২৫ জুন সুদানের দারফুর সমস্যা সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয়েছে । যুক্তরাষ্ট্র , ব্রিটেন , ফ্রান্স , চীনসহ বিভিন্ন দেশ এবং জাতিসংঘ , ইইউ , আরব লীগ , বিশ্ব ব্যাংক ও আফ্রিকা উন্নয়ন ব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সম্মেলনে অংশ নেয় । সম্মেলন শেষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মাহসচিব বান কি মুন এ সমস্যায় চীন সরকারের চালানো প্রচেষ্টা ও অবদানের উচ্চ মূল্যায়ন করেছেন । সি আর আইয়ের সংবাদদাতা দারফুর সমস্যায় চীনের বিশেষ প্রতিনিধি লিউ কুই চিনের সাক্ষাত্কার নিয়েছেন । সাক্ষাত্কারে লিউ কুই চিন বলেছেন :
এ সম্মেলনে আমাদের অংশগ্রহণের উদ্দেশ্য হল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক পদ্ধতিতে দারফুর সমস্যার সমাধান নিয়ে মত বিনিময় করা এবং বিভিন্ন পক্ষের মতামত শোনা । সঙ্গে সঙ্গে দারফুর সমস্যার ওপর চীন সরকারের উত্কন্ঠা ও গুরুত্ব প্রকাশ করা ।
চীন সরকার বরাবরই দারফুর সমস্যার ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় । জানুয়ারী ও এপ্রিল মাসে চীন দু'বার সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী চেই চুয়ানকে সুদানে পাঠিয়েছে । মে মাসে চীন কূটনীতিবিদ লিউ কুই চিনকে দারফুর সমস্যায় চীনের বিশেষ প্রতিনিধি নিযুক্ত করেছে । এর পরে লিউ কুই চিন দু'বার দারফুর অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন এবং সুদানের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেছেন । পাশি পাশি তাদেরকে চীন সরকারের প্রতিশ্রুতি ও সাহায্য দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন ।
চীন সরকার ঠিক করেছে যে , আগস্ট মাসে জাতিসংঘের অনুরোধ অনুযায়ী ২৭৫ জনের একটি প্রকৌশল দল পাঠাবে । সঙ্গে সঙ্গে আমরা দারফুর অঞ্চলে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের মানবিক সাহায্য দিয়েছি । আমরা সুদানে চীনা কোম্পানীগুলোকে আরো বেশি সাহায্য করার উত্সাহও দিবো ।
সেদিন সম্মেলন শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বিভিন্ন পক্ষের পৌঁছানো ঐকমত্যের সারসংক্ষেপ করেছেন । এগুলো হচ্ছে প্রথমত , দারফুর অঞ্চলে মানবিক সাহায্য দেয়া । দ্বিতীয়ত , জাতিসংঘ-আফ্রিকা ইউনিয়নের যৌথ শান্তি রক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা । তৃতীয়ত , সুদানের উন্নয়ন সমস্যার ওপর দৃষ্টি রাখা । চতুর্থত , রাজনৈতিক পদ্ধতিতে দারফুর সমস্যার সমাধান ত্বরান্বিত করা । এসব বিষয় চীনের অবস্থানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ।
চীনের উপ পররাষ্ট্র মন্ত্রী চাং ইয়ে সুই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাত্কালে চাং ইয়ে সুই চীনের মৌলিক অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন । এর প্রথম হল রাজনৈতিক উপায়ে সমস্যা সমাধান করা । দ্বিতীয় হল জাতিসংঘ , সুদান ও আফ্রিকা ইউনিয়ন এ তিন পক্ষের আলোচনা ব্যবস্থা সমর্থ করা । আমরা মনে করি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত দারফুর অঞ্চলের মানবিক পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য অব্যাহতভাবে প্রচেষ্টা চালানো এবং আঞ্চলিক পুণর্গঠনের জন্য অবদান রাখা ।
সম্প্রতি কিছু পশ্চিমা তথ্য মাধ্যম তাদের খবরে এমন কথা বলেছে যে চীন দারফুর সমস্যার সমাধানে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় নি । লিউ কুই চিন এ সম্পর্কে বলেছেন :
চীন সরকার দারফুর অঞ্চলের শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য নিজের অবদান রেখেছে । বিশেষ করে চীন সুদান সরকারকে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আন্নানের তিন পর্যায় প্রস্তাব গ্রহণ করিয়েছে । এটি এক ইতিবাচক অগ্রগতি । আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে এ সমস্যার সমাধানে অব্যাহতভাবে প্রচেষ্টা চালাতে ইচ্ছুক ।
|