v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-07-11 19:34:08    
শিশু কল্যান ইন্সটিটিউটে এতিম শিশুদের বিদেশি বন্ধু

cri

    যখন আমাদের সংবাদদাতা মধ্য চীনের হো নান প্রদেশের চিয়াং চুও শহরের শিশু কল্যান ইন্সটিটিউটে ডেভিডকে দেখে , তখন তিনি শিশুদের সঙ্গে আনন্দের সঙ্গে খেলছিলেন । এক শিশু তার চুল ধরে , আরেক শিশু তার কাঁধ ঘরে, অন্য এক শিশু তার কোলে বসে ছিল । ডেভিড মাটিতে বসে হো হো করে হাসছেন । এ কথা শুনে বন্ধুরা হয়তো জানতে চান , ডেভিড কে ? তার কি কি গল্প আছে ।

    ডেভিড অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম বন্দর শহর সিডনী থেকে এসেছেন । ২০০৩ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি নিজের কোম্পানীর পরিচালনার কাজ স্ত্রী ও সহকারীকে দিয়ে দশ বার অনেক দূর থেকে হোনান প্রদেশের চিয়া চুও শহরে আসেন । তাঁর একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে চিয়া চুও শহরের শিশু কল্যান ইন্সটিটিউটের  এতিম ও প্রতিবন্ধী শিশুদেরকে সাহায্য করা এবং যত্ন নেয়া ।

    এবার ডেভিড আন্তর্জাতিক চীনা হৃদয় দাতব্য সংস্থার প্রধান হিসেবে ২০ জন শিক্ষক , ডক্তার ও নার্স সঙ্গে নিয়ে চিয়া চুও শহরে এসেছেন । এসব স্বেচ্ছাসেবী যুক্তরাষ্ট্র , ব্রিটেন , জার্মানী , অস্ট্রেলিয়া ও সিংগাপুর ইত্যাদি দেশ থেকে এসেছেন । শিশুদেরকে খাবার , খেলনা , কাপড় কেনা ছাড়া , ডেভিডের আরো কিছু পরিকল্পনা আছে , তা হল শিশুদের নিয়ে এ শহরের বন পার্কে বেড়াতে যাওয়া , শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে শিশুদের লেখাপড়ার অবস্থা জানাএবং শিশুদের সঙ্গে পার্টি করা ।

    ডেভিড চীনকে পছন্দ করেন । বৃটেন থেকে আসা স্বেচ্ছাস্বেবী আন্নী বলেন , শিশুদের ওপর ডেভিডের ভালোবাসাই আমার দীর্ঘস্থায়ীভাবে চিয়াও চুও শিশু কল্যান ইন্সটিটিউটে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রধাণ কারণ । ডেভিড বলেন , ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত তার বন্ধুরা সবসময় তাকে অন্যকে ভালোবাসা ভুল না যাওয়ার উত্সাহ দেয় । ২০০১ সালে ডেভিডের এক বন্ধু চিয়া চুও শিশু কল্যান ইন্সটিটিউটে যান । দেশে ফিরে তিনি ডেভিডকে বলেন , সেখানে অনেক এতিম আছে , সেখানকার কর্মীদের কাজ খুবই বেশি । এ কথা শোনার পর ডেভিড কল্যান ইন্সটিটিউটকে সাহায্য করার কথা চিন্তা করতে শুরু করেন । ২০০৩ সালে প্রথমবার মধ্য চীনের হোনান প্রদেশের চিয়া চুও শহরে আসার পর তিনি এ কল্যান ইন্সটিটিউটের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক বজায় রেখেছেন । তিনি অন্যান্য স্বেচ্ছাস্বেবীকে এখানে আসার উত্সাহও দেন । তাঁর প্রচেষ্টায় ডাক্তার ও শিক্ষকসহ অনেক বিদেশি প্রত্যেক বছরের ছুটিতে শিশু কল্যান ইন্সটিটিউটে এসে শিশুদের সাহায্য করেন ।

    ডেভিড প্রত্যেক বছর নিজের কম্পানীর আয়ের মধ্যে ১০ শতাংশ কল্যান কাজে ব্যয় করেন । অস্ট্রেলিয়া থেকে চিয়াও চুও শহরে একবার আসতে প্রায় ৯ হাজার ইউয়ান লাগে । ডেভিড প্রত্যেক বার নিজের খরচে চিয়াও চুও আসেন । শিশু এবং কল্যান ইন্সটিটিউটের কর্মীদের জন্য উপহার কেনা ছাড়া , ডেভিড এ কল্যান ইন্সটিটিউটের জন্য বেশ কয়েকটি এ সি , ওয়াশিং মেশিন কিনেছেন । তিনি আরো কয়েক হাজার ইউয়ান দিয়ে কল্যান ইন্সটিটিউটের খেলাধুলার যন্ত্র মেরামত করেছেন । বিশেষ করে তিনি পাঁচজন শিশুকে লেখাপড়া করতে সাহায্য দিয়েছেন । প্রত্যেক বছরে এ পাঁচজন ছাত্র লেখাপড়ার ফি ২০ হাজারেরও বেশি ইউয়ান , ডেভিড এ সব টাকা দিয়েছেন ।

বন্ধুরা আপনারা হয়ত জানতে চান , এ পর্যন্ত ডেভিড কল্যান কাজে মোট কত টাকা দিয়েছেন ? ডেভিড এ প্রশ্নের উত্তরে বলেন , অস্ট্রেলিয়ায় আমি ধনী লোক নই । তবে শিশুদেরকে সাহায্য করার জন্য কিছু টাকা দিয়ে আমি খুব খুশি ।

চিয়াও চুও শিশু কল্যান ইন্সটিটিউটের প্রধান সুং পেং ইয়ান আমাদের সংবাদদাতাকে বলেন , ডেভিড পাঁচ জন ছাত্রকে প্রত্যেক বছর ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিজের লেখাপড়ার অগ্রগতি ও সমস্যা তাঁকে জানানোর দাবি জানিয়েছেন । যাতে এ সব সমস্যার সমাধানে সাহায্য করা যায় । প্রত্যেক বার ইন্সটিটিউটে এসে , তিনি শিশুদের নিয়ে একসঙ্গে খেলাধুলা করেন ।

সাক্ষাত্কার শেষে ডেভিড বলেন ,তাঁর আশা হল লোকেরা যেন শিশুদেরকে আরও বেশি ভালোবাসা দেন ।