v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-08-08 20:52:25    
চীনে লেখাপড়া করার পর নিজের দেশ উন্নয়ন করবো--লাউস ছাত্রী ওয়াংমানী আলোন

cri

    ২০০২ সালে লাউসের ছাত্রী ওয়াংমানী আলোন চীনে এসে লেখাপড়া করতে শুরু করেছে । তার চীনে আসার সবচেয়ে বড় আশা হল চীনের উন্নত অর্থনৈতিক তত্ত্ব শিখে লাউসের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নিজের অবদান রাখা ।

    ২০০২ সালে আলোন চীনে আসার পর বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থী হিসেবে দক্ষিণ পশ্চিম চীনের কুয়াং সি প্রদেশের কুয়াং সি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার গণিত শিখছে । এ বছরে সে ব্যাচেলার ডিগ্রী পেয়েছে । কুয়াং সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর সে আবার ইয়ুন নান প্রদেশের ইয়ুন নান বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ক মাস্টার ডিগ্রী পড়ার আবেদন জানিয়েছে । কেন এত পরিশ্রমে লেখপড়া করে ? এ প্রশ্নের উত্তরে সে বলেছে :

    কারণ লাউসের অর্থনীতি ততটা উন্নত নয় । তাই আমি চীনের উন্নত অর্থনৈতিক তত্ত্ব শিখতে চাই । আমি চীনকে আরো বেশি জানতে চাই , তা ছাড়া , আমি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কিত কিছু তত্ত্বও শিখতে খুবই আগ্রহী । এ ক্ষেত্রে ইয়ুন নান প্রদেশের অনেক সুবিধা আছে , তা ছাড়া , ইয়ুন নান আমাদের দেশের প্রতিবেশী । আমার জন্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করতেও অনেক সুবিধা , তাই আমি ইয়ুন নান বিশ্ববিদ্যালয়কে বাছাই করেছি ।

    আলোন মনে করে , ইয়ুন নান বিশ্ববিদ্যালয়ের সুদীর্ঘ ইতিহাস ও সুষ্ঠু লেখাপড়ার পরিবেশ তাকে আকর্ষণ করেছে । ইয়ুন নান বিশ্ব

বিদ্যালয় দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে সবচেয়ে আগেই প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম । এ বিশ্ববিদ্যালয়ও ইয়ুন নান প্রদেশের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বহুমুখী বিশ্ববিদ্যালয় । আরো আকর্ষণীয় বিষয় হল ইয়ুন নান প্রদেশে অনেক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয় দেশের প্রতিবেশী । তাই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয় ছাত্রছাত্রীদের কাছে ইয়ুন নান বেশ আকর্ষণীয় । আলোন বলেছে , যদিও সে এখন বিদেশে লেখাপড়া করে এবং থাকে , তবে সে এখানকার জীবনের সঙ্গে খুব ভালোভাবে খাপ খাইয়ে নিয়েছে । সে বলেছে

    ইয়ুন নান ও লাউসের রীতিনীতি এবং জীবনযাপের অভ্যাসের মিল আছে । তাই ইয়ুন নান এসে যেন নিজের বাড়ীতে আছি । খাবার অথবা জীবন ক্ষেত্রে দু'দেশের পার্থক্য খুব কম । বিশেষ করে ইয়ুন না প্রদেশের কিছু জায়গায় প্রায় একদম লাউসের মত । যেমন ইয়ুন নানের সি সুয়াং বান না , সেখানের আবহওয়া এবং রীতিনীতি প্রায় লাউসের মত । সেখানে চীনা হোক , লাউসের লোক হোক , চেহারার কোন পার্থক্যও নেই । সেখানে গিয়ে সত্যি যেন নিজের দেশে ফিরে গিয়েছি । আলোন সংবাদদাতাকে বলে , সি সুয়াং বান নায় লোকেরা তাকে জিজ্ঞেস করে যে , তুমি কি এখানকার মেয়ে ? আলোন ভালো চীনা ভাষায় এর উত্তর দিয়ে বলে , হ্যাঁ , আমি ইয়ুন নানের নাগরিক । সবাই তার কথা বিশ্বাস করে । তা আলোনকে খুশি করেছে । আলোনও নিজের দেশের মত এ জায়গাকে আরো পছন্দ করেছে ।

    যদিও আলোন খুব কম কথা বলে , তবে নিজের ভবিষ্যত সম্বন্ধে তার খুব বিস্তারিত পরিকল্পনা আছে । সে বলেছে :

    এখন অনেক চীনা লাউসে গিয়ে ব্যবসা করে । তাই অর্থনীতি বোঝা এবং চীনা ভাষা জানার মানব সম্পদের চাহিদাও দিনে দিনে বাড়ছে । তাই আমি অর্থনৈতিক বিষয় শিখতে খুবই আগ্রহী । আমার দেশ ও ইয়ুন নান প্রতিবেশী বলে যোগাযোগের সুবিধাও আছে । এত বেশি চীনারা লাউসে ব্যবসা করে , তা আমার জন্যও একটি সুযোগ । আমি চীনা ভাষা বলতে পারি , ভবিষ্যতে আরো কিছু অর্থনৈতিক বিষয় শিখলে আমার চাকরি খুঁজতে আরো সহজ হবে ।

    আলোন নিজের লক্ষ্যের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে । সে ভালোভাবে চীনে লেখাপড়ার অভিজ্ঞতা সার সংগ্রহ করেছে । সে বলেছে , চীনা শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়ার ক্ষেত্রে তাকে অনেক সাহায্য করেছে । লেখাপড়া ছাড়া জীবনে তার চীনা বন্ধু তাকেও অনেক সাহায্য করেছে । আলোন আমাদের সংবাদদাতার একটি উদাহরণ দিয়েছে । সে বলেছে , প্রথম ইয়ুন নান আসার সময় সে পুরোনো পাসপোর্ট নিয়ে ব্যাংকে একটি হিসাব খুলেছে । পরে পাসপোর্ট নতুন করে পরিবর্তন হয়েছে । তার নতুন পাসপোর্ট ও পুরোনো পাসপোর্টে তার নামের একটি অক্ষর আলাদা । এর জন্য সে ব্যাংকে টাকা নিতে পারে না । তখন তার হাতের টাকাও প্রায় শেষ । এ কঠিন সময়ে তার চীনা বন্ধু তাকে অনেক সাহায্য দিয়েছে । সে বলেছে :

    তখন আমার জন্য খুব কঠিন । কারণ আমি বিদেশি , তাই এ সমস্যার সমাধান বেশ কঠিন । আমার চীনা বন্ধু আমাকে অনেক সাহায্য করেছে । তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের এ কথা বলে , বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধানকেও বলে , পরে তাদের সাহায্যে বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে একটি পরিচয় প্রমাণ্য দিয়েছে । এ পরিচয় প্রমাণ্য নিয়ে আমি ব্যাংকে গিয়ে টাকা নিয়েছি । এ কাজ আমাকে খুব মুগ্ধ করেছে । তাদের সাহায্য ছাড়া আমি পরিকল্পনা করে পারি না আমি কিভাবে সে কঠিন সময় কাটাই ।

    সেপ্টেম্বর মাসে আলোন ইয়ুন নান বিশ্ববিদ্যালয়ে তার মাস্টার কোর্স শুরু করবে । সে তার লেখাপড়ার ওপর খুব আশাবাদী । সে বলেছে , আমার দেশের উন্নয়নের জন্য আমাকে ভালোভাবে লেখাপড়া করতে হবে ।