দক্ষীন-পশ্চিম চীনে এমন এক প্রদেশ আছে , এ প্রদেশ খুব সুন্দর এবং বৈশিষ্টময় । আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এ প্রদেশ অনেক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয় দেশের প্রতিবেশী। এ প্রদেশ হল ইয়ুন নান । দক্ষিণ -পূর্ব এশিয় দেশগুলোর সঙ্গে ব্যাপক যোগাযোগ রয়েছে বলে ইয়ুন নানের বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়া ছাত্রছাত্রীদের গ্রহণ করে । সারার মনে সবসময় একজন ডক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল । আরো দ্রুত এবং আরো ভালোভাবে এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সে চীনে লেখাপড়া করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । সে বলেছে :
চীনের বিজ্ঞান খুব উন্নত । চীন আমার পরিকল্পনার চেয়েও অনেক উন্নত । বিশেষ করে মেডিকেল বিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়ার পরিবেশ , ভারতের চেয়ে অনেক ভালো ।
গত নভেম্বর মাসে সারা চীনে এসেছে । ওয়েইবসাইটের মাধ্যমে সে দা লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পরিচিত হয়েছে ।
আমি ওয়েইবাসেটে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর শুনেছি । সঙ্গে সঙ্গে তারা সক্রিয়ভাবে আমাকে জবাব দেয় এবং আমাকে এ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে অনেক তথ্য জানায় । দা লি বিশ্ববিদ্যালয়কে ভালোভাবে জানার পর আমি আর আমার বাবা মনে করি এটি খুব ভালো এক বিশ্ববিদ্যালয় , তাই আমি এখানে লেখাপড়া করার আবেদন জানিয়েছি ।
রাষ্ট্রীয় পূরাকীর্তি ও পর্যটন এলাকা এবং প্রাকৃতিক সুরক্ষা এলাকায় অবস্থিত দা লি বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানত ভারত , বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ছাত্রছাত্রীদের গ্রহণ করে এবং ব্যাপক দক্ষিণ এশিয় ছাত্রছাত্রীদের জন্য মেডিকেল কোর্স শেখায় । দা লি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক দক্ষিণ এশিয় ছাত্রছাত্রী আছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ করে তাদের জন্য অনেক সুবিধা দেয়
দা লি বিশ্ববিদ্যালয় ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে আরো ভালো ফসিলিটিস আছে । বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ করে ভারতে ভারতীয় শিক্ষকের ভারা করে আমাদের শিখায় । আমাদের হোস্টেলের পরিবেশ ভারতের চেয়েও বেশ ভালো । যেন নিজের বাড়িতে আছে । ভারতীয় শিক্ষক ছাড়া চীনা শিক্ষকের কোর্সও আছে । চীনা শিক্ষক প্রধানত আমাদের কেডিকেল পরীক্ষার জন্য দায়ীত্ব । চীনা শিক্ষকরা আমাদেরও খুব যত্ন নেয় । তারা সবাই ইংরেজী ভাষায় আমাদের শিখায় । তাই আমাদের লেখাপড়ার জন্য অনেক সুবিধা হয় , আমাদের কোন যোগাযোগের বাধা নেই ।
এখন সারা দা লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দের সঙ্গে লেখপড়া করছে । সারা বলেছে , চীনের লেখাপড়ার পরিবেশ আরো সুষ্ঠু ।
এখানে মেডিকেল শেখা আরো সুবিধা হয় । যেমন এখানে আমরা ৮ জন ছাত্রছাত্রী একটি মেডিকেল পরীক্ষা ফাসিলিটি ব্যবহার করতে পারি , তবে ভারতে ৫০জনের জন্য শুধু একটি মেডিকেল ফাসিলিট পাওয়া যায় । তাই চীনের অবস্থা বেশ ভালো ।
এখন সারার অনেক চীনা বন্ধুও আছে । তার চীনা বন্ধুদের কথা বলার সময় সারার মুখে হাসি দেখায় । তার চীনা বন্ধুরা তাকে চীনা জীবনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য অনেক সাহায্য করেছে । সারা এর জন্য তাদের ধন্যবাদ জানায় , সারা বলেছে :
আমার অনেক চীনা বন্ধু আছে । তারা সত্যি সত্যি আমাকে অনেক সাহায্য করেছে । বিশেষ করে প্রথম চীনে আসার সময় , তাদের সাহায্য ছাড়া আমি এত তাড়াতাড়ি চীনা জীবনের সঙ্গে খাপ খেতে পারলাম না । যেমন আমি জীবনে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে চাই , তারা আমাকে জানাবে যে কোথায় ভালো এবং সোস্তার জিনিস কিনতে পাওয়া যায় । লেখাপড়ায় আমরা পরস্পরকেও সাহায্য করি । তাদের সঙ্গে বেশি বেশি যোগাযোগ করার কারণে আমার চীনা ভাষার মান তাড়াতাড়ি উন্নত হয়েছে । দা লি খুব সুন্দর এক জায়গা , উঁচু উঁচু পাহাড় , পরিস্কার নদনদী , নীল আকাশ এবং সাদা সাদা মেঘ , দা লির প্রাকৃতিক দৃশ্য অতি সুন্দর এবং বৈশিষ্টময় । সারার চীনা বন্ধু প্রত্যেক ছুটিতে সারাকে নিজের বাড়িতে আসার আমন্ত্রণ জানায় এবং তাকে নিয়ে ভ্রমণ করে । এভাবেই ছুটিতে সারার নিঃসঙ্গতা দূর করা হয়েছে , সারা ও তার চীনা বন্ধুদের মৈত্রীও আরো গভীর হয়েছে ।
ছোট থেকে এখন পর্যন্ত সারা এ প্রথমবার নিজের বাড়ী ত্যাগ করে বিদেশে আসে । সাক্ষাত্কারে সংবাদদাতা জিজ্ঞেস করে যে কি নিজের বাসার কথা মনে পড়ো ? সারা বলেছে , আসলে এখানেই নিজের বাড়ীর মত ভালো । সে বলেছে :
ভারতে প্রত্যেক বার বাড়ী ত্যাগ করে আমি বাসার কথা খুব মনে পড়ে । তবে এখানে বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের অনেক যত্ন নেয় , আমরা এখানে যেন নিজের বাড়ীতে আছি । বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের অনেক সাহায্য করে , যেমন তারা বিশেষ করে ভারতেরবার্বুচিকে ভাড়া করে এখানে ভারতীয় খাবার রান্ন করে । এখানে বিশেষ করে আমরা সবাই দক্ষিণ এশিয় ছাত্রছাত্রীদের জন্য এক কেন্ডিন আছে । তা ছাড়া , এখানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনেক ভালো । গভীর রাতে রাস্তায় হাটাহাটি করাও কোন বিপদ হবে না । আমি তীব্রভাবে তা অনুভব করতে পারি ।
এখন সারা ইতোমধ্যেই দা লিকে ভালোবাসে , এ সুন্দর শহরকে ভালোবাসে । শুধু কারণ এখানের আবহাওয়া সবসময় বসন্তকালের মত এবং এখানের দৃশ্য অতি সুন্দর তাই নয় , আরো গুরুত্বপূর্ণ হল এখানে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের সুবিধা আছে । এখানে নিজের বাড়ীর মত অনুভূতি সে খুঁজে পেয়েছে । আমরাও আশা করি আরো অনেক বেশি বিদেশি ছাত্রছাত্রীরা চীনে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবে ।
|