v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-08-06 20:27:48    
৩১ জুলাই-৬ আগস্ট, ২০০৭

cri
১) দক্ষিণ এশিয়ায় গত এক দশকে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় প্রায় আড়াই কোটি লোক বাস্তুহারা হয়েছে। বন্যায় ইতিমধ্যে এক হাজার ৪০০ লোকের মৃত্যু হয়েছে। ভারত,বাংলাদেশ ও নেপালের বন্যা পরিস্থিতি সবচেয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই সেখানে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দী লোকজনের জন্য নেই পর্যাপ্ত সাহায্য ও বিশুদ্ধ পানি।

    জাতিসংঘের শিশুকল্যাণ সংস্থা ইউনিসেফ এক বিবৃতিতে জানায়,বন্যার কারণে সম্প্রতি ভারতে প্রায় এক হাজার ১০০ লোকের মৃত্যু হয়। ইউনিসেফ জানায়, ভারতে বন্যাকবলিত ১৩৪টি জেলায় সরকারি হিসাবেই এ পর্যন্ত এক হাজার ১০৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

    ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআই এক প্রতিবেদনে জানায় , বন্যায় উত্তর প্রদেশ,বিহার ও আসাম রাজ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এ তিনটি রাজ্যে এখন এক কোটি লোক বন্যাকবলিত। আসামে ৫৫ লাখ এবং উত্তর প্রদেশে ১৪ লাখ লোক বাস্তুহারা হয়েছে।

    প্রতিবছর জুন থেকে৩ সেপ্টেস্বর পর্যন্ত মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় বন্যা দেখা দেয়। এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হয়েছে এবং বন্যা পরিস্থিতিও ভয়াবহ। বিহার রাজ্যের মুখ্য সচিব এ কেচৌধুরী টেলিফোনে বার্তা সংস্থাকে বলেন, "গত ৩০ বছরে এ রাজ্যে এত ভয়াবহ বন্যা হয়নি।"রাজ্যের একাধিক সরকারি কর্মকর্তা জানান, গত ৪ আগষ্টই বিহারে ২৪ জনের মৃত্যু হয়। বন্যায় ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও ফসল নষ্ট হয়ে প্রায় ৪৫ কোটি রুপির ক্ষয়ক্ষতি হযেছে।

    বন্যার পানিতে দিল্লির অনেক এলাকা ডুবে গেছে। কোথাও কাথাও লোকজন ঘরের চালে বা বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে এলাকা ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেয়।

    বাংলাদেশেও বন্রা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। দেশের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পর্যন্ত সেখানে ২০০ জনের মতো লোকের মৃত্যু হযেছে। সরকারের একজন কর্মকর্তা জানান, ২০০৪ সালের চেয়ে এবারের বন্যা অনেক ভয়াবহ। এতে প্রায় ৭৫ লাখ লোক সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে।

    নেপালে বন্যা ও ভূমিধসে এ পর্যন্ত ৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভারত সীমান্তবর্তী তরাই সমতলভূমি অঞ্চলে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

২) নেপালে গত ৪ অগষ্ট নতুন জাতীয় সংগীত চালু হয়েছে। নতুন জাতীয় সংগীতে রাজা জ্ঞানেন্দ্রর গুণকীর্তনের কোনো কথা নেই।

    নেপালের সংগীতি ও পর্যটনবিষয়কমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং জাতীয় সংগীতের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন,আগের জাতীয় সংগীতে সামন্তবাদের প্রশংসা করা হতো। ওই সংগীত বাদ দেওয়া হয়েছে। নেপালে বৈচিত্র্যের প্রতিনিধিত্বকারী নতুন জাতীয় সংগীত উপহার দেওয়ার জন্য আমি সরকারের পক্ষ থেকে সংগীতের রচয়িতা ও সুরকারকে অভিনন্দন জানাই।

    পার্লামেন্ট ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, সরকারি কর্মকর্তা ও প্রচারমাধ্যমের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে জাতীয় সংগীতের এক মিনিট ছয় সেকেন্ডের সুর বাজানো হয়।

    আগের সংগীতের মুরুতে রাজার গুণকীর্তনের অনেক কথা থাকলেও নতুন সংগীতে তা নেই। নতুন জাতীয় সংগীত শুরু হয়েছে আমরা নেপাল ,শত সহস্র ফুলের একটি মালা-এ ধরনের কথা দিয়ে।

    নতুন জাতীয় সংগীতের রচয়িতে ৩০ বছর বয়সী আইনজীবী প্রদীপ কুমার রাই এবং এর সুর করেছেন দেশের বিশিষ্ট সুরকার আম্বর গুরুং।

৩) ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি ব্যাপারে জাপান সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। পাশাপাশি বলেছে, এই পরমাণু চুক্তিবাস্তবায়নে নয়াদিল্লকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রমাণ দিতে হবে এবং কিয়োটো চুক্তি অনুসারে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে হবে। ফিলিফাইনের রাজধানী ম্যানিলায় আয়োজিত এশিয়ায় পরমাণু নিরাপত্তা বিষয়ক এক সম্নেলনে জাপানি প্রতিনিধি এ সতর্ক প্রতিক্রিয় ব্যক্ত করেন।

    এশিয়ায় পরমাণু নিরাপত্তা সম্নেলনে অংশগ্রণকারী জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মিত্সুউ সাকাবা বলেন, ভারত জ্বালানি শক্তিতে আত্ননির্ভর হোক জাপান তা চায়। কিন্তু পরমাণু অস্ত্রধর এবং বিশ্বে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনকারী অন্যতম প্রধান দেশ হিসেবে ভারতকে পরমাণু চুল্লি পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পরিচয় দিতে হবে। অন্যদিকে, ২০১২ সালে কিয়োটো প্রটোকলের কার্যকারিতা শেষ হওয়ার সঙ্গ সঙ্গে দেশটিকে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসর লক্ষণীয় উন্নতি সাধনের অঙ্গীকার করতে হবে।

    মিত্সুউ সাকাবা আরো বলেন, জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আণবিক বোমায় আত্রান্ত দেশ হিসেবে সবসময়ই পরমাণু প্রযুক্তির সামরিক ব্যবহারের বিপক্ষে। তাই জাপান প্রত্যাশা করে, ভারত পরমাণু প্রযুক্তির সামরিক প্রতিযোগিতায় নামবে না। উল্লেখ্য, ভারত এখনো পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ সনদে(এনপিটি) স্বাক্ষর করেনি।

৪) দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে পরিবেশ দূষণের কারণে হিমালয়ের হিমবাহ গলে যাওয়া ত্বরান্বিত হচ্ছে। ফলে চীন ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের নদীগুলোর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়েছেন। ব্রিটিশ জার্নাল 'নেচারে' এ ব্যাপারে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এশিয়ার তথাকথিত হালকা তামাটে মেঘের কারণেত্র মাগত গ্রিন হাউস গ্যাস সৃষ্টি হচ্ছে। এর কারণে গত ৫০ বছর ধরে হিমালয় উষ্ণ হচ্ছে। ফলে তিব্বতের ৪৬ হাজার হিমবাহ দ্রুত গলে যাচ্ছে। এটি পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম বরফের স্তূপ। হিমবাহ বা গ্লেসিয়ার গলার কারণে ইতিমধ্যে হিমালয়ের ভাটির দেশগুলোতে বন্যা দেখা দিচ্ছে। তবে হিমবাহ সংকুচিত হলে আরো ভয়জ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। দেখা দেবে ভয়াবহ খরা । এএফপি।

    যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ত্রি পস ইনস্টিটিউশন অব ওশেনোগ্রাফির অধ্যাপক বীরভদ্রন রামনাথনের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী এই গবেষণা পরিচালনা করেন। তারা বলেন, দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু অংশে বারখানার ধোঁয়া, জ্বালানি স্থাপনা, কাঠ ও তেল পোড়ানোর কারণে পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য কার্বন গ্যাসকে বেশি দায়ী করা হয়। তবে এ ধরনের দূষণ অর্থাত্ হালকা তামাটে গ্যাস তৈরির কারণ এখন পর্যন্ত পরিষ্কার নয়। বিশেষভাবে অ্যারোসল ও কয়লার কারণে আকাশে একটি আবরণের সৃষ্টি হয়। এর ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। বিজ্ঞানী রামনাথনের দল এই অঞ্চলের তাপমাত্রা, মেঘ, আর্দ্রতা এবং অ্যারোসলের সাত্রা নির্ণয়ে বিমান ব্যবহার করেন। মালদ্বীপের হানিমাধু দ্বীপ থেকে দূর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ওই বিমান উড়ান হয়। ২০০৬ সালেন মার্চ মাসে তারা ১৮ বার অভিযান চালায়। বিমানগুলো হালকা তামাটে মেঘের মাঝ দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় তারা দেখতে পেয়েছেন এউ মেঘের কারণে এই এলাকার বাতাসে প্রায় ৫০ ভাগ তাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর কারণ হচ্ছে মেঘ কালো হওয়ায় সূর্যালোক শোষল করে য়লে ভূপৃষ্ঠে তাপ বৃদ্ধি পায়। বিজ্ঞানীরা গ্রিন হাউস গ্যাস ও হালকা তামাটে মেঘের উপাত্ত নিয়ে আবহাওয়া পরিবর্তনে মার্কিন কম্পিউপার মডেলে বিশ্লেষণ করেন।

    বিজ্ঞানী রামনাথান বলেন, উষ্ণায়নের জন্য হালকা তামাটে মেঘ অর্ধেক দায়ী। তিনি বলেন, 'এটা অবশ্য আতজ্কজনক, তবে আমি একই সঙ্গে এর ইতিবাচক দিকটিও দেখছি, কারণ এটি এই ধাঁধা থেকে বের হওয়ারও পথ দেখাচ্ছে'। তিনি বলেন, এই এলাকার শতকরা ৬০ ভাহ দূষণ রান্নার জন্য জৈব জ্বালানি ব্যবহারের কারণে হয়ে থাকে। তারা যদি বোতলজাত গ্যাস ও সৌর চুল্লি ব্যবহার করে তাহলে এ হ্রাস সম্ভব।

    জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির প্রধান বলেন, নতুন এই গবেষণার পর এ বছর ডিসেম্বরে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠেয় আবহাওয়া পরিবর্তন কনভেনশনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বড় ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে। (ইলিয়াস খান)