২৩ জুলাই 'ই.ইউ.'র সাংবিধানিক চুক্তি' সম্পর্কে নতুন চুক্তি বিষয়ক সরকারী সম্মেলন ই.ইউ.'র সদরদপ্তর ব্রাসেলসে শুরু হয়েছে । দু'বছর বন্ধ থাকার পর ই.ইউ.'র সংবিধান প্রণয়ন প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু হয়েছে ।
এদিন অনুষ্ঠিত ই.ইউ.'র পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলন সরকারী সম্মেলন শুরুর কথা ঘোষণা করেছে এবং নতুন চুক্তি প্রণয়নকারী ই.ইউ.'র পালাক্রমিক চেয়ারম্যান দেশ পর্তুগাল সম্মেলনে চুক্তির প্রথম খসড়া উত্থাপন করেছে । ই.ইউ. পরিষদের অনুমোদনে ই.ইউ.'র ২৭টি সদস্যদেশের আইন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত গ্রুপ ২৪ জুলাই প্রথম অধিবেশন আয়োজন করে সরকারী সম্মেলনের বাস্তব কাজ শুরু করবেন । সরকারী সম্মেলনের প্রধান কর্তব্য হচ্ছে নতুন চুক্তির বিষয় নিয়ে আইন ও প্রযুক্তি ক্ষেত্র সম্পূর্ণকরণের বিষয়গুলো ও নির্ধারণ করা । জুন মাসে বিভিন্ন দেশের ই.ইউ. শীর্ষ সম্মেলনে স্বাক্ষরিত নতুন চুক্তির মৌলিক নীতি ও বিষয় নিয়ে আলোচনা না করা । ১৮ অক্টোবর পর্তুগাল লিসবনে ই.ইউ.'র অনানুষ্ঠানিক শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করে নতুন চুক্তির চূড়ান্ত বিষয় নির্ধারণ করবে । যাতে ২০০৯ সালের জুন মাসে ইউরোপীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিভিন্ন দেশের অনুমোদন পাওয়া যায় এবং কার্যকর করা যায় ।
পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইস আমাদো সরকারী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছেন, বিভিন্ন জটিল চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়ার এ সময়কালে ই.ইউ.'র নিজের ব্যবস্থার সংস্কার ত্বরান্বিত করা প্রয়োজন । তিনি বলেছেন, ই.ইউ.র পালাক্রমিক চেয়ারাম্যান দেশ হিসেবে পর্তুগাল নির্দিষ্টভাবে ই.ইউ. পরিষদের অনুরোধে সরকারী সম্মেলনের অবাধ আয়োজনকে সুনিশ্চিত করবে এবং যতটুকু সম্ভব সুযোগের মাধ্যমে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন চুক্তি প্রণয়নের সাফল্যকে ত্বরান্বিত করবে ।
২০০৫ সালে ফ্রান্স ও হল্যান্ডের গণ ভোটে ই.ইউ.'র সাংবাধানিক চুক্তি নাকচ হওয়ার পর , ই.ইউ. দু'বছর ধরে সংবিধান প্রণয়নের সংকটের মধ্যে রয়েছে । চলতি বছরের শুরুতেই জার্মানী পালাক্রমিক চেয়ারম্যান দেশে পরিণত হওয়ার পর সংবিধান প্রণয়নের বিষয়টিকে পুনরায় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । কঠোর আলোচনার মাধ্যমে ই.ইউ.'র বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ জুন মাসে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে আপোসের মাধ্যমে নতুন চুক্তির 'রোডম্যাপ'পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন ,যাতে ই.ইউ'র সংবিধান প্রণয়ন সংক্রান্ত সংকট অস্থায়ীভাবে হলেও শেষ হয় । বিভিন্ন পক্ষের আপোসের একটি শর্ত হিসেবে ই.ইউ.'র নতুন চুক্তিতে সংবিধানের নাম এড়িয়ে করেছে এবং ই.ইউ.কে একটি সুপার রাষ্ট্রীয় সংস্থায় পরিণত হওয়ার সকল সম্ভাবনা বাতিল করে দিয়েছে । কিন্তু চুক্তির সাংবাধানিক ভুমিকা অবশ্যই থাকবে এবং এ কারণে নতুন চুক্তির বিস্তারিক বিষয় নিয়ে আলোচনা একটি কঠিন প্রক্রিয়া হবে ।
আসলে এ সংকট একটি বাস্তব রূপ । সরকারী সম্মেলন শুরুর প্রথম দিন ই.ইউ.'র পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্না ফটিগা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, পোল্যান্ড সরকারী সম্মেলনে নতুন চুক্তির খসড়ায় ভবিষ্যত ই.ইউ. পরিষদের ভোটদান ব্যবস্থা নিয়ে ব্যাখ্যা করার দাবি জানাবে ।
যদিও পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা ই.ইউ.র সদস্যদেশগুলোর মধ্যে কিছু উদ্বিগ্নতায় সৃষ্টি করেছে ,কিন্তু বিভিন্ন পক্ষের সরকারী সম্মেলনের সাফল্যের জন্য আশাবাদী । পর্তুগালের ইউরোপ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মানুয়েল লোবো আনতুনেস বলেছেন, নতুন চুক্তির দলিল অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য শীর্ষ সম্মেলনের আগেই নির্ধারণ করা হবে । তাতে কোনো সন্দেহ নেই । ইউরোপীয় সংসদের স্পীকার হ্যানস গার্ট পোত্তেরিং বিভিন্ন সদস্যদেশকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, বর্তমানে তাদের কাজ শুধু আইন ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নতুন চুক্তির বিষয় নিয়ে আলোচনা করা । নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করা হল ই.ইউ.কে আরো গণতান্ত্রিক ও কার্যকরণের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে দেখাও বিভিন্ন সদস্যদেশের উচিত নিজেদের প্রতিশ্রুত সম্মান ও মেনে চলা উচিত ।
(ছাও ইয়ান হুয়া)
|