v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-08-09 16:32:08    
ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ে তিব্বতের পরিবেশ পরিবর্তন করে

cri

    বন্ধুরা, ২০০৬ সালের পয়লা জুলাই বিশ্বে সমুদ্র সমতল থেকে সবচেয়ে উচ্চ ও লম্বা পার্বত্যদেশ রেলওয়ে ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ে চালু হওয়ার এক বছর ধরে গভীরভাবে তিব্বতের অর্থনীতির উন্নয়ন ত্বরান্বিত এবং তিব্বত পার্বত্যদেশে নতুন প্রাণশক্তি এনে দেয়া হয়। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের কাছে এ সম্বন্ধে কিছু কথা বলবো।

    আপনারা এখন শুচ্ছেন তিব্বতী জাতীয় গায়ক বাসাংয়ের 'থিয়ানলু' নামক একটি গান। এ গান হল তিব্বতী জাতীয় জনগণ ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ে নির্মাণ উপলক্ষে রচনা করে। গানটির কথা হল, 'এটি হল একটি আকাশে নির্মিত পথ। অভ্যন্তরভাগ এর মাধ্যমে চাহিদা আমাদের কাছে পাঠায়। এরপর পাড়াহ বেশি উচ্চ না, পথ বেশি লম্বা না। বিভিন্ন জাতির জনগণ একসাথে আনন্দে থাকে।'

    তিব্বত স্বায়ত্তশসিত অঞ্চলের ভাইস চেয়ারম্যান নিমাছিরেন বলেছেন, এ বছর ধরে ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ের পরিস্থিতি এ গানের কথার একই মত। তিনি বলেছেন, 'ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ে চালু হওয়ার এক বছরে পরিস্থিতি খুবই ভাল। আমি কেন্দ্রীয় সরকার তিব্বতে রেলওয়ে নির্মাণের জন্য ধন্যবাদ জানাই। এটি তিব্বতে উত্পাদন ও জীবনযাত্রা উন্নয়নের ক্ষেত্রে কল্যাণকর হয়। আগে আমি উদ্বেগে রয়েছি যে, শীতকালে যাত্রা কম হবে। আসলে শীতকালেও যাত্রার সংখ্যা কম হয় নি।'

    ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ে হল তিব্বতের কৃষক ও বশুপালকদের সুখে যাওয়ার সেতু। এখন রেলওয়ের কাছাকাছি দকান ও রেসতোরাঁট অনেক খোলা হয়। এসব দকান ও রেসতোরাঁটের কর্মচারীদের আয় আগের চেয়ে অনেক বেশি হয়।

    ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ে অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ সরবরাহের পাশাপাশি তিব্বতের পরিবহনের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে। গত জুলাই মাসে সমুদ্র সমতল থেকে ৫১০০ মিটার উচু স্থানে উত্পাদিত ৫১০০ তিব্বত তুষারনদীর মাইনারাল পানি ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ের মাধ্যমে দেশী ও বিদেশী বিভিন্ন স্থানে পাঠায়। এখন আরো বেশি মানুষ তিব্বতের উচ্চ গুণগতমান মাইনারাল ওয়াটার খেতে পারে। '৫১০০ তিব্বত তুষারনদী মাইরারাল ওয়াটার' কোম্পানির মহাপরিচালক মাদাম চিয়াং সিয়াওহং বলেছেন, রেলওয়ে পরিবহন বাস্তবায়ন হল তাঁর কোম্পানি তিব্বতের মাইনারাল ওয়াটার আবিশ্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। তিনি আরো বলেছেন, 'আমরা ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ের পর কারখানা নির্মাণ করি। ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ের চালু হওয়ার এক বছর ধরে পরিস্থিতিতে প্রমাণিত হয় যে আমাদের নীতি ও সিদ্ধান্ত সঠিক।'

    পরিবহন অনগ্রস ও অসুবিধা তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের উন্নয়ন বিস্নত করেছিল। ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ে তিব্বতের হাইওয়ে ও বিমান পরিবহনের চাপ ব্যাপক প্রশমিত করেছে এবং খরচ কমিয়েছে। যাতে তিব্বতের প্রতিদ্বন্দ্বতা উন্নয়ন করা যায়।

    উত্তর তিব্বতের নাছুই অঞ্চলের লোকসংখ্যা ৪লাখের বেশি। এখান হল তিব্বত পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের সংযোগ। ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ে এখানে ৫শো কিলোমাটার রয়েছে। নাছুই অঞ্চলের একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা থান ইয়ংশৌ বলেছেন, ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ে চালু হওয়ার কারণে নাছুই তিব্বতের বৃহত্তম পণ্যদ্রব্য পরিবহন কেন্দ্রে পরিণত হয়। তিনি বলেছেন, 'ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ে চালু হওয়ার পর নাছুই'র অর্থনীতি অনেক উন্নীত হচ্ছে। আমরা আধুনিক পণ্যদ্রব্য পরিবহন শিল্প উন্নয়নের জন্য ১.৫ বিলিয়ন ইউয়ান রেনমিনপি দিয়ে নাছুই রেল স্টেশনে ৫৩৩ হেকটরের একটি বিরাট বহুমূখী পণ্যদ্রব্য পরিবহন কেন্দ্র নির্মাণ করবো। ২০০৮ সালের পয়লা অক্টোবর ব্যবহৃত হবে। এটি নাছুই'র অর্থনীতি ও সমাজ উন্নয়নের অভূতপূর্ণ সুযোগে পরিণত হবে।'

    ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ে তিব্বতের পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে। আগে বেশির ভাগ পর্যটক গাড়ীতে ও হাতাহাতি তিব্বতে আসেন। কিন্তু এখন অধেক থেকে অধেকতর পর্যটক রেলওয়ের মাধ্যমে তিব্বতে ভ্রমণ করেন। আগে ঋতু ও আবহাওয়া তিব্বতের পর্যটন শিল্পের ওপর অনেক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কিন্তু এখন রেলওয়ের সুবিধার কারণ পর্যটকের সংখ্যা অনেক বেড়েছে।

    তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের পর্যটন ব্যুরোর পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, এ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে তিব্বতে আসা পর্যটকের পার্সন টাইম ও পর্যটন শিল্পের মোট আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় শতকরা ৩০ ভাগ বেশি। পর্যটকরা তিব্বতের বৈশিষ্ট্য দৃশ্য পরিদর্শনের পাশাপাশি তিব্বতের ঐতিহ্যিক সংস্কৃতিও প্রচার করেছে।

    ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ে তিব্বতের অর্থনীতি উন্নয়ন ত্বরান্বিতের পাশিপাশি চীন সরকার তিব্বত পার্বত্যদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের সুরক্ষা জোরদার করেছে। তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের পরিবেশ সুরক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক চাং ইয়ংচে বলেছেন, তিব্বত এ সম্বন্ধে পরিবেশ সুরক্ষার কড়াকড়ি ব্যবস্থা নিয়েছে। তিনি বলেছেন, 'ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ে চালু হওয়ার আগেই আমরা পরিবেশের সমস্যা ও ব্যবস্থা গবেষণা শুরু করি। ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ে চালু হওয়ার পর উত্পাদন ও পর্যটন শিল্প উন্নয়ন এবং যাত্রা ও পণ্যদ্রব্যের পরিবহনের বাড়ানোর সমস্যা মোকাবেলার জন্য আমরা পরিকল্পনা প্রণয়নের পর্যায়েও পরিবেশের ওপর নেতিবাচক মূল্যায়ন করি। আমরা আরো উচ্চ পর্যায়ে ও আরো আগে পরিবেশের সুরক্ষা করি।'

     যোগ্যতা, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি ও পরিবেশ সুরক্ষার ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ে তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করছে। ২০১০ সাল পর্যন্ত চীন সরকার ৭০ বিলিয়ন ইউয়ান রেনমিনপি পুঁজিবিনিয়োগ করে ছিংহাই-তিব্বত রেলওয়ের অন্যান্য ১৮০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নির্মাণ ও তিব্বতের কৃষক এবং বশুপালকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করবে। আমরা বিশ্বাস করি, তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের আগামীকাল আরো সুন্দর হবে।