শান্তিপূর্ণ দায়িত্ব-২০০৭ নামে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্যদেশগুলোর সশস্ত্র বাহিনীর যৌথ সন্ত্রাসদমন সামরিক মহড়া ৯ আগষ্ট থেকে ১৭ আগষ্ট পর্যন্ত চীন ও রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে । মহড়ায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের বাহিনী ইতোমধ্যেই রাশিয়ায় পৌচেছে এবং ৬ আগষ্ট যৌথভাবে অনুশীলনের কাজ শুরু করেছে ।
৬ আগষ্ট সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্যদেশের সৈন্যরা হেলিকপ্টার , বোমারু বিমান , ছত্রীবাহিনীর ৭০টি পরিবহন বিমান ও কয়েক শ' ট্যাংক ও সাজোয়াগাড়ী নিয়ে যৌথ অনুশীলনে অংশ নিয়েছে । বিভিন্ন দেশের সৈনিকরা মিলিতভাবে ছত্রীবাহিনীর পর্যবেক্ষণ, গ্রাম অবরোধ , সাহায্যকারী শত্রুসৈন্যদের আঘাত হানা ও অবশিষ্ট শত্রুদের পিছু ধাওয়া ইত্যাদি বিষয়ক মহড়া অনুশীলন করেছে । অনুশীলন শেষে চীনা পক্ষের পরিচালক , চীনের গণ মুক্তি ফৌজের ডেপুটি চীফ অব জেনারেল স্টাফ সুই ছি লিয়ান বলেছেন, আজকের অনুশীলন হল আনুষ্ঠানিক মহড়ার প্রস্তুমূলক অনুশীলন । আমি মনে করি অনুশীলন সফল হয়েছে । আমরা রাশিয়া ও অন্যদেশের সৈনিকদের অনেক গুন লক্ষ্য করেছি , যা চীনের সৈনিকরা শিখতে পারে । এ ছাড়া অনুশীলনে অংশ নেয়া বিভিন্ন পক্ষের সহযোগিতা ভাল , আমা দের পূর্ব নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে ।
শান্তিপূর্ণ দায়িত্ব-২০০৭ হল সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা প্রতিষ্ঠার পর সবচেয়ে বড় যৌথ সামরিক মহড়া । এতে চীন , কাজাকস্তান , কিরগিজস্তান , রাশিয়া , তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তান যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নেয় । এ সামরিক মহড়া হল সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্যদেশগুলোর মিলিতভাবে নতুন হুমকির মোকাবেলা , আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষা , অভিন্ন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি তরান্বিত করা , সন্ত্রাসবাদ , বিচ্ছিন্নতাবাদ ও চরমপন্থী শক্তির বিরুদ্ধে আঘাত হানার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ । এ মহড়া অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে নয় বলে তাদের স্বার্থের কোনো ক্ষতি হবে না ।
সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা প্রতিষ্ঠার পর সদস্যদেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানরা সন্ত্রাসবাদ , বিছিন্নতাবাদ ও চরমপন্থী--এ তিনটি শক্তির বিরুদ্ধে আঘাত হানাকে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রের সহযোগিতার প্রধান বিষয় হিসেবে গ্রহণ করেন । দ্বিপক্ষীয় বা বহু পক্ষীয় যৌথ সন্ত্রাসদমন সামরিক মহড়া অনুষ্ঠান সদস্যদেশগুলোর নতুন হুমকি মোকাবেলার সামর্থ্য বাড়িয়েছে এবং পারস্পরিক সমন্বয়ের মান উন্নত করেছে ।
এবারের সামরিক মহড়া তিন পর্যায়ে বিভক্ত হয় । প্রথম পর্যায় হল রণকৌশল পরামর্শ পর্যায় । এ পর্যায়৯ আগষ্ট চীনের উরুমুচি শহরে অনুষ্ঠিত হবে । বিপুল সংখ্যক সশস্ত্র ব্যক্তি আসার খবর পেয়ে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্যদেশগুলোর নেতৃবৃন্দ পাল্টা আক্রমন চালানোর জন্য রাজনৈতিক বৈঠক করবেন । দ্বিতীয় পর্যায় ১১ আগষ্ট রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে । এ পর্যায়ে যৌথ সামরিক মহড়া চালান হবে । তৃতীয় পর্যায়ও রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে । ১৭ আগষ্ট ছয়টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা সামরিক মহড়া পর্যবেক্ষন করবেন । এ মহড়া টেলিভিশনে সারা বিশ্বে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে ।
চীনের মোট ১৬ শ' অফিসার ও সৈনিক এ সামরিক মহড়ায় অংশ নেবেন। চীন এই প্রথমবার বিভিন্ন বাহিনীর অফিসার ও সৈন্যকে সামরিক মহড়ার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছে । রাশিয়ার সৈন্যবাহিনীর কর্নেল এলিজবারাশভিলি ডমিট্রি বলেছেন , চীনা সৈনিকদের আচার আচরণ তার মনে ভাল ছাপ ফেলেছে । তিনি বলেছেন , চীনা সৈনিকরা সুশৃঙ্খল । আমাদের সম্পর্ক ভাল । আমি মনে করি এ সামরিক মহড়া চীন ও রাশিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ । এ মহড়া দু দেশের সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ করে তুলবে । আমি বিশ্বাস করি সামরিক মহড়া সফল হবে ।
চীনের বিশেষ বাহিনীর সৈনিক হান ছুন লেই সাংবাদিককে বলেছেন , তিনি ও তার সহযোদ্ধারা যৌথ সামরিক মহড়ার অপেক্ষায় রয়েছেন । তিনি বলেছেন , চীনা বাহিনীর সদস্য হিসেবে সামরিক মহড়ার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি । আমি চীনা গণ মুক্তি ফৌজ ও চীনা জনগণের মুখ উজ্জ্বল করার জন্য মহড়ায় জোর প্রচেষ্টা চালাব।
|