v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-06-28 17:10:55    
ছোংছিংয়ের খাড়া পাহাড় শহর

cri
    প্রথমেই আমি শ্রোতাবন্ধুদের ছোংছিংয়ের খাড়া পাহাড় শহরে নিয়ে যাবো । পশ্চিম চীনের ছোংছিং শহর তার বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন পাহাড়ের জন্য দেশী বিদেশী পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রেখেছে । ইয়াংসি নদী এবং চিয়ালিং নদী এ শহরের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে । শহরটিকে চার ভাগে ভাগ করা যায় । প্রাচীনকালে নদী তীর অঞ্চলে কাঠ দিয়ে তৈরী মাটির ওপর ঝুলানো অনেক দালান রয়েছে, স্থানীয় লোকজন তাকে 'তিয়াওচিয়াও দালান' বলে ডাকেন । এসব দালানের মধ্যে হোংইয়া গুহার দালানগুলো হল ছোংছিংয়ের জাহাজঘাট সংস্কৃতির একটি জীবাশ্ম । কুয়াংতুং প্রদেশের পর্যটক মিস লিউ তান সংবাদদাতার কাছে তাঁর প্রথমবার হোংইয়া গুহা রীতিনীতি এলাকা ভ্রমণের অনুভূতি বর্ণনা করেছেন । তিনি বলেছেন , হোংইয়া গুহা পাহাড়ের গায়ে নির্মিত হয়েছে । স্থাপত্যের বিশিষ্ট্য সহজ ও স্থাপত্যে প্রাচীনকালের সঙ্গে আধুনিক বিশিষ্ট্যের সংমিশ্রণ রয়েছে ।

    হোংইয়া গুহার ঝুলিয়ে রাখা কাঠের দালানগুলো ইয়াংসি নদী এবং চিয়াংলিং নদীর মোহনা এলাকায় ছোংছিং শহরের ছাওথিয়েনমেন অঞ্চলে অবস্থিত । স্থাপত্য দালানগুলো নদীর তীরে অবস্থিত , এর মোট দৈর্ঘ্য ৬০০ মিটার । ১১টি স্তরে রাখা দালান পাহাড়ের আকার অনুযায়ী নির্মিত হয় । নীচের দিক থেকে উচুঁ দিক পর্যন্ত তার উচ্চতা ৭৫ মিটার । স্থানীয় লোকজন অর্ধেক আকাশে দু'টি প্রাচীন রাস্তাও নির্মাণ করেন । একটি রাস্তা মাটি থেকে ৩০ মিটার উচুঁ ,অন্য একটা মাটি থেকে ৪৭ মিটার উচুঁ । জানা গেছে, বিশ্বের বিভিন্ন শহরে এ ধরনের স্থাপত্য শিল্প খুব কম দেখা যায় । সব দালানের কাঠ এবং ঘরে নানা রঙয়ের ছবিও আকাঁ রয়েছে , বহুদূর থেকে দেখতে ঠিক আকাশে ঝুলিয়ে রাখা দেবতার দালানের মতো । ছোংছিং'এর অধিবাসী লিউ সিয়ান বলেছেন, এখানকার স্থাপত্যগুলো ছোংছিংয়ের এক সময়কার ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করে । এতে প্রাচীন দালানের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি ফুটে উঠেছে । এর মূল্য পর্যটন শিল্প থেকে বোঝা যায় । পর্যটকরা এখানে আসার পর ছোংছিংয়ের ইতিহাস উপভোগ করার পাশাপাশি ছোংছিং একটি মহা নগর হিসেবে তার আধুনিক ধারণাও উপভোগ করতে সক্ষম । হোংইয়া গুহা এলাকা হচ্ছে ছোংছিং'র নতুন একটি পর্যটন স্থান ।

    কয়েক বছর আগে হোংইয়া গুহার কাছাকাছি পুরনো বাড়িঘর নির্মূল হওয়ার পর বিভিন্ন সুন্দর কাঠের দালান পাহাড়ের আকার অনুযায়ী নির্মিত হয় । পর্যটকরা লিফ্টের মাধ্যমে সরাসরিভাবে গুহার শীর্ষ স্থান ১১তলা থেকে শহরের দৃশ্য দেখার জন্য উঠে যেতে পারেন ।

    ৭০০০ বর্গমিটারের দর্শন স্থানে দাঁড়িয়ে ছোংছিং শহরের সুন্দর দৃশ্য দেখা দুর্লভ ব্যাপার । দু'টি নদী যেন পায়ের নীচ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে । পাশাপাশি নদীর সুগন্ধও উপভোগ করা যায় । পাহাড়ের পাথরের সিঁড়ি বেয়ে একটি সুন্দর রাস্তা কাঠের দালান ও খাড়া পাহাড়ের মধ্যে অবস্থিত । তা হচ্ছে হোংইয়া গুহা এলাকার একটি বিদেশী বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন রাস্তা ।

    এখানকার বিক্রি করা জিনিসে বিদেশের বৈশিষ্ট্য রয়েছে । পর্যটকরা দক্ষিণ আমেরিকার স্ফটিকের টুকরো, ইন্ডিয়ানের মাস্ক, তুরস্কের গালিচা, অস্ট্রেলিয়ার গরুর চামড়া এবং জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পুতুলসহ বিভিন্ন মজার মজার জিনিস কিনতে পারেন । তা ছাড়া রাস্তায় ছোংছিং শহরের সুস্বাদু খাবারও পাওয়া যায় । ছোংছিং সিয়াও থিয়েন এ পর্যটন কোম্পানির ম্যানাজার জেনারেল লিউ চুন বলেছেন, খাবার, হোটেল, গাড়ি, বিনোদন, শপিং হচ্ছে পর্যটনের প্রধান বিষয় । হোংইয়া গুহার মোট ১১ তলা রয়েছে । পর্যটকরা এখানে খাবার খেতে জিনিস কিনতে এবং বেড়াতে পারেন স্বচ্ছন্দে।

    গুহা এলাকার আরেকটি রাস্তার নাম সিছুয়ান রাস্তা । এখানে পর্যটকরা ছোংছিংয়ের প্রাচীনকালের রেশমী কাপড়ের দোকান ও চা দোকান ছাড়াও সিছুয়ান অপেরা এবং জাতীয় দড়াবাজী দেখতে পারেন । রাতে এখানকার দৃশ্য ভিন্ন আমেজে সুন্দর হয়ে ওঠে । গুহা এলাকার ৫০ হাজার রংগীনবাতি গুহার কাঠের দালানগুলো ভালভাবে সাজিয়ে রাখে এবং তা দেখতে ঠিক স্বর্গের মতো । তখন নদী তীরের পাবগুলো পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

    এখানকার সবচেয়ে বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন পাবের নাম জলদস্যু পাব । পাবের মধ্যে জলদস্যুদের জাহাজ পটভূমি হিসেবে সাজানো রয়েছে ,দোয়ালের চারদিকে প্রাণচঞ্চল নীল সমুদ্রের ছবি টাঙানো এবং পাবের ছাদ ক্যারবীয় সমুদ্রের উপর সুউজ্জ্বল আকাশ জ্বল জ্বল করছে । পাবে থাকার সময় মহা ক্যারবীয় সমুদ্রে বসে থাকার মতো মনে হবে । পাব সংস্কৃতি ছাড়া, রাতে রাস্তার দৃশ্য পর্যটকদের এ অঞ্চলেরপ্রাচীনকালের জীবনযাত্রার পদ্ধতি উপভোগ করার সুযোগও এনে দেয় ।