v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-08-16 18:22:04    
ইরাকের আরেকটি রক্তাক্ত দিন

cri
    উত্তর ইরাকের নেইনেভা প্রদেশের পুলিশ বুধবার বলেছে, গত মংগলবার এ প্রদেশের কয়েকটি ইয়াজিদি সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকায় সংঘটিত ৪টি একটানা আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২৫০জন নিহত এবং তিন শতাধিক লোক আহত হয়েছেন । ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এটি ছিল প্রাণহানির সবচেয়ে শোচনীয় হামলা । এতে ইরাক যুদ্ধের সীমাহীন পরিণতিই প্রতিফলিত হয়েছে ।

    পুলিশ বলেছে , মংগলবার নেইনেভা প্রদেশে এ ৪টি হামলা অল্প সময়ের মধ্যে , অনুরূপ পদ্ধতিতে এবং ইয়াজিদি সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকায় সংঘটিত হয়েছে । তাই মনে করা হচ্ছে যে , এসব ঘটনা পরস্পরের সংগে জড়িত এবং ষড়যন্ত্রকারীরা এ হামলা চালিয়েছে । পলিশ আরো মনে করে যে , এ এলাকায় প্রধানত কুর্দীদের একটি প্রাচীন সম্প্রদায় ইয়াজিদিরা বসবাস করছেন । সুতরাং এ হামলা স্পস্টতই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত । বোমার বিস্ফোরণে বহু অধিবাসীর বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে বলে বেশ কিছু লোক এখন ধ্বংসাবশেষের স্তুপে চাপা রয়েছেন । এটি ত্রাণ তত্পরতা ও হতাহতদের সংখ্যা গণনার জন্যে অসুবিধা সৃষ্টি করেছে । নেইনেভা প্রদেশের বিভিন্ন বড় হাসপাতাল এখনো অনবরত আহতদের ভর্তি করছে । কাজেই হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে ।

     ইরাকের এ রক্তাক্ত ঘটনা আবারো মার্কিন ও ইরাক কর্তপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবাক করে তুলেছে । ইরাকের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় বুধবার একটি বিবৃতিতে ইরাকী জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে বিভক্ত করার চক্রান্তের বিরোধিতা করার আহবান জানিয়েছে । ইরাক সরকার একই দিন ঘোষণা করেছে , স্থানীয় পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্যে সরকার বুধবার থেকে ইরাকের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে সান্ধ্য আইন জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । ইরাকে মোতায়েন মার্কিন বাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডার ডেভিড পেট্রাউস ও ইরাকে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রায়ান ক্রকারও বুধবার একটি যৌথ বিবৃতিতে ইরাকের নিরীহ নাগরিকদের বিরুদ্ধে এবারের নির্মম হামলার নিন্দা করেছেন ।

    আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এ রক্তাক্ত ঘটনায় দ্রুত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে । জাতি সংঘের মহাসচিব বান কি মুন বুধবার একটি বিবৃতিতে এ একটানা বিস্ফোরণের তীব্রভাষায় নিন্দা করেছেন । তিনি বলেছেন , যে কোনো কারণ নির্বিচারে নিরীহ নাগরিকদের হত্যা করার অজুহাত হতে পারে না । ইইউ'র পালাক্রমিক চেয়ারম্যান দেশ পর্তুগাল বুধবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেছে , এবারের হামলার লক্ষ্য হচ্ছে ইরাকের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের তীব্রতাকে উষ্কে দেয়া ।

    বিশ্লেষকরা মনে করেন যে , ইরাক একের পর এক রক্তাক্ত দিনের যে সম্মুখীণ হচ্ছে এবং বিপুল সংখ্যক নিরীহ নাগরিকদের যে প্রাণহানি ঘটছে । তার মূল কারণ হলো , জাতি সংঘের অনুমোদন ব্যতিরেকে যুক্তরাষ্ট্র ইরাক যুদ্ধ বাধিয়েছে ।

প্রথমত: ইরাক যুদ্ধ সাদ্দাম সরকারের শাসনামলের রাজনৈতিক ও স্বার্থগত কাঠামো ভেংগে দিয়েছে এবং তীব্রতর সাম্প্রদায়িক ও জাতীয় দ্বন্দ্বকে আরো তীব্রতর করেছে । ক্ষমতার রদবদল ইরাকের বিভিন্ন সম্প্রদায় ও জাতির মধ্যে নতুন শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করেছে । এতে নির্দিষ্ট মাত্রায় বলপ্রয়োগ ও বিভিন্ন ধরণের অপরাধ মদদ পেয়েছে । ফলে ইরাকের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে ।

    দ্বিতীয়ত: ইরাক সরকার এখন নামে মাত্র । এ সরকারের কার্যকরভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ এবং পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করার সামর্থ্য নেই । ইরাক যুদ্ধ ইরাকের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা সম্পূর্ণই ধ্বংস করে দিয়েছে এবং ইরাকের সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনী ভেংগে দিয়েছে । ইরাকের সমাজ এক সময়ের জন্যে এক বিশৃংখল অবস্থায় ছিল । যুক্তরাষ্ট্র প্রাণপন করে পর পর বেশ কয়েকটি সরকার গঠন করলেও ব্যাপক সমর্থনের অভাবে বেশি দিন তা টিকতে পারে নি। বর্তমান সরকারের মধ্যেও বহু দ্বন্দ্ব থাকায় ক্ষমতা প্রয়োগের সামর্থ্য অনেক দুর্বল হয়েছে ।

    তৃতীয়ত: ইরাক যুদ্ধের প্রথম দিকে কিছু বিজয় অর্জন করলেও তার সীমাহীন পরিণতি নিশ্চয় চলতে থাকবে ।