আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের জন্য স্বাস্থ্যের ক্ষতিকর কয়েকটি ভুল পদ্ধতির কথা বলবো ।
১. নাস্তা না খাওয়া
জার্মানীর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ৭০০০ নারী ও পুরুষের ওপর দীর্ঘকাল ধরে গবেষণার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে, সবসময় নাস্তা না খাওয়ার সংখ্যা ৪০ শতাংশ । বাকী ৬০ শতাংশ লোকের চেয়ে তাদের গড়পড়তা বেঁচে থাকার সময় আড়াই বছরের কম । আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০ থেকে ৯০ বছর বয়স্ক লোকের ওপর গবেষণা থেকে জানা যায় যে, তাদের দীর্ঘায়ুর বৈশিষ্ট্য হল প্রতিদিন সকালে পুষ্টিকর নাস্তা খাওয়া এবং নাস্তার মধ্যে যব, সবজি, ফল ও দূধসহ বিভিন্ন খাবার থাকা ভালো ।
২.রাতে অনেক ধরনের খাবার খাওয়া
সন্ধ্যাবেলায় রক্তের মধ্যে ইনসুলিনের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বেড়ে যায় । ইনসুলিন রক্তের চিনিকে মেদ রূপান্তর করতে সক্ষম । এ কারণে দীর্ঘকাল ধরে রাতে অনেক খাবার খেলে আপনারা সহজভাবেই মোটা হয়ে যাবেন । এর পাশাপাশি সবসময় রাতে অনেক ধরনের খাবার খেলে শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ারও ক্ষতি করবে এবং সহজভাবে অনিদ্রা রোগে আক্রান্ত হয়ে যাবেন। কর্মব্যস্ত লোকজন নাস্তা ও লাঞ্চ কোনটাই ভালভাবে খেতে পারেন না । শুধু রাতে বাড়ি ফিরে আসার পর আরামদায়ক খাবার খেতে পারেন । সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে রাতের খাবার খেলে কিডনীতে পাথর আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় এবং এ সময় টাটকা সবজি ও ফলসহ বিভিন্ন ধরনের কোষপুঞ্জজাত খাবার খাওয়া ভালো । ডিম ও মাংস কম খাওয়া ভালো এবং রাতের খাবারের সময় কম খাবার খাওয়া শরীরের সুস্থ্যতার জন্য সহায়ক ।খাবারের পরিমাণ সারাদিনের খাবারের ৩০ শতাংশেরও চেয়েও কম হতে হবে ।
৩. সবসময় কফি পান করা
নারীরা যদি সবসময় কফি পান করেন তাহলে তাদের গর্ভবতী হওয়ার হার কফি না খাওয়া নারীদের চেয়ে ৫০ শতাংশ কম । তা ছাড়া সবসময় কফি পান করলে হৃদ রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার অনেক বেড়ে যাবে । কফির মধ্যে প্রচুর কাফেইন রয়েছে , তা হৃদযন্ত্রের স্বাভাবিক সামর্থ্যকে নষ্ট দেয় । গবেষণা থেকে জানা গেছে, প্রতিদিন ৫ কাপ বা আরো বেশি কফি পান করা লোকজন কফি পান না করা লোকজনের চেয়ে হৃদ রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার দু'গুণেরও বেশি এবং কফি পান করার সময় যত দীর্ঘ হবে হৃদ রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার তত বেশি হবে । ৪৫ থেকে ৬৯ বছর বয়সী ৮৫৮ জন হৃদ রোগীদের ওপর জরীপ চালিয়ে দেখা গেছে যে, প্রতিদিন ৫ কাপেরও বেশি কফি পান করা লোকদের রোগে আক্রান্ত হার কফি পান করে নি এমন লোকের চেয়ে ৭০ শতাংশেরও বেশি ।
৪. খাবারের পর ধুমপান করা
অনেক লোক খাবার খাওয়ার পর ধুমপান করতে পছন্দ করেন । তারা মনে করেন, এভাবে শরীরে আরো আরাম পান । আসলে এ পদ্ধতিটি খুবই ভুল । লোকজনের খাবার খাওয়ার পর পাকস্থলীর রূপান্তর ও রক্তসংবহন আগের চেয়ে দ্রুততর হয় । এ সময় ধুমপান করলে , ধুমপানের বিষাক্ত উপাদান আরো সহজভাবেই শরীরের রক্তে প্রবেশ করে এবং শরীরের সুস্থতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ।
৫. ফল ছাড়া কোনো খাবার না খাওয়া
নারীরা শরীর স্লিম করার জন্য সবসময় চাল,ময়দাসহ বিভিন্ন জৈব যৌগ না খেয়ে শুধু ফল খায় । যদিও ফল খাওয়ার মাধ্যমে রক্তের ভেতর মেদ বাড়ানো ও হৃদপিণ্ডের রক্ত সঞ্চালনসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম । কিন্তু দীর্ঘকাল ধরে শরীর প্রোটিনসহ বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদানের অভাব দেখা দেবে ।
৬. দ্রুতভাবে খাবার খাওয়া এবং কম পানি খাওয়া
অফিসে ব্যস্ত থাকার কারণে অনেক লোক জরুরী অবস্থায় দ্রুতভাবে নিজেদের লাঞ্চ শেষ করে এবং প্রতিদিন কম পরিমাণ পানি খায় । তা শরীরের জন্য খুব ক্ষতিকর । দ্রুতভাবে খাবার খেলে সহজভাবে মোটা হয়ে যাবেন এবং দীর্ঘকাল কম পানি খেলে শরীরে পানির উপাদান কমে যায় , সহজভাবেই রক্ত জমাট বেধে যায় । মস্তিস্ক, কিডনী ও রক্তনালীর রোগে আক্রান্ত হওয়ার হারও বেড়ে যাবে । এ কারণে বেশি পানি খাওয়া শরীরের স্বাভাবিক রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করবে ।
|