১৫তম কুনমিং বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
সম্প্রতি পাঁচ দিনব্যাপী ১৫তম চীনের কুনমিং আমদানি ও রপ্তানী বাণিজ্য মেলা ইউনান প্রদেশের রাজধানী কুনমিংয়ে শেষ হয়েছে। এবারের কুনমিং বাণিজ্য মেলার দক্ষিণ এশিয়ার প্রদর্শনী স্টলের সংখ্যা ছিল ৮০টি। এর মধ্যে বাংলাদেশ ৫৯টি স্টল দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বৃহত্তম প্রতিনিধি দলে পরিণত হয়। দক্ষিণ এশিয়ার বন্ধুদের আগ্রহ দেখে স্থানীয় বিজ্ঞান ও বাণিজ্য মহলের বিশেষজ্ঞরা বলেন, কুনমিং বাণিজ্য মেলার বর্তমানের আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রদর্শনী থেকে ধাপে ধাপে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের "চীন ও সার্ক মেলায়" পরিণত হওয়ার সময় হয়েছে।
১৫তম চীনের কুনমিং আমদানী ও রপ্তানী বাণিজ্য মেলা ৬ জুন সকালে কুনমিংয়ে উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইউনান প্রদেশের গভর্ণর ছিন কুয়াং রোং বলেছেন, "কুনমিং বাণিজ্য মেলা হচ্ছে একটি সেতু এবং ব্যাপক দেশি-বিদেশী ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন মহলের বন্ধুদের নিজেদের পণ্য প্রদর্শন করা , সহযোগিতা ও বিনিময় করা, মিলিতভাবে উন্নয়ন করার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম। গত ১৫ বছরে এই মেলা চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের বিভিন্ন প্রদেশ ও শহর তথা সারা চীন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ , বিশেষ করে আসিয়ান ও দক্ষিণ এশিয় দেশগুলোর মধ্যেকার অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক আদান-প্রদান সম্প্রসারণ করা, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে দিনে দিনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।"
১৫তম কুনমিং বাণিজ্য মেলার সাংগঠনিক কমিটি সুত্রে জানা গেছে, এবারের বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ীর সংখ্যা ও প্রদর্শনী স্টলের সংখ্যা কুনমিং বাণিজ্য মেলার ইতিহাসের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। ২২টি দেশ ও অঞ্চল থেকে আসা ৩০০টিরও বেশি শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ মোট ১৮৩০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে কেবল আসিয়ান ও দক্ষিণ এশিয় দেশগুলো থেকে আসা প্রতিনিধিদের সংখ্যা পাঁচ হাজারেরও বেশি। এবারের কুনমিং বাণিজ্য মেলায় স্বাক্ষরিত বৈদেশিক বাণিজ্য মূল্য ২০৭.৪ কোটি মার্কিন ডলার। কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পর্যটন শিল্প, ফরফরাস রাসায়নিক শিল্প , জৈব ওষুধসহ ২৯টি বিদেশী পুঁজি আকর্ষণী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৫তম কুনমিং বাণিজ্য মেলার প্রতীকে প্রথম বারের মতো "দক্ষিণ এশিয়া" এর ছবি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয় দেশগুলো প্রথম বারের মতো কুনমিং বাণিজ্য মেলার সাংগঠনিক কাজে সহযোগিতা করেছে। এটা হচ্ছে ইউনান প্রদেশের উন্মুক্ত নীতি চালু হওয়ার পর একটি ঐতিহাসিক অগ্রগতি। কুনমিং বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিমন্ডলীর মঞ্চে ইউনান প্রদেশের গভর্ণর ছিন কুয়াং রোং বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে আসা মাননীয় অতিথি --- বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব ফিরোজ আহমেদের সঙ্গে প্রথম নাম কার্ড বিনিময় করেছেন এবং ইউনানে আসার জন্য উষ্ণভাবে দক্ষিণ এশিয়ার বন্ধুদের স্বাগত জানিয়েছেন। এটা হচ্ছে ঐতিহাসিক করমর্দন।
বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব ফিরোজ আহমেদ বলেছেন, "বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল এবার নিয়ে তিন বার কুনমিং বাণিজ্য মেলায় অংশ নিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, কুনমিং বাণিজ্য মেলার মাধ্যমে দু'দেশের জনগণের সমঝোতা ও বিনিময় আরো গভীর হবে। এবারের মেলায় আহমেদ এক অপ্রত্যাশিত সুখবর পেয়েছেন। তিনি বলেছেন, "অতীতে আমাদের ওষুধ উত্পাদন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো কেবল ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নজর রাখে। কিন্তু আমার অবাক হয়েছে যে, এবারের কুনমিং বাণিজ্য মেলায়, আমি আকস্মিকভাবে আবিষ্কার করেছি যে, চীনে খুব ভালো উত্পাদন মেশিন আছে। এর দামও সুবিধাজনক।" তিনি বলেছেন, দেশে ফিরে যাবার পর আরো বেশি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে কুনমিংয়ে আসার উত্সাহ দেবেন।
1 2
|