কোরিয় উপদ্বীপের পরমাণু সমস্যা সংক্রান্ত ষষ্ঠ দফা ছ'পক্ষীয় বৈঠকের প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দের সম্মেলন ১৯জুলাই শেষ হওয়ার কথা । সংশ্লিষ্ট পক্ষ থেকে জানা গেছে , এ সম্মেলনের সময়সীমা বাড়ানো হবে। সম্মেলনে উত্তর কোরিয়ার ইয়োংপিয়ংয়ের পরমাণু স্থাপনা বন্ধ করার ব্যবস্থা বিভিন্ন পক্ষের সমর্থন পেয়েছে । এতে প্রমাণিত হয়েছে যে , কোরিয়া উপদ্বীপের পরমাণু সমস্যা নিরসনের প্রচেষ্টায় লক্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে । এই ব্যবস্থা বর্তমান প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দের সম্মেলনের জন্য ভালো পরিবেশ সৃষ্টি করেছে । চীনের সমাজ বিজ্ঞান একাডেমীর জাপান সমস্যা গবেষণাগারের উপপ্রধান চিং সি দে ১৯ জুলাই সি আর আইয়ের সংবাদদাতার সঙ্গে একটি সাক্ষাত্কারে বলেছেন , বর্তমান বৈঠকের সময়সীমা বাড়ানো একটি ভাল লক্ষণ ।
২০০৩ সালের আগষ্ট মাসে কোরিয় উপদ্বীপের পরমাণু সমস্যা সংক্রান্ত বৈঠক শুরু হয় । যদিও বৈঠকের প্রক্রিয়া জটিল এবং বৈঠকে নানা ধরনের দ্বন্দ্বও মতভেদ দেখা দিয়েছে , তবু সংশ্লিষ্টপক্ষগুলো কখনও প্রচেষ্টা বন্ধ করে নি । তিনি বলেছেন , আমি মনে করি প্রতিনিধি দলের নেতাদের সম্মেলনের সময়সীমা বাড়ানো একটি ভালো লক্ষণ । আগের বৈঠকের অভিজ্ঞতা অনুসারে , যদি বিভিন্ন পক্ষ কোনো সমস্যার ব্যাপারে একমত হতে না পারে , তাহলে বৈঠক অস্থায়ীভাবে বন্ধ হবার সম্ভাবনা আছে । যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের নেতা ক্রিস্টোফার হিল বলেছেন , এবারের সম্মেলনে বিভিন্ন পক্ষের ঐক্যমত সম্পর্কিত একটি চেয়ারম্যান বিবৃতি প্রকাশিত হলে ভালো হবে । এই বিবৃতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তত্তাবধানের ভিত্তি হিসেবে থাকবে । এ ব্যাপারে একমত হওয়ার জন্যই সম্মেলনের সময়সীমা এক দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিনিধি দলের নেতা ছুন ইয়ুন ওয়ো বলেছেন , প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দের সম্মেলনে উত্তর কোরিয় পক্ষ যে বাস্তব মনোভাব দেখিয়েছে , তা' সমস্যা সমাধানের পরিকল্পনা প্রণয়নে সাহায্য করবে ।
মার্কিন প্রতিনিধি দলের প্রতিনিধি হিল বলেছেন , আলোচনা বৈঠকে উত্তরকোরিয়ার দাখিল করা পরমাণু স্থাপনার খুঁটিনাটি বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হবে ।
মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতা ক্রিস্টোফার হিল ১৯ জুলাই বলেছেন , ছয় পক্ষ বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার দাখিল করা পারমাণবিক স্থাপনার খুঁটিনাটি বিষয় নিয়েও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবে ।
এবারের বৈঠক সম্পর্কে বিভিন্ন দেশের গণ মাধ্যমগুলো নিবিড় নজর দিয়েছে । যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের সংবাদদাতা সুই ছিন তোও ব্যাখ্যা করে বলেছেন ,
পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত ছয় জাতি বৈঠকের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে " আজকের যুক্তরাষ্ট্র" পত্রিকা বলেছে , যেহেতু উত্তর কোরিয়া গত শনিবার তার প্রধান পারমাণবিক স্থাপনা বন্ধ করে দিয়েছে , সেহেতু বুধবারের বৈঠক ইতিবাচক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে । " নিউইয়র্ক টাইমস " দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিনিধিদলের নেতা চুন ইয়ুং ওর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে , এবারের বৈঠক আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে আরো নিষ্ঠাবান হয়েছে ।
রুশ প্রতিনিধিদলের নেতা ভ্লাদিমির রাখমানিন ১৯ জুলাই বলেছেন , বিভিন্ন পক্ষ কোরীয় উপদ্বীপের পরমাণু সমস্যায় বেশ কিছু অগ্রগতি অর্জন করেছে বলে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে এবরের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে । রাশিয়ায় আমাদের সংবাদদাতা ওয়াং সু্য়ে চিয়ান বলেছেন ,
রুশ বার্তা সংস্থা রুশ প্রতিনিধিদলের নেতা রাখমানিনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে , উত্তর কোরিয়া ছয় জাতির আগের বৈঠকে উপনীত সংশ্লিষ্ট মতৈক্য পালন করতে প্রস্তুত রয়েছে । তিনি বলেন , এবারের বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা উত্তর কোরিয়ার পরমাণু পরিত্যাগ করার প্রাথমিক পর্যায়ে পদক্ষেপ কার্যকরীকরণের অবস্থা এবং পরবর্তী পর্যায়ের কাজ নিয়ে আলোচনা করেছেন ।
অধ্যাপক চিন সি তে বিশ্লেষণ করে বলেছেন , এবারের বৈঠকশেষে একটি অভিন্ন দলিলপত্র প্রকাশিত হতে পারে । তিনি বলেন ,
বৈঠকটি একদিন বাড়ালে আগামীকাল সকলে একটি অভিন্ন উপলব্ধি প্রকাশ করা যেতে পারে । তারপর পরমাণু পরিত্যাগ সম্পর্কে একটি রোডম্যাপ থাকলে , সেটা পরবর্তী ছয় জাতি বৈঠকের জন্যে একটি নতুন দিক নির্দেশনা দিতে পারবে ।
|