v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-06-29 21:35:19    
পুতিনের মার্কিন সফর ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় দু'দেশের মতভেদ কমানো কঠিন

cri

    রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ১ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে দু'দিনব্যাপী সফর করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। এর জন্য মার্কিন পক্ষ যথাযথ বন্দোবস্তু করেছে। দু'দেশের শীর্ষ নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাংশের মাইনে রাজ্যে অবস্থিত সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের খামার বাড়িতে বৈঠক করবেন। জনমত মনে করে, এ ধরনের বিশেষ বন্দোবস্তু ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সমস্যায় রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার দিনে দিনে সম্প্রসারিত হওয়া মতভেদ কমাতে পারবে না।

    এ বছরের প্রথম দিক থেকে চেক প্রজাতন্ত্র ও পোল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্র ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপন নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে উত্তেজনা দেখা দেয়। খবরে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র পোল্যান্ডে দশটি প্রতিরোধ ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন এবং চেক প্রজাতন্ত্রে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার রাডার ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে, ইরান থেকে আসা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিরোধ করার জন্য এ পরিকল্পনা নেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে রাশিয়ার তীব্র বিরোধীতা করে। রাশিয়া মনে করে, যে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনা ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধের জন্য তাই নয়, বরং রাশিয়াকে দমন করার জন্য। ফলে এটা রাশিয়ার নিরাপত্তার ওপর হুমকি হিসেবে দাঁড়াবে। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে পুতিন হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেছেন যে, রাশিয়া "ইউরোপের সাধারণ সশস্ত্র শক্তির চুক্তি" থেকে প্রত্যাহার করবে এবং রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র আবার ইউরোপকে লক্ষ্য করবে। জুন মাসের প্রথম দিকে জার্মানীতে আট রাষ্ট্র গোষ্ঠীর শীর্ষ সম্মেলনে পুতিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে আজারবাইজানের রাডার স্টেশন ব্যবহার করার প্রস্তাব দিয়েছেন, যাতে চেক প্রজাতন্ত্র ও পোল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনের পরিকল্পনা বাতিল করা যায়। কিন্তু আজ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে কোন আপোষ করে নি। যুক্তরাষ্ট্রের শক্ত মনোভাব দেখে সম্প্রতি রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আনাটোলি সের্দিউকোভ প্রকাশ্যে হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনের ব্যাপারে জিদ করে থাকে, তাহলে রাশিয়া মনে করবে যে, "তার উদ্দেশ্য হচ্ছে বর্তমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা লঙ্ঘন করা এবং ইউরোপে নতুন বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করা" । যদিও যুক্তরাষ্ট্র বার বার কৈফিয়ত দিয়েছে যে, ইউরোপে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনের উদ্দেশ্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে নয়। তবু রাশিয়া মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা ইউরোপের কৌশলগত ভারসাম্য নষ্ট করছে। রাশিয়া নিজের কৌশলগত সুপ্ত শক্তি জোরদার করবে।

     রাশিয়ার তথ্য মাধ্যম ২৭ জুন জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী সের্গেয় ইভানোভ ভোদকিস্কে অনুষ্ঠিত সরকারী সামরিক কমিশনের এক অধিবেশনে ঘোষণা করেছেন, রাশিয়ার কৌশলগত পারমাণবিক শক্তির নতুন দফা পুনরায় নূতন করে শুরু হয়েছে।

    এমন পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন জেগেছে আসন্ন রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সম্মেলনে দু'দেশের মধ্যকার বিদ্যমান সমস্যার সমাধান হবে কিনা এবং দু'দেশের উত্তেজনাসংকুল সম্পর্ক প্রশমিত হবে কিনা? জনমত এর প্রতি আশাবাদী নয় এবং মনে করে, এবারের শীর্ষ সম্মেলন কেবল দেখার মতো। দু'পক্ষ কেবল এ সুযোগে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে চায়। মার্কিন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য পদ্ম দেসাই সরাসরি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের আসন্ন বৈঠক কোন সুনির্দিষ্ট সাফল্য অর্জিত হবে না এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সমস্যায় কোন চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে না। কারণ এই সমস্যায় দু'পক্ষের অবস্থান একই রকম শক্ত। রাশিয়ার বিজ্ঞান একাডেমির যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা ইনস্টিটিউটের পরিচালক সের্গেই রোগোভ বলেছেন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সম্মেলনে সমস্যা সমাধান হবে না। এবারের শীর্ষ সম্মেলনের ভূমিকা কেবল ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষার বিষয় নিয়ে আলোচনা আরম্ভ করা। এই সমস্যায় দু'পক্ষের বিতর্ক চলতে থাকবে।

    তবে জনমত আরো মনে করে, ইউরোপে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েনের সমস্যায় রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের তুমুল তর্কবিতর্ক হলেও দু'দেশ নতুন দফা স্নায়ু যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে না। রাশিয়ার রাজনীতি তহবিলের চেয়ারম্যান ভিয়াচেস্লাভ নিকোনোভ উল্লেখ করেছেন, যদিও রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক সাম্প্রতিক ২০ বছরের সর্বনিম্ন স্থানে চলে গেছে, তবে অনুমান অনুযায়ী ভবিষ্যতে দু'দেশের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হবে না।