১লা জুলাই হবে হংকংয়ের ওপর চীনের সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারের এবং হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী । হংকংয়ের প্রত্যাবর্তনের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রাক্কালে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রবাসী চীনারা মিলিত কন্ঠে" এক দেশে দুই ব্যবস্থা" নীতি এবং বিগত দশ বছরে হংকংয়ের উন্নয়নের প্রশংসা করেছেন ।
যুক্তরাষ্ট্রের লিন চেস্যু তহবিল সংস্থার চেয়ারম্যান স্টিভেনওয়োং মনে করেন যে , হংকংয়ে "এক দেশে দুই ব্যবস্থা" নীতির বাস্তবায়ন সফল হয়েছে । গত ১০ বছরে এই নীতি বাস্তবায়নের কল্যাণে হংকংয়ের আজকের সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা সম্ভব হয়েছে । তিনি বলেন, ৫০ বছরে অপরিবর্তিত থাকা হোক , "এক দেশে দুই ব্যবস্থা" নীতি হোক অথবা " হংকংবাসীদের দ্বারা হংকং শাসন করা" নীতি হোক , ১৯৯৭ সাল আগে এগুলো সম্পর্কে অনেকের সন্দেহ ছিল । কিন্তু এ ১০ বছরে আমি লক্ষ্য করেছি যে , " এক দেশে দুই ব্যবস্থা", " হংকংবাসীদের দ্বারা হংকং শাসন" নীতি হংকংয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে । হংকংবাসীদের সন্দেহ ও ভয়ের মনোভাবের অনেক পরিবর্তন হয়েছে । হংকংয়ের প্রত্যাবর্তনঅধিক থেকে অধিকতর হংকংবাসীর স্বীকৃতি পেয়েছে ।
বৃটেনে বসবাসকারী বিখ্যাত ক্যালিগ্রাফার চাও চিচৌ এ সম্পর্কে একই ধারণা পোষণ করেন । তিনি বৃটেনে চীনের সংস্কৃতি সম্প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে হংকংয়ের পরিবর্তনের ওপরও গুরুত্ব দেন । তিনি বলেন , " এক দেশে দুই ব্যবস্থা" নীতিতে আইনগত সমাজ , পূঁজি , ব্যক্তি ও পণ্যের অবাধ বিনিময় , সংস্কৃতি , ধর্ম ও জাতির সুষমতা সহ হংকংয়ের নানা ব্যবস্থা সংরক্ষিত হয়েছে । আমি মনে করি, " এক দেশে দুই ব্যবস্থা" নীতির প্রাণশক্তি রয়েছে । এই নীতি যেমন মাতৃভূমির শান্তিপূর্ণএকীকরণের জন্য বাস্তব ও কার্যকর পথ সুগম করেছে তেমনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কর্তৃক শান্তিপূর্ণ উপায়ে ইতিহাসের বর্তানো সমস্যা ও বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য নতুন পদ্ধতিসৃষ্টি করেছে । তিনি মনে করেন , প্রত্যাবর্তনের পর হংকংয়ের অর্থনীতি উন্নত হয়েছে এবং সমাজ সমৃদ্ধশালী ও স্থিতিশীল হয়েছে ।
কেনিয়ার প্রবাসী চীনা সমিতি এবং চীনের শান্তিপূর্ণ একীকরণ সম্পর্কিত কেনিয়া উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান হান জুনছাং হংকংয়ের প্রত্যাবর্তনের ১০ বছর সম্পর্কে বলেছেন , এ ১০ বছরে হংকং বিশেষ প্রশাসন আঞ্চলিক সরকার এশিয়া তহবিল সংকট ও সার্স সহ ধারাবাহিক দুর্দশার সম্মুখীন হয়েছিল । এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি ও মূলভূভাগের জনসাধারণের দৃঢ় সমর্থন হংকংকে এই সব দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে বিরাট ভূমিকা পালন করেছে । কিছু দেশ ও কিছু লোক যেমন বলেছিলেন ১০ বছর পর হংকংয়ের অর্থনীতি এবং জীবনযাত্রা তেমন পশ্চাদপদ হয়নি ।
তিনি বলেছেন , বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝী সময় যারা সবচেয়ে আগে কেনিয়ায় এসেছেন সেই সব প্রবাসী চীনারা প্রত্যাবর্তনের পর হংকংয়ের অর্থনীতিরউন্নয়ন ও সমাজের স্থিতিশীলতা সম্পর্কে সন্তুষ্ট । তারা মনে করেন , বিশেষ করে মূলভূভাগে হংকংবাসীদের পর্যটন করতে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন একদিকে হংকংয়ের অর্থনীতির উন্নয়ন ত্বরান্বিত করেছে । অন্যদিকে মূলভূভাগের নাগরিকরা হংকংকে আরও বেশি করে জানতে পেরেছে ।
খ্রিষ্টিয়ান সিউ ফ্রান্সে দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রবাসী চীনা । তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়েছেন । বাবার কাছ থেকে হংকং সম্পর্কে তার কিছু ধারণা হয়েছে । তিনি বলেছেন , আমার বাবা হংকংয়ে জন্মগ্রহণ করেন । ১৯৯৭ সাল আগে তিনি কয়েকবার হংকং ফিরে গিয়েছিলেন । তিনি আমাকে বলেছিলেন , হংকং একটি পূঁজিবাদী জায়গা । সেখানে বৃটিশ ব্যবস্থা চালু ছিল । জায়গাটি খুবই আধুনিক , নিউইয়র্কের মতো , সর্বত্রই উচু উচু অট্টালিকা । বলা যায় হংকং এশিয়ার নিউইয়র্ক । ১৯৯৭ সাল পর তিনি একবার ফিরে যান । তিনি বলেন , সেখানকার ব্যবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি । হংকং একটি চমত্কার জায়গা । তিনি আমাকে সেখানে গিয়ে দেখতে বলেছেন ।
নিউইয়র্কে চীনের শান্তিপূর্ণ একীকরণ উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান সি এইচ হুয়া বলেছেন , হংকংয়ের ভবিষ্যত সম্পর্কে তিনি অত্যন্ত আশাবাদী । তিনি বলেছেন ,হংকংয়ের প্রত্যাবর্তন , " এক দেশে দুই ব্যবস্থা" নীতির বাস্তবায়ন সফল হয়েছে বলে মাদাম থেচার সহ সকলেই মনে করেন । আমি হংকংয়ের ভবিষ্যত সম্পর্কে অত্যন্ত আশাবাদী । কারণ আমাদের জাতি সম্পর্কে আমি আস্থাবান ।
|