কাজাখ জাতি'র গায়িকা মা ই লা'র জন্ম চীনের সিনচিয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে। তার নামের সঙ্গে সিন চিয়াংয়ের আরেক জন বিখ্যাত গায়িকার নামের মিল রয়েছে। এই নিয়ে তিনি বলেছেন:
"আমার বাবা একজন গীতিকার। মা একজন গায়িকা। এমন একটি পরিবারে জন্ম নেয়ার পর আমার বাবা বলেছিলেন, বড় হওয়ার পর সেও গায়িকা হবে। শোনো তার কাঁন্নার আওয়াজ কত বড়! বাবা বলেছেন, একজন খুব বিখ্যাত গায়িকা আছে, আর নাম মা ই লা। তাই আমাকেও তিনি এই নাম দিয়েছেন। তিনি সব সময় বলেন, তুমিও একজন গায়িকা হবে। তাই মা ইলা'র গান শুনে শুনে আমিও এ সব গানগুলো গাইতে শুরু করেছি।"
৮ বছর থেকে বাবা'র কাছ থেকে মা ই লা পিয়েনো বাজানো শিখতে শুরু করেন। ১৯৮২ সালে তিনি সিনচিয়াং ইলি আর্ট স্কুলে পিয়েনো শিখেন। ১৯৮৪ সালে তিনি কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু জাতিসমূহ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে কন্ঠসঙ্গীত বিষয় নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি প্রথম বার দ্বিতীয় সংখ্যালঘু জাতিসমূহের সংগীত প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন, এবং এতে দ্বিতীয় হয়েছেন। ১৯৮৮ সালে পড়াশোনা শেষে তিনি শিক্ষক হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। ২০০২ সালে মা ই লা ফ্রান্সের গ্রেন্ড থিয়েটারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। তিনি "দি ইলিক্সার অব লাভ" অপেরায় প্রধান অভিনেত্রী হিসেবে অংশ নিয়েছেন। এই নিয়ে মা ই লা বলেছেন:
"আমি এতে আডিনা নামক একজন মহিলা'র চরিত্রে অভিনয় করি। এই অপেরার সকল চরিত্রই খুব মজার। অপেরা শেষ হলেও দর্শকরা থেকে যায়, যেতে চান না। এই অপেরা পুরোনো, কিন্তু আমরা আধুনিককালের মতো তাকে তুলে ধরেছি। তা খুব জনপ্রিয়। দর্শকরা আমার অভিনয় খুব পছন্দ করে।"
বিদেশী ভাষায় অপেরায় অভিনয় করা আসলে একটি খুব কঠিন কাজ। মা ই লা প্রতিদিন সকাল দশটায় থিয়েটার গিয়ে কন্ঠ চর্চা করেন, দুপুরে একটু বিশ্রাম নেয়ার পর বিকেলে আবার তিন ঘন্টা চর্চা করেন। শুধু এমনিভাবেই অপেরায় অভিনয় করার সময় সবচেয়ে ভাল অবস্থায় থাকা যায়। এটা আসলে খুব কঠিন। এই নিয়ে মা ই লা বলেছেন:
"খেলোয়াড়ের মতো প্রতিদিন এমনিভাবে চর্চা করতে হবে। এক দিন না করলে আমি নিজেই পার্থক্য বোধ করতে পারি। দুই দিন না করলে প্রতিবেশীরা শুনতেও বুঝতে পারবে। যদি তিন দিন চর্চা না করি তাহলে দর্শকরাও বুঝতে পারবে। এবং ভাষাও আমার জন্য তখন একটি সমস্যা হবে। অন্যান্য গায়িকা সমুদ্রের পাশে বিশ্রাম নেয়ার সময় আমি সেই সময় ইংরেজী ও ফরাসী ভাষা শিখি।"
অপেরায় অভিনয় করার পাশা পাশি, মা ই লা কয়েক বার চ্যারিটি অনুষ্ঠানে অভিনয় করেছেন। তিনি এসব অভিনয়ের টিকিটের আয় অক্ষম ও এতিম শিশুদের দিয়ে দিয়েছেন। মাইলা বলেছেন, অপেরায় অভিনেত্রী হতে পারা একটি খুব সৌভাগ্যের ব্যাপার। তাই তিনি সমাজের জন্য কিছু কাজ করতে চান। মাইলা বলেছেন:
"আমার মনে হয় একজন মানুষ হিসেবে , বিশেষ করে একজন গায়িকা হিসেবে চ্যারিটি অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া হলো আমার দায়িত্ব। আমার চ্যারিটি অনুষ্ঠানে কাজ করার সামর্থ্য আছে, কেন আমি করবো না? অনেকের সাহায্যে আমি আজকের সাফল্য পেয়েছি। তাই আমি অন্যকে সাহায্য দিতে চাই। একটি কথা আছে যে, এক হাজার বছরের মধ্যে মান দুএকজন সত্যিকারের গায়িকা জন্ম নেয়। আমার মনে হয় আমি যে গান গাইতে পারি, এটা হলো আমার সৌভাগ্য। আমার উচিত যে আমার গানের মাধ্যমে অন্যকে আনন্দ আনন্দ দেয়া। এটা আমার দায়িত্ব।"
|