v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-07-23 18:33:54    
আফগানিস্তানের অপহরণ ঘটনাগুলো বিশ্বের মনোযোগ আকষর্ণ করেছে

cri

    ২২ জুলাই রাতে আফগান বিরোধী সশস্ত্র তালিবানের মুখপাত্র ইউসুফ আহমেদি বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয় সরকার সক্রিয়ভাবে তালিবানের সঙ্গে যোগাযোগ করার কারণে তালিবান এদিন রাতে ২৩ জন দক্ষিণ কোরিয় নাগরিক হত্যা করার সময় ২৪ ঘন্টার জন্য স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । তা হচ্ছে তালিবানের দক্ষিণ কোরিয় নাগরিক অপহরণ করার পর এ ঘটনার সর্বশেষ অগ্রগতি । আফগানিস্তানে পরপর বিদেশী নাগরিক অপহরণের ঘটনা ঘটার কারণে বিশ্বের দৃষ্টি এখন আফগানিস্তানের দিকে।

    ১৯ জুলাই বিকেলে তালিবান যোদ্ধারা মধ্যাঞ্চলের গাজনি প্রদেশ থেকে ২৩ জন দক্ষিণ কোরিয় নাগরিককে অপহরণ করেছে । প্রথমে তারা আফগানিস্তান থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সৈন্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে । এর পরে তারা আফগান সরকারের হাতে আটক থাকা ২৩ জন তালিবান যোদ্ধাকে মুক্তি দিয়ে দক্ষিণ কোরিয় অপহৃতদের সঙ্গে বিনিময়ের অনুরোধ করেছে এবং হুমকি দিয়ে বলেছে যে, যদি তাদের অনুরোধ বাস্তবায়ন না করা হয় ,তাহলে ২২ জুলাই সন্ধ্যা ৭টায় তারা অপহৃতদের হত্যা করবে । এ ঘটনা মোকাবিলার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রথম উপমন্ত্রী ছো জুং পিয়ো ২২ জুলাই আফগানিস্তানেপৌঁছেছেন । দক্ষিণ কোরিয় পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয় সরকার নানা পদ্ধতিতে তালিবানের সঙ্গে যোগাযোগ করে অপহৃতদের মুক্ত করার চেষ্টা করছে । আফগান কর্মকর্তারা এবং উপজাতির সর্দারগণও অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অপহৃতদের উদ্ধারের পদ্ধতি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন । আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী এবং আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনী তালিবান যোদ্ধাদের দক্ষিণ কোরিয় নাগরিকদের আটক রাখার স্থান ঘীরে রেখেছে । কিন্তু অপহৃতদের উদ্ধার কাজ এখনও শুরু হয় নি ।

    ২১ জুলাই জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন তাঁর মুখপাত্রের মাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আফগান সরকারকে প্রচেষ্টা চালিয়ে অপহৃতদের মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন । বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বান কি মূন এবং আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কার্জাই'র সঙ্গে টেলিফোন যোগাযোগ করেছেন । কার্জাই বলেছেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে উদ্ধার কাজে সহায়তা দেবেন এবং আফগান সরকার বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি গ্রুপ গঠন করেছে যাতে এ ঘটনা মোকাবিলা করা যায় ।

    আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অব্যাহতভাবে অবনতি হওয়ার কারণে চলতি বছর আফগানিস্তানে বেশ কয়েকবার তালিবান যোদ্ধারা বিদেশী ও আফগানিস্তানীকে অপহরণের মত ঘটনা ঘটিয়েছে । বিশ্লেষকরা মনে করেন, সামরিক শক্তিতে তালিবান আফগান সরকারী বাহিনী, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী এবং আফগানে মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে প্রতিরোধ করতে সক্ষম না হওয়ার কারণে তালিবানরা অপহরণসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে সন্ত্রাসদমনকে নস্যাত্ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যাতে দেশের পুনর্গঠনকে ক্ষতি করা যায় । বিভিন্ন কারণে তালিবান এবং আফগান সরকারের মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহতভাবে থাকবে এবং কম সময়ের মধ্যে আফগানের পরিস্থিতি পরিবর্তিত হবে না ।

   প্রথমত: বার বার অপহরণ ঘটনার কারণে কার্জাই সরকার দেশ ও বিদেশের বিরাট চাপের মধ্যে পড়েছে । বিদেশী অপহৃতদের উদ্ধারের প্রক্রিয়ায় কার্জাই সরকার আফগানিস্তানে বাহিনী মোতায়েন করা বিদেশী সরকারের চাপের সম্মুখীন হচ্ছে । তালিবানের যোদ্ধাদের মুক্ত করার জন্য বিদেশী অপহৃতদের বিনিময়ে ইচ্ছুক, আফগান সরকার ঘরোয়া রাজনৈতিক দলের বিরোধীতার সম্মুখীন হচ্ছে । সমালোচনাকারীরা মনে করে, সরকারের সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আপোস করা উচিত নয় এবং সরকার আফগানিস্তানী ও বিদেশীদের ওপর একই ধরনের গুরুত্ব দেয়া উচিত । অন্য দিকে আফগান সংসদে সরকার ও তালিবানের সঙ্গে আলোচনা করার আহ্বান অব্যাহতভাবে বাড়ছে । কার্জাই সরকার ঘরোয়া নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কিত নীতি প্রণয়নের বিষয়টিও অচলাস্থায় পড়েছে ।

    দ্বিতীয়ত: তালিবানের অভিযানের মাধ্যমে বোঝা যায় যে, শুধু সামরিক পদ্ধতি আফগানিস্তানের নিরাপত্তা সমস্যা সমাধান করতে পারবে না । যুক্তরাষ্ট্রসহ সন্ত্রাসদমন ইউনিয়নের সদস্যদের মধ্যে সামরিক পদ্ধতিতে তালিবানের ওপর আঘাত হানায় মতভেদ রয়েছে ।

    তৃতীয়ত : আফগানের পুর্গঠন আস্তে হওয়ার কারণে আফগান জনগণের জীবনযাপন পরিবর্তন হয় নি বরং জনগণের সরকারের প্রতি সমর্থনের ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভুমিকা পালন করেছে । এর পাশাপাশি দুর্বল অর্থনীতি ও সামাজিক পরিস্থিতির কারণে আফগানিস্তানের মাদকদ্রব্য চোরাচালান আরো অবনতি হয়েছে এবং তা তালিবানসহ বিভিন্ন সরকার বিরোধী সংস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সাহায্য দিয়েছে । এ অবনতি আরো গুরুতর হওয়ার কারণে লোকজন আফগানিস্তানের ভবিষ্যত নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য উদ্বিগ্ন ।

    (ছাও ইয়ান হুয়া)