v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-08-09 17:13:05    
আনহুই প্রদেশের সিয়ানইউ পাহাড়

cri

    ১৭৪৫ সালে সুইডেনের একটি গোথেবার্গ নামক বাণিজ্যিক জাহাজ চীন থেকে স্বদেশ ফিরে যাওয়ার পথে ডুবে যায় । ১৯৮৬ সালে গোথেবার্গ জাহাজের পণ্যদ্রব্য সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা হয়েছে । লোকজন আশ্চর্য্যভাবে দেখেছে যে সমুদ্রে ২ শ'রও বেশি বছর থাকার পরও চীনের গ্রীন চা এখনো খাওয়া যায় এবং তার গন্ধও খুবই ভালো আস্থায় অবিকল রয়েছে । তার মধ্যে আনহুই প্রদেশের সিয়ানইউ পাহাড়ে উত্পন্ন ঐতিহাসিক চা 'উলিছিং' রয়েছে । গোথেবার্গ জাহাজ উদ্ধারের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক সুইডেনের ম্যাক্স লার্সোন উদ্ধারের কথা স্মরণ করে বলেছেন, আমরা গোথেবার্গ জাহাজের বিধ্বংস্ত অংশ থেকে চীনের ৩৭০টন প্রাচীন চা খুঁজে পেয়েছি । চা চীনা মাটি পাত্রে রাখা ছিল এবং পাত্রগুলো কাঠের বাক্সে ভরা ছিল ।এদিন রাতে আমরা প্রাচীন চীনা চা দিয়ে একটি চা পার্টির আয়োজন করেছিলাম ্ চার সুগন্ধ খুবই চমত্কার ।

     'উলিছিং'চা হচ্ছে সিয়ানইউ পাহাড়ের এক ধরনের শ্রেষ্ঠ চা । পাহাড়ে সারা বছর কুয়াশা পড়ার কারণে চায়ের নাম 'উলিছিং' রাখা হয় । চীনাভাষায় এর অর্থ হল কুয়াশায় সবুজ হওয়া চা । সিয়ানইউ পাহাড়ে চা চাষ করার ইতিহাস সুদীর্ঘকালের । প্রাচীনকালের বইয়ে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে, খৃষ্ট পূর্ব ৩০০ সালে এখানে চা-এর চাষ শুরু হয় । সিয়ানইউ পাহাড়ের চা হল উচ্চুঁ পাহাড়ের চা । চা সংগ্রহ করার সময় অন্য জায়গার চেয়ে সময় বেশি লাগে । সাধারণত প্রতি বছরের ২০ মে থেকে চা সংগ্রহ শুরু হয় । এখানকার চায়ে কোনো রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না । শুধু গত বছরের গাছের পাতা দিয়ে তৈরী প্রাকৃতিক সার ব্যবহৃত হয় । কয়েক হাজার বছর আগে ব্যবহৃত চা তৈরীর পদ্ধতি এখনো ব্যবহার করা হয় ।

    সিয়ানইউ পাহাড়ের সুগন্ধ চা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক সহায়ক । তা পাহাড়ের বিশেষ প্রাকৃতিক আবহাওয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে । সুন্দর সিয়ানইউ পাহাড় লোকজনের কাছে দেবতা থাকার জায়গার মত । পাহাড়ে প্রাচীনকালের বিশাল বন রয়েছে । বনের ভিতরে নানা ধরনের পশুপাখি আছে । পাহাড়ে ৮টি বড় জলপ্রপাত আছে । সবচেয়ে বড়টির প্রস্থতা ২০ মিটার ,উচ্চতা ১৫মিটার ।খুবই সুন্দর ও পবিত্র ।

    ২০০৫ সালে সুইডেনের পুরনো গোথেবার্গ জাহাজের মতো তৈরী নতুন গোথেবার্গ জাহাজ কয়েক শো বছরের আগের রোডম্যাপ অনুযায়ী পুনরায় চীনে এসেছে এবং জাহাজটির নাবিকরা বিশেষ করে আনহুই প্রদেশের সিয়ানইউ পাহাড়ে এসেছেন । চা বাগানে গোথেবার্গ জাহাজের নাবিক ম্যাক্স লার্সোন হাতে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা পুরনো 'উলিছিং'চা নিয়ে সামনে চা গাছের নতুন চা দেখেন, তিনি খুব আশ্চর্য্য হয়ে যান । তিনি বলেছেন, আজও প্রাচীনকালের শ্রম পদ্ধতি রয়ে গেছে । শুধু প্রাচীনকালের লোক বর্তমান লোকদের পূর্বপুরুষ । এ সময় আমি এ ধরনের প্রাচীন চা বাগানে দাঁড়িয়ে আমার মনে হচ্ছে ৩০০ বছরেরও বেশি ইতিহাস আমার শরীর অতিক্রম করেছে । আমার বিনয় ও শ্রদ্ধা মনে জেগে উঠে ।

তিন শতাব্দী পর প্রাচীন 'উলিছিং'চা পুনরায় তার জন্মস্থানে ফিরে এসেছে । সিয়ানইউ পাহাড়ের চা ব্যবসায়ীরা বিশেষ পদ্ধতিতে প্রাচীন চা নিয়ে আসা সুইডেন বন্ধুদের স্বাগত জানিয়েছেন । তাঁরা নতুন 'উলিছিং'চা উপহার হিসেবে নতুন গোথেবার্গ জাহাজকে দিয়েছেন এবং চা রাখার চীনা মাটির পাত্রের ওপর গোথেবার্গ জাহাজের চিহ্ন এঁকে দেয়া হয়েছে । ছিচৌ শহরের সহকারী মেয়র ম্যাডাম লিউ কুও ছিং বলেছেন, পুরনো গোথেবার্গ জাহাজের মধ্যে আমাদের চা খুঁজে বের পাওয়ার খবর শুনে আমারা খুবই আনন্দিত । এসব পুরনো চা দেখে আমাদের আশ্চর্য্য লাগছে ।

    ২০০৭ সালের ৯ জুন নতুন গোথেবার্গ জাহাজ চীনের আনহুই প্রদেশের বিখ্যাত চা 'উলিছিং' নিয়ে স্বদেশে ফিরে গিয়েছে ।হাজার বছরের চা সিয়ানইউ পাহাড় বাইরের জগতের সঙ্গে সংযুক্ত করার একটি বন্ধনে পরিণত হয়েছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পর্যটকদের এখানে আসতে উদ্বুদ্ধ করবে ।