আমাদের শারিরীক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য অনেক ধরনের পুষ্টিকর উপাদান ও খাবার খেতে হবে এবং চর্চা করতে হবে । আজকের অনুষ্ঠানে আমি শরীরের প্রয়োজনীয় উপাদান হিসেবে আয়োডিনের ভুমিকার কথা বলবো।
শারিরীক সুস্থতা বজায় রাখা হচ্ছে আমাদের ইচ্ছা । আয়োডিন স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে । বিশেষজ্ঞরা গবেষণার মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে, আয়োডিন হচ্ছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষুদ্র উপাদান । তা শরীরের উন্নয়ন, রাসায়নিক রূপান্তর এবং প্রোটিনের সংমিশ্রণ করতে সক্ষম এবং শক্তির রূপান্তর সমন্বয় করার প্রয়োজনীয় উপাদান ।
গলগ্রন্থি হল গলায় অবস্থিত গ্রন্থি বিশেষ। রক্ত গলগ্রন্থি অতিক্রম করার সময় গ্রন্থিতে উত্পন্ন রস শরীরের আয়োডিনের সঙ্গে মিশে যায় এবং এ রস রক্তনালীর মাধ্যমে শরীরের ভিন্ন গ্রন্থতে পৌঁছে মানুষের শরীরের স্বাভাবিক রাসায়নিক রূপান্তর এবং শারীরিক বৃদ্ধি ও কর্মতত্পরতাকে প্রভাবিত করে ।
আয়োডিন মাথার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ ভুমিকা পালন করে থাকে । শরীরে আয়োডিনের প্রয়োনজীয় পরিমাণ অনেক কম । কিন্তু যদি তার অভাব হয়,তাহলে তা শরীরের ক্ষতি হয় এবং সহজভাবে ধারাবাহিক রোগে আক্রান্ত হয়ে যায় । এসব রোগের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর হল শিশুদের বুদ্ধির বিকাশ না ঘটা । বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের যদি আয়োডিন উপাদানের অভাব হয় ,তাহলে পেটের শিশু নির্ধারিত সময়ের পূর্বে জন্মগ্রহণ করবে বা গর্ভপাত ঘটবে ও বিকৃত চেহারা রোগে আক্রান্ত হবে । যদি শিশুদের ছোটবেলায় শরীরে আয়োডিনের অভাব দেখা দেয় ,তাহলে তারা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হবে বা পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত হবে ।
যদি শরীরে আয়োডিনের পরিমাণ স্বাভাবিক না থাকে তাহলে আয়োডিনের অভাবজনিত রোগে আক্রান্ত হতে হয় । সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যানে জানা গেছে, আয়োডিনের অভাব থাকা অঞ্চলে শিশুদের নির্বুদ্ধিতার হার আয়োডিনের স্বাভাবিক অঞ্চলের চেয়ে ১০গুণেরও বেশি । এটা থেকে বোঝা যায় যে, শরীরে আয়োডিনের অভাব নিজের স্বাস্থ্য এবং জীবনের জন্য ক্ষতিকর ।
আয়োডিনের অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ করার ভালো পদ্ধতি হচ্ছে আয়োডিন যুক্ত লবণ খাওয়া । এ ধরনের লবণ খাওয়ার অনুভূতি সাধারণ লবণের চেয়ে প্রায় একই । কিন্তু তা গরম এবং আলো লাগার পর সহজভাবে বাষ্পীভূত হয় । এ কারণে আয়োডিন উপাদান যুক্ত লবণ শুষ্ক পাত্রে রাখা ভালো এবং রান্না করা শেষে লবণ ঢেকে রাখতে হবে ,যাতে লবণের মধ্যে থাকা আয়োডিন উপাদানের বাষ্পিভূত হওয়া প্রতিরোধ করা যায় ।
সাধারণ লোকজনের জন্য সবসময় আয়োডিন যুক্ত খাবার যেমন সামুদ্রিক গুল্মাদিসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক খাবার খাওয়া ভালো । বিশেষ লোকজন যেমন নতুন বিয়ে করা নারী, গর্ভবতী এবং শিশুদের আয়োডিন তেল যুক্ত ওষুধ খাওয়া ভালো ।
অনেক লোক জানেন আয়োডিন যুক্ত খাবার খাওয়া বুদ্ধি বৃদ্ধির জন্য সহায়ক । কিন্তু আরেকটি কথা হল অতিরিক্ত পরিমাণে আয়োডিন খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আয়োডিনের অভাবজনিত রোগ আয়োডিন উপাদান যুক্ত লবণ খাওয়ার মাধ্যমে চিকিত্সা ও প্রতিরোধ করা যায় । প্রতিদিন ৬ থেকে ১০ গ্রাম এ ধরনের লবণ খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় আয়োডিনের পরিমাণ পাওয়া যাবে । শরীরে অতিরিক্ত আয়োডিন গলগ্রন্থের স্বাভাবিক সামর্থ্য ক্ষতি করে । এ কারণে অতি বেশি আয়োডিন যুক্ত খাবার খাওয়াও ভালো না ।
|