কোরীয় উপদ্বীপের পরমাণু সমস্যা সংক্রান্ত ছ'পক্ষীয় বৈঠকের প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দের সম্মেলন ১৮ ও ১৯ জুলাই পেইচিংয়ে আয়োজনের কথা। এবারের দলনেতাদের সম্মেলন ষষ্ঠ দফা ছ'পক্ষীয় বৈঠকের প্রথম পর্যায়ের সম্মেলন বন্ধ হওয়ার প্রায় চার মাস পর আয়োজিত হয়ে যাচ্ছে। এটি খুব সহজ নয়। এর আগে কোরীয় উপদ্বীপের পরমাণু সমস্যা সম্পর্কিত কিছুটা ইতিবাচক লক্ষণ দেখে অনেকেই এবারের সম্মেলন সম্পর্কে আশাবাদী। চীনের সামাজিক বিজ্ঞান অ্যাক্যাডেমির জাপান গবেষণালয়ের উপ-পরিচালক অধ্যাপক চিন সিদে মনে করেন, কিছু কিছু বাধা অতিক্রমের পর ছ'পক্ষীয় বৈঠক পূর্বনির্ধারিত গতিপথের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
উত্তর কোরিয়া ১৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দেয়া একটি ইস্তাহারে বলেছে, উত্তর কোরিয়া ইতোমধ্যেই ইয়ংবিয়ং পরমাণু স্থাপনা বন্ধ করেছে। একইদিন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম কিস্তি ৬২০০ টন ভারী তেলও উত্তর কোরিয়ায় পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক আণবিকশক্তি সংস্থার ১০ জন পর্যবেক্ষক পাঁচ বছর পর উত্তর কোরিয়ায় আবার ফিরে এসেছে। চিন সিদে বলেছেন, এসব অগ্রগতি হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাশিত অগ্রগতি।
আমরা দেখি, ম্যাকাওয়ের ব্যাংকো ডেল্টা এশিয়ায় উত্তর কোরিয়ার আটককৃত পুঁজি ছাড় করার পর ছ'পক্ষীয় বৈঠক অব্যাহতভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সময় পার হয়ে গেছে তবুও "১৯ সেপ্টেম্বরের অভিন্ন বিবৃতি" এবং "১৩ ফেব্রুয়ারীর অভিন্ন দলিলপত্র" বাস্তবায়নের মৌলিক শর্ত পরিবর্তিত হয়নি। সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ বর্তমানে একটি বাস্তবতার দিকে দেখেছে। এই বাস্তবতা হলো উত্তর কোরিয়ার ইয়ংবিয়ং পরমাণু স্থাপনা বন্ধ করা এই প্রাথমিক পর্যায়ের প্রথম লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা।
পাশাপাশি চিন সিদে বলেছেন, প্রথম থেকে এ পর্যন্ত কোরীয় উপদ্বীপের পরমাণু সমস্যা সংক্রান্ত ছ'পক্ষীয় বৈঠকের প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না। কিন্তু বরাবরই শান্তিপূর্ণভাবে কোরীয় উপদ্বীপের সমস্যা সমাধানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অনুষ্ঠিতব্য দলনেতাদের সম্মেলনে নেতৃবৃন্দের "১৩ ফেব্রুয়ারীর অভিন্ন দলিলপত্র"বাস্তবায়নের সংশ্লিষ্ট ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করবেন। তিনি বলেন,
আমি মনে করি, এবারের বৈঠকের প্রধান বিষয় হলো "১৩ ফেব্রুয়ারীর অভিন্ন দলিলপত্র"বাস্তবায়ন করা। এটি হচ্ছে উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্রবিহীনকরণ বাস্তবায়নের প্রথম পদক্ষেপ। এটি সর্বেশষ পদক্ষেপ নয়। এর লক্ষ্য হলো কোরীয় উপদ্বীপের পরমাণু সমস্যার অবনতি এড়ানো। এটি এর আগে কখনও বাস্তবায়িত হয়নি। আগে বৈঠকের পাশাপাশি পরিস্থিতি অব্যাহতভাবে অবনতির দিকে যাচ্ছিল। পরবর্তী পদক্ষেপ হলো কোরীয় উপদ্বীপের পরমাণু সমস্যা পুরোপুরিভাবে সমাধান করা। নির্দিষ্টভাবে বলা হয় যে, সকল সংশ্লিষ্ট পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে অভিন্ন দলিলপত্র বাস্তবায়নের কিছু চুক্তি প্রণয়ন করবে।
চিন সিদে বলেছেন, কোরীয় উপদ্বীপের পরমাণু সমস্যার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিভিন্ন পক্ষ বিশেষ করে উত্তর কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার আস্থা। এবারের দলনেতাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো পারস্পরিক আস্থা জোরদার করা। তিনি বলেন,
আমি মনে করি, কোরীয় উপদ্বীপের সমস্যা খুব জটিল। তাই এই সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়াকে ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবেলা করা উচিত। উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্রবিহীনকরণ হচ্ছে বিভিন্ন পক্ষের অভিন্ন ইচ্ছা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অভিন্ন স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। তাই অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হলেও ছ'পক্ষীয় বৈঠক সামনে এগিয়ে যাবে। কোরীয় উপদ্বীপের পরমাণু অস্ত্রবিহীন অবস্থা অবশেষে বাস্তবায়িত হবে।
|