v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-07-30 21:02:23    
নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে বজায় রাখবেন

cri
    ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন ২৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। এবার হলো তাঁর প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর। রওয়ানার আগে তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, ব্রিটেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখবে। পাশা পাশি তাঁর মুখপাত্রও সংবাদদাতাদের বলেন, ব্রাউন এবারের সফরে ব্রিটিশ বাহিনীর ইরাক থেকে সরিয়ে নেয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করবেন না। ইরাক বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বসরার পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে না নেয়া পর্যন্ত ব্রিটিশ বাহিনী অব্যাহতভাবে সেখানে মোতায়েন থাকবে। এই মন্তব্য ব্রাউন সরকারের মার্কিন নীতি পরিবর্তনে আশাবাদীদের অবাক করে দিয়েছে।

    সবাই জানে যে, টনি ব্লেয়ার প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই ব্রিটেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে এসেছে। এবং নির্বাচনে ব্লেয়ারের ব্যর্থ হওয়ার প্রধান কারণ এই যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করলেও ইরাক যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। জনমত হলো ব্রাউন নির্বাচিত হওয়ার পর নিশ্চয়ই ব্লেয়ারের কাছ থেকে শিক্ষা নেবেন এবং বুশের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখবেন। এমন হলে দু'দেশের সম্পর্ক নিশ্চয়ই কিছুটা শিথিল হবে। এবং ইরাক নীতির পুনবিন্যাস হবে এই পরিবর্তনের প্রথম পদক্ষেপ। কিন্তু ব্রাউনের প্রকাশভাঙ্গি স্পষ্টভাবে এই অনুমানের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ব্রাউনের প্রকাশভঙ্গি সম্ভবতঃ নিম্নে উল্লেখকৃত কয়েকটি কারণে ঘটেছে।

    প্রথমতঃ ব্রিটিশ সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা অনেক বার এই মত প্রকাশ করেছেন যে, ব্রিটেন-মার্কিন সম্পর্ক সম্ভবত পরিবর্তন হবে। সংবাদ মাধ্যম তাদের মতামত ব্রাউনের ব্রিফিং হিসেবে গ্রহণ করেছে। এবং তাদের মতামতে যুক্তরাষ্ট্র ভিষণ উদ্বিগ্ন। ব্রিটেন আগে ইরাক থেকে সরে যাবে এই ভয়ে মার্কিন সরকারের ব্রাউনের স্পষ্ট মতামত জানা জরুরী। এই চাপে ব্রাউন তাঁর মার্কিন সফরের সময় সেপ্টেম্বর মাস থেকে জুলাই মাসের শেষ দিকে পরিবর্তন করেছেন। এবং স্পষ্টভাবে বলেছেন, তাঁর নেতৃত্বে ব্রিটেন-মার্কিন সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হবে। যাতে মার্কিন পক্ষের উদ্বেগ কমে যায়।

    দ্বিতীয়তঃ ব্রাউন নির্বাচিত হওয়ার পর এক মাসের মধ্যেই সংস্কার কার্যক্রম চালানোয় তা তাঁর জন্য সুনাম এনে দিয়েছে। সম্প্রতি ইংল্যান্ডে ৬০ বছরের মধ্যে বৃহত্তম বন্যা ঘটেছে, এতেও ব্রাউন তাঁর সামর্থ্য দেখানোর সুযোগ পেয়েছেন। ব্রিটেনের "দি ডেইলী টেলিগ্রাফ পত্রিকার" ২৭ জুলাই-এর সর্বশেষ জনমত জরীপ থেকে দেখা গেছে, ব্রাউনের সমর্থনের হার ৪১শতাংশে পৌঁছেছে, তা রক্ষাশীল পার্টির নেতা ডেভিড ক্যামেরুনের চেয়ে ৯ শতাংশ বেশি। তা হলো ইরাক যুদ্ধের পর লেবার পার্টির সবচেয়ে ভাল অবস্থা। এই পটভূমিতে ব্রাউন সত্যি কথা এবং স্পষ্টভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ করার কথা বলার সাহস পেয়েছেন।

    তাছাড়া, কারণে লেবার পার্টি'র উপর ইরাক যুদ্ধের কুপ্রভাব ব্লেয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাবার পর অনেক কমেছে। কয়েক'শ বছর ধরে উপনিবেশ স্থাপনের পর ব্রিটিশরা ইরাক থেকে বাহিনী সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে আর মনোযোগ রাখতে আগ্রহী নয় । ব্রাউন নির্বাচিত হওয়ার আগে ইরাকে গিয়ে তদন্ত করেছেন, তাই জনমত মনে করেছে তার ইরাক নীতি পরিবর্তনের ইচ্ছা আছে। কিন্তু এই চাপ যখন তাঁর শাসন ও রাজনৈতিক মর্যাদার জন্য তেমন গুরুতর হুমকি নয়, তখন ইরাক নীতি পরিবর্তন তার জন্য আর তেমন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নয়। এখন তাঁর মতে ব্লেয়ারের ইরাক নীতি অব্যাহত রাখা হলো যুক্তরাষ্ট্রকে বিরক্তিকর অবস্থায় না ফেলার একটি ভাল পদ্ধতি।

    বিশ্লেষকরা আরো বলেছেন, ব্রাউন নিজেই মার্কিন ইতিহাস ও রাজনীতির উপর খুব আগ্রহী এবং অনেক মার্কিন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তিনি ব্লেয়ারের চেয়ে আরো বেশি মার্কিন-ঘেষা। যদি বলা যায়,ব্লেয়ারের ব্যর্থতার কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বেশি সৌজন্যপূর্ণ, তাহলে এই ক্ষেত্রে ব্রাউন ব্লেয়ারের চেয়ে আরো সুবুদ্ধিসম্পন্ন। তিনি যেমন যুক্তরাষ্ট্রকে সন্তুষ্ট করতে পারেন, তেমনি ব্রিটেনের মর্যাদা বজায় রাখতে পারেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন ব্রাউন সরকার ব্রিটেন-মার্কিন সম্পর্ককে পেছনে নিয়ে যাবে না।