যেক গ্রামীণ পরিবারকে ৫০০ থেকে ১০০০ ইউয়ান রেনমিনপি মূল্যের ভর্তুকি দেয়ার নীতি জারি করেছে। এ ধরণের উত্সাহজনক নীতিতে মিথেন ডোবার সংখ্যা প্রতি বছরে প্রায় এক লাখ করে বেড়ে যায়। খবরে জানা গেছে, এ পর্যন্ত এই প্রকল্পের অর্ধেকেরও বেশী শেষ হয়েছে।

    খবরে প্রকাশ, বর্তমানে এনশি বিভাগের সম্প্রসারিত মিথেন গ্যাস ব্যবহারের প্রযুক্তির সুবাদে প্রতি বছরে এক লাখ হেকটরের বন কাটানোর হাত থেকে রেহাই পেয়েছে। তাই সারা বিভাগে বনের আবৃতির হার ৬৭ শতাংশে পৌঁছেছে। প্রাকৃতিক পরিবেশও স্পষ্টভাবে উন্নতি হয়েছে। মিথেন গ্যাসের ব্যবহার দরিদ্র পাহাড়ী অঞ্চলে কয়েক হাজার বছরের কাঠ কাটার মাধ্যমে জ্বালানী পাওয়ার অভ্যাসের পরিবর্তন করেছে। মিথেন গ্যাস স্থানীয় জনগণের জন্যে ১৫ কোটি ইউয়ান রেনমিনপি মূল্যের সরাসরি অর্থনৈতিক লাভ এনে দিয়েছে। মিথেনের সার্বিক ব্যবহারের ফলে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ওষুধের ব্যয় কমেছে। এনশি শহরের দেংলোংপা গ্রামের অধিবাসী সিয়াও হোংচুয়েন আমাদের সংবাদদাতাকে বলেছেন, মিথেন ডোবার মিথেন বর্জ্য পদার্থ সরাসরিভাবে ফসল ক্ষেত্রে জলসেচ করতে পারে। এটি হচ্ছে খুব ভালো জৈব সার এবং কার্যকরভাবে গাছ গাছড়া ও কীটপতংগ প্রতি রোধ করতে ও ফসলের গুণগত মান বাড়াতে সক্ষম। বর্তমানে সিয়াও হোংচুয়েন পরিবারের চা বাগানে প্রতি বছর ৭০০০ ইউয়ান রেনমিনপি আয় হয়। তা আগের চেয়ে দুই হাজারেরও বেশী ইউয়ান বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেছেন,

"মিথেন বর্জ্য পদার্থ জলসেচ করার মাধ্যমে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ওষুধের ব্যবহার কমেছে। এই ভাবে উত্পাদন করা দ্রব্য আরো স্বাস্থ্যসম্মত এবং ই ইউ'র জরীপের মানদন্ড সম্পন্ন।"

    সুয়ান এন জেলার হুয়াংপিং গ্রামে উত্পাদন করা গোল্ডেন নাশপাতি এখন ই ইউ'র বাজারে প্রবেশের অধিকার পেয়েছে এবং অস্ট্রিয়ায় ব্যাপক রপ্তানি শুরু করেছে। গোল্ডেন নাশপাতি ফল কোম্পানির ম্যানেজার জেনারেল লি চিনমিন বলেছেন, এখানকার মানুষ মিথেন গ্যাস ব্যবহার করেন, সার ভালো, কোনো দুষণ নেই এবং ফলের গুণগত মান খুব উচ্চ। এ কারণে আমরা এখানে পুঁজি বিনিয়োগ করি।

"এখানে কোন দুষণ নেই এবং বনের আবৃতির হার বেশি। তাই আমরা সকল এনশি বিভাগে ১৩০০ হেকটরেরও বেশী জমিতে আমরা নাশপতির চাষ করেছি।"

    এনশি বিভাগের প্রাকৃতিক জ্বালানী ব্যুরোর মহা-পরিচালক থান শুয়ানহো বলেছেন, মিথেন গ্যাসের ব্যবহার বিশাল অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুফল সৃষ্টি করতে পারে বলে তারা ভবিষ্যতে মিথেন গ্যাসের সম্প্রসারণের মাত্রা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন,

    মিথেন গ্যাস যেমন মত্স্যচাষ শিল্প, তেমনি কৃষি শিল্পের জন্যও অনুকূল। এটি বিশেষ শিল্পের উন্নয়নকেও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ২০০৩ সালের আগে আমাদের বিভাগে সবুজ খাবার মাত্র দশটির মত ছিল। কিন্তু এ বছরে ১০৫টি সবুজ খাবারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২০১৪ সালের আগে আমরা -----বিভাগের সকল কৃষি পণ্যদ্রব্যে সবুজ খাবারের মানদন্ডে পৌঁছবে। (লিলি)