চীন-রাশিয়া মৈত্রী যাত্রার চীন সফর হল চীন-রাশিয়ার সংস্কৃতি বিনিময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান , তা চীন-রাশিয়া বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহাবস্থান সম্পর্ক ত্বরান্বিত করেছে । রাশিয়া সাংবাদিকদের রিপোর্ট শুধু আধুনিক চীনের সামাজিক উন্নয়ন ও পরিবর্তন রুশ জনগণকে জানিয়েছে তাই নয় , তারা চীনা জনগণের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা রুশ জনগণকেও পাঠিয়েছে । আসলে ২৯ দিনের সাক্ষাত্কারে রুশ সাংবাদিক দলের সদস্যরা অনেক কিছু অর্জন করেছে । এ সব সহজভাবেই বর্ণনা করা সহজ নয় । এ ২৯ দিনে চীনের বেশ কিছু প্রদেশ ও শহরের সাক্ষাত্কার শেষে রুশ সাংবাদিকরা সবাই এভাবে মনে করে যে , চীন ও রাশিয়া দু'দেশ উভয়ের নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য কৌশলগত অংশীদার ।
চীন-রাশিয়া মৈত্রী যাত্রা--চীন সফরের রুশ সাংবাদিক দলের রুশ সংবাদদাতা ওলগার মস্কোয় দুই কক্ষ ও একটি বৈঠকখানা বিশিষ্ট ছোট এক ফ্ল্যাট আছে । ১৯৯৮ সালে ওলগা এ ফ্ল্যাট কেনার টাকা তার চীনা বন্ধুর কাছ থেকে ঋণ নিয়েছেন । তখন রাশিয়ার অর্থনৈতিক সংকট ছিল , ওলগা এ চীনা বন্ধুকে টাকা ফেরত দিতে চায় , তবে তার চীনা বন্ধু এ কঠিন সময়ে ওলগার টাকা ফেরত নেয় নি , ২ বছর পর ওলগার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভালো হওয়ার পরই ওলগা ঋণ ফেরত দিতে শুরু করেছে । চীনা বন্ধুর আস্থা ও সাহায্য সবসময় ওলগাকে মুগ্ধ করেছে । ওলগা বলেছে :
চীনারা খুব ভালো , আমার জীবনে চীনরা সবসময় আমাকে সাহায্য করে , আমি তাদেরকে পছন্দ করি ।
চীন-রাশিয়া মৈত্রী যাত্রার চীন সফরের রুশ সাংবাদিক দলের প্রধান কারিলোভ মনে করেন , চীন ও রাশিয়া উভয়ের নির্ভরযোগ্য অংশীদার । তিনি বলেছেন
এখন চীন ও রাশিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা বললে আমাদের বলতে হয় , রাশিয়াকে চীনের ওপর নির্ভর করতে হয় , অপর দিকে চীনকে রাশিয়ার ওপরও নির্ভর করতে হয় , বিশেষ করে বিদেশি বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে । এখন বিশ্বের কিছু কিছু অঞ্চলে সশস্ত্র সংঘর্ষ হচ্ছে , আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বেশ একটা স্থিতিশীল নয় বলে নিজের জন্য নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বাসযোগ্য অংশীদার খুঁজতে হয় । রাশিয়া ও চীনের কৌশলগত অংশীদারী সম্পর্ক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে পরস্পরকে সমর্থন ও সাহায্য করা হল দু'দেশের জন্য সহায়ক নীতি ।
মস্কো টি ভি'র সাংবাদিক চিজেনোক মনে করে চীন ও রাশিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়ন উভয় পক্ষের জন্যই সহায়ক । সে বলেছে :
আমি মনে করি চীন ও রাশিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভবিষ্যত খুবই উজ্জ্বল । দু'দেশের মধ্যে পারস্পরিক উপকারিতামূলক উন্নয়ন ব্যবস্থা জোরদার হবে । রুশ সরকারও সবসময় চীনের সঙ্গে ভ্রাতৃসুলভ সম্পর্ক স্থাপন করতে ইচ্ছুক , বরং চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় না ।
রাশিয়ার ইতার তাস সংবাদ সংস্থার সংস্কৃতি উপদেষ্টা উস্টিমেন্কো মনে করেন , চীন ও রাশিয়ার সহযোগিতা নিশ্চয়ই অব্যাহতভাবে সামনে এগিয়ে যাবে । তিনি বলেছন :
চীন ও রাশিয়ার মৈত্রী ও সহযোগিতা নিশ্চয়ই চিরদিন বজায় থাকবে । এমন সহযোগিতা বিভিন্ন সময়ে হয়তো পরিবর্তিত হতে পারে , তবে দু'দেশের সহযোগিতা অবশ্যই অব্যাহতভাবে বজায় থাকবে । ২১ শতাব্দীতে চীন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশের অন্যতম হবে ।
রাশিয়ার ইন্টারফ্যাক্সের সাংবাদিক শিরইয়ায়েভ আশা করেন চীন ও রাশিয়ার মৈত্রী সূদীর্ঘ হোক । তিনি বলেছেন :
আমি আশা করি চীন ও রাশিয়ার মৈত্রী সূদীর্ঘ হোক । চীন ও রাশিয়ার নেতৃবৃন্দগণও এভাবে মনে করেন । আমরা চীন ও রাশিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নের ওপর খুব সতর্ক মনোভাব পোষণ করি । সবাই আশা করে চীন ও রাশিয়ার মৈত্রী সুষ্ঠুভাবে বজায় রাখা হবে ।
২৯ দিনে চীন ও রাশিয়ার সাংবাদিকরা বিভিন্ন রিপোর্টের মাধ্যমে দু'দেশের জনগণকে একটি সাংস্কৃতিময় চীন দেখিয়েছে , একটি দ্রুতভাবে উন্নয়নের চীনকে দেখিয়েছে এবং একটি সংস্কারমূলক চীনের মূর্তি দেখিয়েছে । যদিও চীন-রাশিয়া মৈত্রী যাত্রার চীন সফর শেষ হয়েছে , সুষম , বাস্তব ও আনন্দের যাত্রা সবার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে , সুন্দর স্মৃতির কথা কেউ কখোনো ভুলে যায় না ।
|