২২ জুন চীন-রাশিয়া মৈত্রী যাত্রার চীন সফরের সাংবাদিক দল পেইচিংয়ে ফিরে এসেছে । ২৯ দিনের সাক্ষাত্কারে চীনের সাধারণ লোকজনের সদগুণ এবং আন্তরিকতা এসব রুশ সাংবাদিকদের হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলেছে । তারা বলেছে যে , নিজের রিপোর্টের মাধ্যমে দু'দেশের জনগণের উপলব্ধি ও মৈত্রী বাড়বে ।
সাংবাদিক দল পেইচিংয়ে ফিরে আসার পর পরই রাশিয়ার এন টি ভির সাংবাদিক শাভালিয়েভ এ টি ভির একটি অভ্যন্তরিণ সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য দেশে ফিরে গিয়েছেন । তিনি এ সম্মেলনে বক্তৃতাও দিয়েছেন । বক্তৃতায় তিনি তার এবারের চীন সফরের অভিজ্ঞতা তাঁর রুশ কর্মীদের জানিয়েছেন । এবার চীন সফরের সাক্ষাত্কারে শাভালিয়েভ চীনের অনেক সাধারণ লোকজনের সাক্ষাত্কার নিয়েছেন । ভোরবেলায় শরীর চর্চা করার চীনা বৃদ্ধদের সঙ্গে তিনি ব্যয়াম করার টি ভি অনুষ্ঠান রাশিয়ায় প্রচার করার পর রুশ জনগণের বিরাট আগ্রহ জেগেছে । তাই রাশিয়ার এন টি ভি সব সাংবাদিকদের আগেই দেশ ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । যাতে তিনি সব কর্মীদেরকে সাক্ষাত্কারের সাফল্যের পদ্ধতি ভাগাভাগি করতে পারেন । শাভালিয়েভ বলেছেন :
সাক্ষাত্কারে চীনের সাধারণ লোকজন আমার হৃদয়ে খুব ভালো ছাপ ফেলেছে । প্রত্যেক প্রদেশে বা শহরে আমি যে চীনা লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি , তারা সবাই খুব সদগুণসম্পন্ন এবং আমাদেরকে সাহায্য দিতে ইচ্ছুক ।
রাশিয়ার পি টি পির ক্যামেরাম্যান নিকুলিনও মনে করে চীনারা খুব বন্ধুত্বপূর্ণ । তিনি বলেছেন :
এখানকার লোকেরা সবাই খুব ভালো , অতি ভালো । আমি এস্থাল পছন্দ করি । চীনারা খুব উষ্ণ হৃদয়ের এবং সবসময় তাদের মুখে হাসি লেগে থাকে ।
চীন-রাশিয়া মৈত্রী যাত্রার চীন সফরের রুশ সাংবাদিক দলের প্রধান কিরিলোভ বলেছেন, চীনারা রুশ সাংবাদিকদের খুব বন্ধুত্ব দিখিয়েছে । তবে সাক্ষাত্কারে তিনিও দেখেছেন যে চীনের কিছু কিছু লোক রাশিয়া সম্পর্কে বেশি জানে না । তিনি বলেছেন :
চীনের কুই চৌ প্রদেশের একজন তরুণ আমাকে বলেছে যে , খুব খুশি আপনাদের মেক্সিকো থেকে আসা অতিথিদের সঙ্গে পরিচিত হয় । আমি তাকে জিজ্ঞেক করি যে মেক্সিকো কোথায় । সে বলেছে , মেক্সিকো রাশিয়ার রাজধানী । আসলে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো , মেক্সিকো নয় ।
এ দিকে রাশিয়ার "রাশিয়া-চীন : ২১ শতাব্দীর" সাংবাদিক ওলগা ইলিকায়েভা চীন সফরের গাড়ী দলের ১৫ নং গাড়ির ড্রাইভার হুয়াং চিয়ান সেংয়ের স্ত্রীর সাক্ষাত্কার নিয়েছেন । তিনি অনুভব করেছেন যে , সাংস্কৃতিক পার্থক্যের কারণে রাশিয়ান ও চীনাদের পারস্পরিক উপলব্ধির জন্য বাধার সৃষ্টি করবে । ওলগা বলেছেন :
আমি ১৫ নং গাড়ির ড্রাইভারের স্ত্রীর সাক্ষাত্কার নিয়েছি । আমি জিজ্ঞেস করেছি যে কেন সঙ্গে সেএসেছে , নিশ্চয়ই সে আসতে চায় , তাই না ? তবে সে আমাকে বলেছে , আমাদর মেয়ে তার বাসার কথা খুব মনে পড়ে , আমার কোন উপায় নেই , তাই আমারও আসতে হলো । ওলগা বলেছেন , যদি আমি তার কথার মত অনুবাদ করি , তাহলে রাশিয়ানরা মনে করবে যে , এ স্ত্রী তার স্বামীকে ভালোবাসে না । তবে আসলে তা ঠিক নয় । তাই না ? কারণ এ স্ত্রী ভালোবাসার কথা বলতে লাজুক , আসলে সে তার স্বামীকে খুব ভালোবাসে , তার স্বামীর কথা খুব মনে পড়ে বলেই সে সঙ্গে এসেছে । আসলে বিভিন্ন সাংস্কৃতি প্রেক্ষাপটের কারণে লোকজনের চিন্তাধারাও আলাদা ।
এ কাজ থেকে ওলগা সাংবাদিকের দায়িত্ব আরো স্পষ্টভাবে বুঝেছে । তা হল রুশ জনগণকে সঠিকভাবে রাশিয়ার বৃহত্তম প্রতিবেশীর কথা জানতে হবে এবং আরো ভালোভাবে দু'দেশের জনগণের উপলব্ধি বাড়ানোর জন্য প্রচেষ্টা চালানো । তিনি বলেছেন
রাশিয়া ও চীনের বয়স্ক তাদের সম্পর্ক খুব ভালো । এখন দু'দেশের তরুণ তরুণীদের পারস্পরিক উপলব্ধি একটু কম । আমি আশা করি আমাদের এবারের চীন সফর এবং আমাদের রিপোর্টের মাধ্যমে আরো বেশি রুশ জনগনকে চীন কেমন একটি স্বপ্নেরদেশ এ তথ্য জানাবো । কারণ আমরা পরস্পরের বৃহত্তম প্রতিবেশী ।
পারস্পরিক উপলব্ধি বাড়ানো শুধু দু'দেশের জন্য সহায়ক তাই নয় , বরং দু'দেশের জনগণের মৈত্রীও বাড়াবে । আশা করি চীন ও রাশিয়ার জনগণের মৈত্রী আরো গভীর এবং আরো দৃঢ় হবে । (শুয়েই ফেই ফেই)
|